বিহারে ‘মহাগঠবন্ধনে’ আসন বাঁটোয়ারা নিয়ে সংঘাতের আবহে এ বার মহারাষ্ট্রের বিরোধী জোট ‘মহাবিকাশ আঘাড়ী’র অন্দরেও অচলাবস্থা। উপলক্ষ, বৃহন্মুম্বই পুরসভার (বিএমসি) আসন্ন নির্বাচন ঘিরে দুই ‘ইন্ডিয়া’র দুই সহযোগী দল কংগ্রেস এবং উদ্ধব ঠাকরের নেতৃত্বাধীন শিবসেনা (ইউবিটি)-র সংঘাত।
মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধবের ঘনিষ্ঠ সহযোগী সঞ্জয় রাউত কয়েক মাস আগেই জানিয়েছিলেন, দেশের বৃহত্তম পুরসভার ভোটে একক শক্তিতে লড়বে তাঁর দল। মঙ্গলবার মহারাষ্ট্র কংগ্রেসের প্রথম সারির নেতা তথা মুম্বই কংগ্রেসের সভাপতি ভাই জগতাব বলেন, ‘‘কংগ্রেস একক ভাবেই বিএমসি ভোটে লড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।’’ এর পরে উদ্ধবসেনার নেতা আনন্দ দুবে জগতাবকে নিশানা করে বলেন, ‘‘বিএমসি ভোটে জোট হবে কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন রাহুল গান্ধী, মল্লিকার্জুন খড়্গে এবং উদ্ধব ঠাকরে। আর কে, কী বললেন তাতে কিছু যায় আসে না।’’
গত বছর লোকসভা এবং বিধানসভা ভোটে ‘মহাবিকাশ আঘাড়ী’র অন্য দুই সহযোগী কংগ্রেস এবং শরদ পওয়ারের এনসিপির সঙ্গে জোট বেঁধে লড়েছিল উদ্ধবসেনা। গত তিন বছর ধরে মহারাষ্ট্রে বিভিন্ন পঞ্চায়েত ও পুরভোটেও স্থানীয় স্তরে জোট করেছে উদ্ধবের দল। তা হলে, মুম্বই পুরভোটে কেন ‘একলা চলো’ নিয়ে জল্পনা। উদ্ধবসেনার একটি সূত্র জানাচ্ছে, বিধানসভা ভোটে ভরাডুবির জেরেই কংগ্রেসের ‘হাত’ ছেড়ে রাজ ঠাকরের মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনার (এমএনএস) সঙ্গে সমঝোতার বিষয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে। গত লোকসভা ভোটে কংগ্রেস-এনসিপি (শরদ)-এর সঙ্গে জোট বেঁধে লড়ে ভাল ফল করেছিল উদ্ধবসেনা। সে রাজ্যের ৪৮টি আসনের মধ্যে মহাবিকাশ আঘাড়ী জিতেছিল ৩০টিতে। বিজেপি-শিন্ডেসেনা-এনসিপি (অজিত)-এর ‘মহাজুটি’র ঝুলিতে গিয়েছিল মাত্র ১৭টি।
আরও পড়ুন:
কিন্তু গত নভেম্বরে বিধানসভা ভোটে শোচনীয় ভাবে পরাস্ত হয় বিরোধী জোট। এর পরেই উদ্ধবের দলের অন্দরে কংগ্রেসের সঙ্গ ছাড়ার জন্য দাবি উঠেছে বলে দলের একটি সূত্র জানাচ্ছে। ১৯৯৭ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত টানা ২৫ বছর এই পুরনিগমে ক্ষমতায় ছিল অবিভক্ত শিবসেনা। ২০২২ সালের মার্চ মাসে এই পুরনিগমের জনপ্রতিনিধিদের কার্যকালের মেয়াদ শেষ হয়। তার পর দু’বছর নির্বাচন হয়নি। ফলে বর্তমানে কোনও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি নেই বৃহন্মুম্বই পুরনিগমে। মরাঠি ভাষা রক্ষা এবং হিন্দির ‘আগ্রাসন’ রোখার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই কাছাকাছি এসেছেন উদ্ধব এবং তাঁর তুতো ভাই রাজ। প্রয়াত বালাসাহের ঠাকরের আদর্শ সামনে রেখে দু’দলের অন্দরেই উঠেছে পুনর্মিলনের দাবি।