Advertisement
E-Paper

‘সিঁদুরে’ও রাজনীতির মেঘ! কংগ্রেসের দেওয়া তালিকা না মেনে শশীকে কংগ্রেস প্রতিনিধি ঠিক করে ফেলল বিজেপি-ই

শুক্রবার কেন্দ্রের তরফে কংগ্রেসের কাছে চারটি নাম প্রস্তাব করার কথা বলা হয়। দুপুরেই চারটি নাম জানিয়ে দেয় কংগ্রেস। কিন্তু সেই তালিকায় তিরুঅনন্তপুরমের কংগ্রেস সাংসদ তারুরের নাম ছিল না।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০২৫ ১৭:০০
(বাঁ দিক থেকে) মল্লিকার্জুন খড়্গে, শশী তারুর এবং রাহুল গান্ধী।

(বাঁ দিক থেকে) মল্লিকার্জুন খড়্গে, শশী তারুর এবং রাহুল গান্ধী। —ফাইল চিত্র।

কংগ্রেসের প্রস্তাব কার্যত অগ্রাহ্য করে তাদেরই দলের প্রতিনিধি হিসাবে শশী তারুরকে বেছে নিল কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার।

সন্ত্রাসবাদ এবং তাতে পাকিস্তানের সমর্থনের বিষয়টি গোটা বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে সাতটি প্রতিনিধিদলকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। প্রতিনিধিদলে থাকছেন কমবেশি সব দলের সাংসদেরাই। শুক্রবার কেন্দ্রের তরফে কংগ্রেসের কাছে চারটি নাম প্রস্তাব করার কথা বলা হয়। দুপুরেই চারটি নাম জানিয়ে দেয় কংগ্রেস। কিন্তু সেই তালিকায় তিরুঅনন্তপুরমের কংগ্রেস সাংসদ তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তারুরের নাম ছিল না। তার পরেও অবশ্য শনিবার সাতটি প্রতিনিধিদলের একটির নেতা হিসাবে শশীর নাম ঘোষণা করে কেন্দ্র। কেন্দ্রের ঘোষণার পর প্রাক্তন কূটনীতিক শশীও জানান যে, তিনি ‘সম্মানিত’।

শনিবার সকালে কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করেন। তাতে তিনি জানান, শুক্রবার সকালে কেন্দ্রীয় সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে এবং লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর কাছে চারটি নাম চেয়ে পাঠান। দুপুরেই চারটি নাম জানিয়ে দেন রাহুল। জয়রাম ওই চারটি নাম প্রকাশ্যে না আনলেও সেগুলি আর গোপন থাকেনি। দেখা যায়, হাত শিবিরের দেওয়া নামের তালিকায় রয়েছে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আনন্দ শর্মা, লোকসভায় কংগ্রেসের উপ-দলনেতা গৌরব গগৈ, রাজ্যসভার সাংসদ সৈয়দ নাসির হুসেন এবং রাজ্যসভার আর এক সাংসদ রাজা ব্রারের নাম।

শনিবার সকালে রিজিজু সরকারি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানিয়ে দেন, একটি সর্বদলীয় প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে থাকবেন তারুর। বাকি দলগুলির নেতৃত্বে থাকছেন বিজেপির রবিশঙ্কর প্রসাদ, জেডিইউর সঞ্জয়কুমার ঝা, বিজেপির বৈজয়ন্ত পান্ডা, ডিএমকের কানিমোঝি করুনানিধি, এনসিপির সুপ্রিয়া সুলে এবং শিবসেনার শ্রীকান্ত শিন্দে। ‘সম্মানিত’ তারুর অবশ্য এই বিতর্ক নিয়ে মুখ খোলেননি। বরং ইঙ্গিতবাহী মন্তব্যে বলেছেন, “যখন জাতীয় স্বার্থের বিষয় থাকে, আর আমাকে সেখানে প্রয়োজন পড়ে, তখন আমি সব সময় রয়েছি।”

সাম্প্রতিক সময়ে তারুরকে নিয়ে কংগ্রেসের অস্বস্তি অবশ্য নতুন নয়। কয়েক মাস আগে আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদীর বৈঠকের প্রশংসা করেছিলেন তারুর। তা নিয়ে কংগ্রেসের অন্দরেই প্রশ্ন ওঠে। সেই সময় তিরুঅনন্তপুরমের কংগ্রেস সাংসদ ইঙ্গিতপূর্ণ ভাবে জানিয়েছিলেন, তিনি কংগ্রেসের জন্য কাজ করতে সব সময়েই প্রস্তুত। কিন্তু দলের তাঁকে প্রয়োজন না-হলে ‘অন্য অনেক কিছুই’ করার আছে তাঁর। অবশ্য দলবদলের কোনও পরিকল্পনা তাঁর নেই বলেই জানিয়েছিলেন তারুর।

চলতি মাসের গোড়ায় তারুরের নির্বাচনী কেন্দ্র তিরুঅনন্তপুরমে ভিড়িনজাম সমুদ্রবন্দরের উদ্বোধন করেন মোদী। মোদীকে বিমানবন্দরে আনতে যাওয়ার পাশাপাশি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের সঙ্গে ছিলেন তারুরও। বক্তব্যের মাঝে হঠাৎ বিজয়নের দিকে তাকিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী, আমি আপনাকে বলতে চাই যে, আপনি বিরোধী জোট ইন্ডিয়ার গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। শশী তারুরও এখানে বসে রয়েছেন। আজকের অনুষ্ঠানের পর অনেকের ঘুম উড়ে যাবে!” খোলসা না-করলেও মোদী যে বাম-কংগ্রেসকেই কটাক্ষ করতে চেয়েছেন, তা স্পষ্ট হয়ে যায়। এই সমস্ত ঘটনাপরম্পরায় কংগ্রেসের অন্দরে তারুর-রহস্য ক্রমশই ঘনীভূত হচ্ছে। তার পরই কেন্দ্রীয় দলের প্রতিনিধি হিসাবে শশীকে বেছে নিল মোদী সরকার।

সন্ত্রাসবাদ দমনে ‘অপারেশন সিঁদুর’ এবং তার পরে ভারত-পাক সামরিক সংঘাতের আবহে ইসলামাবাদকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে আরও কোণঠাসা করতেই বিভিন্ন দেশে প্রতিনিধিদল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র। এর পাশাপাশি রাজনৈতিক বিভাজন দূরে সরিয়ে সবাই যে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে এককাট্টা, সেই বার্তাও তুলে ধরতে চেয়েছিল ভারত। কিন্তু প্রতিনিধিদল বিদেশের বিমান ধরার আগেই ঐক্যের সুর কাটল। ‘সিঁদুরে’ও ঘনাল রাজনীতির মেঘ।

Shashi Tharoor Congress Delegation Operation Sindoor
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy