মণিপুর-মায়ানমার সীমান্তের মোরেতে গত কাল কুকি জঙ্গিদের হামলায় নিহত হয়েছিলেন এসডিপিও আনন্দ কুমার। সেই ঘটনার জেরে বিশেষ অভিযান চালিয়ে যৌথ বাহিনী অন্তত ৩২ জন মায়ানমারের নাগরিককে ধরেছে। তাঁদের মধ্যে ১০ জনকে হেলিকপ্টার করে ইম্ফলে নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ চালানো হচ্ছে। বাকি ২২ জনকে মোরে থানায় জেরা করা হচ্ছে।
আজ মিজ়োরামের সভায় মণিপুরে শান্তিরক্ষার আবেদন জানিয়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ বলেন, ‘‘গত ৯ বছর উত্তর-পূর্ব শান্ত ছিল। কিন্তু মণিপুরে যা ঘটেছে তা দুঃখজনক। হিংসা কোনও সমাধান আনতে পারে না। কুকি ও মেইতেইদের কাছে অনুরোধ, তাঁরা যেন শত্রুতা পাশে সরিয়ে শান্তি ফেরাতে ও সমাধান সূত্র বার করতে একসঙ্গে বসে, সব অভিযোগ ও দাবি নিয়ে মুখোমুখি আলোচনা শুরু করেন।” তিনি কংগ্রেসকে কাঠগড়ায় তুলে বলেন, “মণিপুরের পরিস্থিতি যখন খারাপ হচ্ছিল তখন কংগ্রেস সব রকম ভাবে তা নিয়ে রাজনীতি করে ফায়দা লোটার চেষ্টা করেছে।”
রাতে ফের ইম্ফলে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের কাছে একটি থানা ঘেরাও করে অস্ত্রশস্ত্র লুট করার চেষ্টা করে জনতা। পরিস্থিতি সামলাতে শূন্যে গুলি ছোড়ে পুলিশ। বাহিনীর দাবি, জনতার নেতৃত্বে ছিলেন যুব সংগঠন আরামবাই টেংগল গোষ্ঠীর সদস্যেরা। তাঁদের দাবি, মোরেতে আনন্দ কুমারের মৃত্যুর পরেও উপযুক্ত পদক্ষেপ করছে না বীরেন সিংহ সরকার। রাতে ১ নম্বর মণিপুর রাইফেলস কমপ্লেক্সের দিক থেকেও গুলির শব্দ শোনা গিয়েছে।
গত কাল কুকি জঙ্গিদের গুলিতে আনন্দ কুমারের মৃত্যুর পরে সেখানে পাঠানো অতিরিক্ত বাহিনীর উপরেও আক্রমণ চালায় জঙ্গিরা। আরও তিন জওয়ান জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। তাঁরা হলেন হেড কনস্টেবল এস থুইকাভাং, কনস্টেবল এস শেখরজিৎ ও এল বঙ্কিম সিংহ। ঘটনার পরে দফায় দফায় গুলির লড়াই চলে। আনন্দের স্ত্রী, তিন ছেলে ও এক মেয়ে আছেন। সরকার তাঁর নিকটাত্মীয়ের চাকরি ও পরিবারকে ৫০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেও আনন্দের পরিবার ও যৌথ মঞ্চ বলেছে, হত্যাকারীরা ধরা না পড়লে তাঁরা দেহ ফেরত নেবেন না।
‘ইয়ুথ অব মণিপুর’ গত রাতে মুখ্যমন্ত্রীর বাংলো পর্যন্ত প্রতিবাদ মিছিল করে। আজ সকাল থেকে মোরেতে ফের পুলিশ কমান্ডোদের অভিযান শুরু হয়। কুকিদের দাবি, সিনাম গ্রামে যাওয়ার পথে কমান্ডোরা জনজাতিদের কিছু বাড়ি পুড়িয়ে দিয়ে সামগ্রী লুট করেছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)