যাত্রী পরিষেবা উন্নয়নে সুইৎজ়ারল্যান্ডের রেল ব্যবস্থা থেকে শিক্ষা নিতে চায় ভারতীয় রেল। সম্প্রতি সুইৎজ়ারল্যান্ডের দাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বৈঠকে এমন আগ্রহের কথা শুনিয়েছেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব।
সুইস ঘড়ির মতোই সময়ানুবর্তিতা এবং দক্ষ পরিচালন ব্যবস্থার জন্য সে দেশের রেল ব্যবস্থার খ্যাতি। ভারতীয় রেলের শুরুর দিনগুলিতে কোচ, সিগন্যালিং ব্যবস্থা এবং ট্রেনের বাষ্পীয় ইঞ্জিনে সুইৎজ়ারল্যান্ডের প্রযুক্তি ব্যবহার হত। পরে ভারতীয় রেলে জার্মানি, আমেরিকা-সহ একাধিক দেশের প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়েছে।
সাম্প্রতিক সুইস-সফরে আল্পস পর্বতে সুড়ঙ্গ নির্মাণের প্রযুক্তি এবং যাত্রিবাহী ট্রেনের পরিষেবার ক্ষেত্রে ‘হাব অ্যান্ড স্পোক’ মডেল রেলমন্ত্রীর মনে ধরেছে। সুইস রেল ভারতীয় রেলের মতো দীর্ঘ দূরত্বে চলে না। বদলে সে দেশে গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনগুলিতে (হাব) প্রায় একই সময়ে নানা গন্তব্য থেকে ট্রেন এসে পৌঁছয়। আবার সেখান থেকে বিভিন্ন দিকে যাওয়ার ট্রেন কাছাকাছি সময়ে ছেড়ে যায়। ফলে যাত্রীরা সহজেই ট্রেন বদল করে পছন্দসই গন্তব্যে যেতে পারেন। মূল স্টেশনের সঙ্গে বিভিন্ন দূরবর্তী স্টেশন সাইকেলের চাকার স্পোকের মতো যুক্ত।
সে দেশে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার কিলোমিটার রেলপথ ছ’টি মুখ্য হাবের মাধ্যমে যুক্ত। ওই ব্যবস্থায় ট্রেন যেমন সময়ে চলে, তেমনই দেশের যে কোনও প্রান্তে পৌঁছতে রেল যোগাযোগের উপর ভরসা করা যায়। ওই ব্যবস্থা থেকেই শিক্ষা নেওয়ার চেষ্টা করছে ভারত বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী। পাশাপাশি, দুর্গম আল্পস পর্বতমালা ফুঁড়ে পৃথিবীর দীর্ঘতম ট্রেন চলাচলের সুড়ঙ্গ আছে সে দেশে। দু’টি ক্ষেত্রেই ভারত মত বিনিময় এবং সহযোগিতার ক্ষেত্র তৈরি করে এগোতে চায় বলে রেলমন্ত্রক সূত্রের খবর।
ভারতে এখন মাঝারি দূরত্বে বন্দে ভারত ট্রেন নিয়ে আগ্রহ বাড়ায় সুইস রেল ব্যবস্থার অভিজ্ঞতা কাজে আসতে পারে বলে মনে করছেন রেলের আধিকারিকদের একাংশ। এ ছাড়াও উত্তর ভারত এবং উত্তর-পূর্বে রেল পথের বিস্তার ঘটাতে গিয়ে একাধিক সুড়ঙ্গ নির্মাণের প্রয়োজন পড়ছে। ফলে, সেখানেও ওই দেশের প্রযুক্তি কাজে আসতে পারে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)