টানা ভারী বৃষ্টিতে কার্যত বিপর্যস্ত পঞ্জাবের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। প্রবল বৃষ্টি এবং বন্যা পরিস্থিতিতে এখনও পর্যন্ত পঞ্জাবে ৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। সেই সঙ্গে ঘরছাড়া রাজ্যের কয়েক হাজার মানুষ। প্রশাসনের দাবি, বন্যা পরিস্থিতিতে পঞ্জাবে প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ মানুষ কঠিন সমস্যার মুখে পড়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে বন্যা কবলিত পঞ্জাব, জম্মু-কাশ্মীর, উত্তরাখণ্ড এবং হিমাচলপ্রদেশের জন্য বিশেষ ত্রাণ প্যাকেজ ঘোষণার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে আবেদন জানালেন কংগ্রেস সাংসদ তথা লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী।
বুধবার নিজের এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করা একটি ভিডিয়োর রাহুলকে বলতে শোনা যায়, ‘বন্যা পঞ্জাবে ধ্বংস-যজ্ঞ চালিয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীর, হিমাচলপ্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ডের পরিস্থিতিও উদ্বেগজনক। তাই আমি এই রাজ্যগুলির জন্য, বিশেষ করে কৃষকদের জন্য অবিলম্বে একটি বিশেষ ত্রাণ প্যাকেজ ঘোষণার দাবি জানাই’। ইতিমধ্যেই পঞ্জাবকে বন্যা বিপর্যস্ত রাজ্য হিসেবে ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। সে রাজ্যের ২৩টি জেলার প্রতিটিই বন্যা কবলিত। বিপর্যয়ের মুখে পঞ্জাবের ১২০০টি গ্রামও। এমন পরিস্থিতিতে রাজ্যের প্রতিটি জেলা প্রশাসনকে বিশেষ ভাবে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত সিংহ মান। এ দিন পঞ্জাবের ফিরোজ়পুরের বন্যা বিপর্যস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মান।
বর্ষার প্রায় চলে যাওয়ার সময় হয়ে এলেও উত্তর ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বৃষ্টি থামছেই না। ফলে জল ছাড়তে বাধ্য হয়েছে পঞ্জাব ও উত্তর ভারতের একাধিক জলাধার। আর তাতেই জটিল হয়ে উঠেছে পঞ্জাবের বন্যা পরিস্থিতি। সে রাজ্যের কৃষি দফতর সূত্রে খবর, সাম্প্রতিক বন্যা পরিস্থিতিতে পঞ্জাবে প্রায় ৩.৭৫ লক্ষ একর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। আগামী ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পঞ্জাবের স্কুল, কলেজ-সহ প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বুধবার এ ব্যাপারে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী হরজিৎ সিংহ বাইন্স।
পঞ্জাবের পাশাপাশি বিপজ্জনক পরিস্থিতি জম্মু ও কাশ্মীর, হিমাচলপ্রদেশ, হরিয়ানা-সহ উত্তর ভারতের একাধিক রাজ্যেও। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের তরফে এই রাজ্যগুলিতে জারি করা হয়েছে‘রেড অ্যালার্ট’।
গত মঙ্গলবার হিমাচলের কুলুতে ধসের জেরে একটি বাড়ি ভেঙে পড়ার খবর মিলেছিল। অতিবৃষ্টির কারণে বেড়েছিল বিপাশা, শতদ্রু এবং ইরাবতীর জলস্তর। এমন পরিস্থিতিতে নদী তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনা হয়। সেই সঙ্গে বন্ধ রাখা হয়েছে উত্তরাখণ্ডের বিভিন্ন জেলার সরকারি স্কুলগুলি। টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত গুরুগ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকাও। জলের তলায় এলাকার একাধিক রাস্তা। অন্য দিকে, গত সোমবারের পর থেকে ক্রমেই যমুনার জলস্তর বাড়তে থাকায় নদী তীরবর্তী এলাকায় বসবাসকারী মানুষদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে গিয়েছে দিল্লি প্রশাসন।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)