Advertisement
E-Paper

উত্তরকাশীর ভাঙা সুড়ঙ্গে জোরে ফাটল ধরার শব্দ! ছড়াল আতঙ্ক, আপাতত বন্ধ ৪০ শ্রমিককে উদ্ধারের কাজ

শুক্রবার দুপুরে খননযন্ত্র দিয়ে সুড়ঙ্গের মুখে আটকে থাকা পাথর সরানোর সময় জোরে ফাটল ধরার শব্দ পান উদ্ধারকারীরা। তার পর থেকেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে উদ্ধারকাজ।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০২৩ ০৮:৩৭
Rescue work paused after cracking sound heard in broken tunnel of Uttarkashi

উত্তরকাশীর ভাঙা সুড়ঙ্গে চলছে উদ্ধারকাজ। ছবি: পিটিআই ।

থেমে গেল উত্তরকাশীর ভাঙা সুড়ঙ্গে আটকে থাকা শ্রমিকদের উদ্ধার করার কাজ। শুক্রবার দুপুরে খননযন্ত্র দিয়ে সুড়ঙ্গের মুখে আটকে থাকা পাথর সরানোর সময় জোরে ফাটল ধরার শব্দ পান উদ্ধারকারীরা। তার পর থেকেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে উদ্ধারকাজ। উদ্ধারকারীদের ধারণা, সুড়ঙ্গের ভিতরে আরও একটি ধস নেমেছে। উদ্ধারকাজ চালিয়ে নিয়ে গেলে আরও ধস নামতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের কী ভাবে উদ্ধার করা হবে, তা ঠিক করতে বিশেষজ্ঞদের একটি বৈঠক ডাকা হয়েছে। পাশাপাশি পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রশাসনিক কর্মকর্তারাও।

‘ন্যাশনাল হাইওয়েজ় অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড (এনএইচআইডিসিএল)’ একটি বিবৃতিতে বলেছে, ‘‘শুক্রবার দুপুর ২টো ৪৫ মিনিট নাগাদ উদ্ধারকাজ চলার সময় উদ্ধারকারী দল এবং কর্মকর্তারা একটি বড় ফাটল ধরার শব্দ শুনতে পান। সুড়ঙ্গে উদ্ধারকাজ চালানো দলগুলির মধ্যে আতঙ্কে ছড়িয়ে পড়ে। আরও ধস নামার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে। সেই অনুযায়ী আপাতত কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে।’’

শ্রমিকদের উদ্ধার করতে ভাঙা সুড়ঙ্গে ধসে যাওয়া পাথরে ছিদ্র করে তিন ফুটেরও কম দৈর্ঘ্যের একটি পাইপ ঢুকিয়ে শ্রমিকদের বার করে আনার পরিকল্পনা করা হচ্ছিল। আপাতত সেই কাজও বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছে এনএইচআইডিসিএল। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, শ্রমিকদের উদ্ধার করতে ৬০ মিটার পর্যন্ত গর্ত তৈরি করতে হবে। এর পর সেই গর্তে ৮০০ এবং ৯০০ মিলিমিটার ব্যাসের একটি পাইপ ঢুকিয়ে তার মধ্যে দিয়ে বার করে আনা হবে শ্রমিকদের। তবে ফাটল ধরার শব্দের পর থেকে সেই কাজ বন্ধ রয়েছে। শক্ত পাথরের কারণে খননযন্ত্রটিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

শ্রমিকদের নিরাপদে উদ্ধার করে আনতে তাইল্যান্ড এবং নরওয়ের দু’টি সংস্থাকেও ডেকে পাঠিয়েছে উত্তরাখণ্ড সরকার। ২০১৮ সালের জুন মাসে তাইল্যান্ডের বন্যার জলে ভেসে যাওয়ায় একটি গুহায় আটকে পড়ে ১২ জন খুদে ফুটবলার এবং তাদের কোচ। অত্যন্ত প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও তাদের উদ্ধার করে এনে সারা বিশ্বে প্রশংসিত হয় তাইল্যান্ডের ওই উদ্ধারকারী সংস্থা। এ বার সেই সংস্থার অভিজ্ঞতাকেই উত্তরাখণ্ডে কাজে লাগানোর চেষ্টা হচ্ছে।

শুক্রবারের মধ্যেই উদ্ধারকাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছিল। কিন্তু ঘটনাস্থলে নতুন করে ধস নামায় তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। ১৬৫ জন উদ্ধারকারী উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছেন। রয়েছেন জাতীয় এবং রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, ইন্দো টিবেটান পুলিশ এবং বর্ডার রোডওয়েজ়ের বাহিনী। ধসে যাওয়া সুড়ঙ্গে আটকে আছেন পশ্চিমবঙ্গের তিন শ্রমিক। হুগলির বাসিন্দা জয়দেব প্রামাণিক, সৌভিক পাখিরা এবং কোচবিহারের মনির তালুকদারের পরিবারের ঘুম উড়েছে। উৎকণ্ঠার প্রহর গুনছেন তাঁরা।

প্রসঙ্গত, পার হয়ে গিয়েছে ১৪৪ ঘণ্টা। উত্তরকাশীর ভাঙা সুড়ঙ্গে এখনও আটকে ৪০ জন শ্রমিক। আটকে থাকা শ্রমিকদের উদ্ধার করতে তৎপর হয়েছে প্রশাসন। রবিবার সকালে উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশী জেলার ব্রহ্মকাল-যমুনোত্রী জাতীয় সড়কের উপর সিল্কিয়ারা এবং ডন্ডালহগাঁওের মধ্যে সাড়ে চার কিলোমিটার দীর্ঘ নির্মীয়মাণ সুড়ঙ্গের একাংশ ভেঙে পড়ে। এর জেরেই ওই সুড়ঙ্গের মধ্যে আটকে পড়েন ৪০ জন শ্রমিক। তবে তাঁদের সুস্থ রাখতে চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখছেন না উদ্ধারকারীরা। সুড়ঙ্গপথে খাবারদাবার, ওষুধপত্র-সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস সরবরাহ করা হচ্ছে। আটকে পড়া ৪০ জন শ্রমিকের মনোবল অটুট রাখতে নিয়মিত তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগও রাখা হচ্ছে। এত কিছুর পরেও উদ্ধারকাজের প্রক্রিয়া ক্রমশ দীর্ঘায়িত হওয়ায় ওই শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিয়ে ক্রমশ সংশয় তৈরি হচ্ছে।

Uttarkashi Tunnel Collapse rescue
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy