কথা ছিল শবরীমালা থেকে সোজা চেন্নাইয়ে যাবে বিগ্রহ আর মন্দিরের দরজার সোনার আবরণ। সেইমতো রওনাও দিয়েছিল। কিন্তু মাঝপথেই উধাও হয়ে গিয়েছিল সেই সোনা। ৩৯ দিন ধরে তার কোনও খোঁজই মেলেনি। পরে যখন সেই সোনা চেন্নাইয়ে পৌঁছোল, দেখা গেল, প্রায় সাড়ে চার কেজি সোনা উধাও! সেই রহস্যে এ বার নয়া মোড়। জানা গেল, শবরীমালা মন্দির থেকে রওনা দেওয়ার পর বিগ্রহ আর দরজার সোনা দক্ষিণ ভারতের একাধিক মন্দির এবং মালয়ালম অভিনেতার বাড়ি ঘুরে তার পর চেন্নাইয়ে পৌঁছেছিল।
শবরীমালার সোনা-রহস্যের তদন্তে ইতিমধ্যেই সিট গঠন করেছে কেরল হাই কোর্ট। আগামী ছ’সপ্তাহের মধ্যে তারা সিটকে রিপোর্ট জমা দিতে বলেছে। তার মধ্যে সোনা-রহস্য ‘ফাঁস’ করল সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি! সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কিছু নথি ঘেঁটে জানা গিয়েছে, বিগ্রহের মেরামতির জন্য ২০১৯ সালের ১৯ জুলাই মন্দিরের দ্বারপালক মূর্তি এবং দরজার সোনার আবরণ খোলা হয়েছিল। সেই সময় সোনার ওজন ছিল ৪২.৮ কেজি। পরের দিন ওই সোনা তুলে দেওয়া হয় উন্নিকৃষ্ণণ পত্তির হাতে। বিগ্রহ মেরামতির কাজে তিনিই সাহায্য করছিলেন। মন্দিরের সোনা পাঠানোর কথা ছিল চেন্নাইয়ের একটি সংস্থায়।
কিন্তু সেই সোনা চেন্নাইয়ে পৌঁছোয় ৩৯ দিন পর। সেই সময় ওজন করতে গিয়ে দেখা যায় সোনার ওজন ৩৮.২৫ কেজি। অর্থাৎ, ৪.৫৪ কেজি সোনা উধাও! এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মন্দিরের সোনা সরাসরি চেন্নাইয়ে যায়নি। মাঝে ওই সোনা নিয়ে যাওয়া হয়েছিল কেরলের কোট্টায়াম মন্দির, অন্ধ্রপ্রদেশের কয়েকটি মন্দির, বেঙ্গালুরুর আয়াপ্পা মন্দিরে। মালয়ালম অভিনেতা জয়রামের বাড়ির পুজোতেও সোনার আবরণ নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তার পর তা চেন্নাই পৌঁছোয়। চেন্নাই থেকে শবরীমালায় পৌঁছোয় ২০১৯ সালের ১১ সেপ্টেম্বর।
এর আগে উন্নিকৃষ্ণণের একটি মেলও ফাঁস হয়েছিল। যে মেলে উন্নিকৃষ্ণণ জানিয়েছিলেন, মেরামতির পর যদি কিছু সোনা অবশিষ্ট থেকে যায়, তা হলে সেই সোনা তিনি একটি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করতে চান। যা দেখে কেরল হাই কোর্টের মন্তব্য, বিষয়টি ‘অত্যন্ত উদ্বেগজনক’।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৮ সালে শবরীমালা মন্দিরের ৩০ কেজি সোনা দান করেছিলেন বিজয় মাল্যও। পরের বছর আরও ৮০০ গ্রাম সোনা দেওয়া হয়েছিল দরজার আবরণ তৈরি করার জন্য। সেই সময় দানে পাওয়া সোনার সব হিসাব রয়েছে কি না, সম্প্রতি তা-ও জানতে চেয়েছে হাই কোর্ট।