বিহারে শোচনীয় পরাজয়ের প্রথম প্রতিক্রিয়া দিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। বললেন, ‘‘এই ফলাফল বিস্ময়কর। নির্বাচন শুরু থেকেই সুষ্ঠু ভাবে হয়নি।’’
বিহারে ২৪৩টি আসনের মধ্যে ২০০-র বেশি আসনে জিতে আবার ক্ষমতায় আসতে চলেছে নীতীশ কুমারের জেডিইউ এবং বিজেপির জোট। ভোটে ধরাশায়ী হয়েছে তেজস্বী যাদবের দল আরজেডি এবং কংগ্রেসের জোট। তারা ৪০-এর গণ্ডিও পেরোতে পারেনি। এই ফলাফলের পর কংগ্রেসকে নিশানা করেছে বিজেপি। নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, ‘‘কংগ্রেস হল বোঝা। ওদের সঙ্গে যারাই জোট করবে, তারাই ডুববে!’’
এই পরিস্থিতিতে এ বার মুখ খুললেন রাহুল। এক্স হ্যান্ডলে তিনি লেখেন, ‘‘বিহারে যারা আমাদের জোটকে ভোট দিয়েছেন, তাঁদের কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই। এই নির্বাচন শুরু থেকে সুষ্ঠু ভাবে হয়নি বলেই আমরা জিততে পারিনি।’’ রাহুলের সংযোজন, ‘‘এই লড়াই গণতন্ত্র এবং সংবিধান বাঁচানোর লড়াই। কংগ্রেস এই ফলাফল পর্যালোচনা করবে এবং গণতন্ত্র রক্ষার লড়াই আরও জোরদার করবে।’’
প্রসঙ্গত, বিহারে জয়ের পর মোদীর নিশানায় যতটা না আরজেডি ছিল, তার চেয়ে অনেক বেশি ছিল কংগ্রেস। মোদী বলেন, ‘‘জঙ্গলরাজ নিয়ে কিছু বললে আরজেডি-র চেয়ে কংগ্রেসের বেশি গায়ে লাগত।’’ গত কয়েকটি নির্বাচনে (বিধানসভা এবং লোকসভা মিলিয়ে) কংগ্রেসের ফলাফল নিয়েও কটাক্ষ করেছেন মোদী। তিনি বলেন, ‘‘বিহারের ভোটে আমাদের যত জন জিতেছেন, গত ছ’টা বিধানসভা মিলিয়েও কংগ্রেসের এত জন জিততে পারেননি। কংগ্রেস হল মুসলিম লিগ মাওবাদী কংগ্রেস পার্টি। কংগ্রেসের ভিতর এত নিরাশা যে, দলে নতুন ভাগ তৈরি হচ্ছে। আবার বিভাজন হবে।’’
বিহারের ইতিহাসে এ বারই কংগ্রেসের ফল সবচেয়ে খারাপ। শুধু নিজেদের খারাপ ফল নয়, শরিকদলের ভরাডুবির দায়ও কংগ্রেসের ঘাড়েই চাপছে। কারণ, ১৯৯৭ সালে লালুপ্রসাদ যাদবের হাতে জন্ম নেওয়া দল গত ২৮ বছরের সবচেয়ে খারাপ ফলও এ বারেই করল। অনেকেই বলতে শুরু করেছেন, লালু-পুত্র তেজস্বী একা নন, আরজেডি-র এই ফলাফলের জন্য দায়ী সনিয়া-তনয় রাহুলের ‘দায়িত্বজ্ঞানহীনতা’ও।
আরও পড়ুন:
গত ১৭ অগস্ট থেকে বিহারে ‘ভোটার অধিকার যাত্রা’ শুরু করেছিলেন রাহুল। শুরুর দিন উপচে-পড়া ভিড়। পদযাত্রা, জনসভা, বৈঠকি আলাপচারিতা চালাতে চালাতে এগোচ্ছিলেন রাহুল। এসআইআরের বিরোধিতা এবং ভোটে কারচুপি সংক্রান্ত অভিযোগ— দুই বিষয়কেই সফল ভাবে নিজের যাত্রায় জুড়ে নিয়েছিলেন। ভিড় দেখে আশা জেগেছিল গোটা ‘ইন্ডিয়া’ শিবিরেই। কিন্তু পরিকল্পনার অভাবে কয়েক দিন পর থেকেই যাত্রা ঈষৎ ছন্নছাড়া হয়ে যায়। রাহুলকে অক্সিজেন জোগাতে যাত্রায় শামিল হন তেজস্বী। ফের কয়েকদিন ভিড় বাড়ে। কিন্তু অনেকের মত, এই ধরনের কর্মসূচিতে পুঙ্খানুপুঙ্খ পরিকল্পনা তৈরি করে মাঠে না নামলে যে পরিস্থিতি হওয়ার কথা, তা থেকে পুরোপুরি উদ্ধার করতে পারেননি তেজস্বীও।