যুদ্ধ পরিস্থিতিকে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক দৃঢ় করতে চাইছেন পুতিন। ফাইল চিত্র।
ইউক্রেনে হামলার জেরে মস্কোর উপরে আমেরিকা-সহ পশ্চিমী দুনিয়ার আর্থিক নিষেধাজ্ঞার জেরে ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যদিও নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল আমদানি করছে নয়াদিল্লি। এই পরিস্থিতিতে ভারতের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা বাণিজ্যিক সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যেতে সক্রিয় হয়েছে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সরকার। ভারত থেকে ৫০০টি পণ্য আমদানি করতে চেয়ে সম্প্রতি নরেন্দ্র মোদী সরকারকে মস্কো ‘অনুরোধ’ করেছে বলে সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের দাবি।
নিষেধাজ্ঞার ফলে পশ্চিমের সঙ্গে মস্কোর সমস্ত রকম অর্থনৈতিক লেনদেনে আপাতত দাঁড়ি পড়ে গিয়েছে। শুধু দেশ হিসেবে রাশিয়া নয়, সে দেশের শিল্পপতিদের জন্যও বন্ধ পশ্চিমের বাজার। পাশাপাশি, রাশিয়ার বিভিন্ন ব্যাঙ্ক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানও নিষেধাজ্ঞার কবলে। এই পরিস্থিতিতে মস্কোর তরফে যে ৫০০টি পণ্যের তালিকা পাঠানো হয়েছে, তার প্রথমেই রয়েছে গাড়ি, বিমান, ট্রেন এবং বিভিন্ন জলযানের যন্ত্রাংশ ও সরঞ্জাম। যুদ্ধ পরিস্থিতিতে দেশের পরিবহণ ব্যবস্থাকে সচল রাখতেই পুতিন সরকারের এই পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে।
কলকারখানায় ব্যবহৃত যন্ত্র ও যন্ত্রাংশ, বাণিজ্যিক পণ্য উৎপাদনের কাঁচামাল, ধাতব ও রাসায়নিক সামগ্রীর মতো বিভিন্ন উপকরণ ওই তালিকায় রয়েছে বলেও প্রকাশিত খবরে দাবি। মূলত, নিষেধাজ্ঞার কারণে যে পণ্যগুলি পশ্চিমী দুনিয়া থেকে রাশিয়া আমদানি করতে পারছে না, সেগুলিই রয়েছে ভারতকে পাঠানো তালিকায়।
রয়টার্স প্রচারিত খবর সম্পর্কে এখনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি সাউথ ব্লক। তবে সরকারি একটি সূত্রে খবরের সত্যতা স্বীকার করা হয়েছে। গত ৭ নভেম্বর রাশিয়া সফরে গিয়েছিলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। সে সময়ই পশ্চিমী নিষেধাজ্ঞার আবহে দ্বিপাক্ষিক আর্থিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্কের অগ্রগতি নিয়ে সিদ্ধান্ত হয় বলে ওই সূত্র জানাচ্ছে। তবে ঠিক কোন কোন পণ্য, কতটা পরিমাণে মস্কো আমদানি করতে চেয়েছে, সে বিষয়ে বিষয়ে বিশদ তথ্য মেলেনি।
প্রসঙ্গত, কয়েক মাস আগেই বিদেশ সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা জানিয়েছিলেন, যুদ্ধ পরিস্থিতিতে পশ্চিমী নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও রাশিয়ার সঙ্গে প্রতিরক্ষা ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক বজায় রাখতে চায় ভারত। ‘‘এই সঙ্কট আমাদের তৈরি করা নয়, অথচ আমাদের ভুগতে হচ্ছে। এই সঙ্কট তৈরি হয়েছে রাশিয়ার উপরে পশ্চিমের আর্থিক নিষেধাজ্ঞার কারণে। এতে আমাদের সঙ্গে রাশিয়ার বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অথচ ওই দেশের সঙ্গে বাণিজ্য, প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের বিষয়ে আমাদের সংযোগের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। এখন দেখতে হবে, নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও কী ভাবে এই সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়।’’ এ বার কি সেই লক্ষ্যেই পা মেলাবেন মোদী-পুতিন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy