গৌরী লঙ্কেশ হত্যা মামলায় দ্বিতীয় চার্জশিট জমা পড়ল।—ফাইল চিত্র।
গৌরী লঙ্কেশের হত্যা সাংগঠনিক অপরাধ। কট্টরপন্থী হিন্দুত্ববাদী সনাতন সংস্থার সঙ্গে যুক্ত দুষ্কৃতীরাই খুন করেছে তাঁকে। এমনটাই জানাল গৌরী হত্যা মামলায় কর্নাটক পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)।
শুক্রবার বেঙ্গালুরু নগর দায়রা আদালতে একটি অতিরিক্ত চার্জশিট দায়ের করে তারা। ফরেন্সিক রিপোর্ট, উদ্ধার হওয়া আগ্নেয়াস্ত্র, ডিএনএ রিপোর্ট, সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে তাতে মোট ১৮ জনঅভিযুক্তের নাম উল্লেখ করেছেন তদন্তকারী অফিসাররা। যার মধ্যে ১৬ জনকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৮ জন মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা। এখনও ফেরার দু’জন। তাদের বিকাশ পাতিল ওরফে নিহাল এবং মুরলী ওরফে শিব বলে শনাক্ত করা গিয়েছে।
৯ হাজার ২৩৫ পাতার ওই চার্জশিটে পুণেতে সনাতন সংস্থার অধীনস্থ হিন্দু জনজাগৃতি সমিতির প্রাক্তন আহ্বায়ক সদস্য, ৩৭ বছর বয়সী অমল কালেকে মূল অভিযুক্ত হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, সে-ই গৌরী হত্যার ষড়যন্ত্র কষে। শ্রী রামসেনার সদস্য ২৬ বছর বয়সী পরশুরাম বাঘমারেকে নিযুক্ত করে সে। সনাতন সংস্থায় নিজের সহযোগীদের সাহায্যে তাকে প্রশিক্ষণও দেয়। তার নির্দেশ মতো প্রবীণ ওই সাংবাদিককে গুলি করে মারে পরশুরাম। অভিযুক্তদের মধ্যে অনেকেই অপরাধে সামিল থাকার কথা স্বীকার করেছে। সেগুলিকেও প্রমাণ স্বরূপ জমা দেওয়া হয়েছে আদালতে।
আরও পড়ুন: রাম-চাপে মোদী-যোগী! অযোধ্যা কাঁপাচ্ছে শিবসেনা-ভিএইচপি, উত্তেজনা চরমে
আরও পড়ুন: ১২ ফুট গভীর খালে পড়ল বাস, কর্নাটকে পাঁচ শিশু-সহ মৃত অন্তত ২৫
বিশেষ সরকারি আইনজীবী এস বালান সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘‘গৌরী হত্যা একটি সাংগঠনিক অপরাধ। পাঁচ বছর ধরে তাঁকে মারার ষড়যন্ত্র কষা হয়। খুনিদের সঙ্গে কোনও ব্যক্তিগত শত্রুতা ছিল না নিহতের। তা সত্ত্বেও কেন খুন করা হল তাঁকে? শুধুমাত্র ভিন্ন আদর্শে বিশ্বাসী ছিলেন বলে। তা নিয়ে লেখালেখি করতেন বলে। খোলাখুলি নিজের বক্তব্যও রাখতেন বলে।তাই ওই সংগঠনের চক্ষুশূল হয়ে দাঁড়ান তিনি।’’ বিষয়টি নিয়ে আরও তদারকির প্রয়োজন রয়েছে বলে জানিয়েছেন সিটের মুখ্য তদন্তকারী অফিসার এমএন অনুচেত। তার জন্য আদালতের কাছে অনুমতি চেয়েছেন তিনি।
এই নিয়ে গৌরী হত্যা মামলায় দ্বিতীয় চার্জশিট জমা দিল সিট। গত ৩০ মে কেটি নবীন কুমারের বিরুদ্ধে একটি প্রাথমিক চার্জশিট জমা দেয় তারা। তাকে ২ মার্চ গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাতে বলা হয়, জেরায় অপরাধ কবুল করেছে নবীন। হিন্দু যুব সেনার সদস্য ছিল সে। ২০১৭ সালের জুন মাসে গোয়ায় সনাতন সংস্থার একটি সম্মেলনে গিয়েছিল। সেখানেই গৌরী হত্যার পরিকল্পনার কথা জানতে পারে এবং তাতে সামিল হয়। হিন্দুত্ব বিরোধী আদর্শে বিশ্বাসী ছিলেন বলেই গৌরীকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বামপন্থী মতাদর্শে বিশ্বাসী বিশিষ্ট সাংবাদিক ও সমাজকর্মী গৌরী লঙ্কেশ কট্টরপন্থী হিন্দুত্ববাদ বিরোধী হিসাবে পরিচিত ছিলেন। গত বছর ৫ সেপ্টেম্বর রাজারাজেশ্বরী নগরীতে নিজের বাড়ির সামনে খুন হন তিনি। দরজা খুলে বাড়িতে ঢোকার সময় তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে পরশুরাম বাঘমারে। ২০১৫ সালে এমএম কালবুর্গিকে খুন করতে যে ৭.৬৫ মিমির দেশীয় পিস্তল ব্যবহার করা হয়েছিল, গৌরীকে খুন করতেও সেটি-ই ব্যবহার করা হয়েছিল প্রাথমিক চার্জশিটে জানায় সিট।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy