কর্নাটক সরকার কি ভেঙে যাবে? মুখ্যমন্ত্রিত্ব হারাবেন সিদ্দারামাইয়া? নতুন মুখ্যমন্ত্রী হবেন বর্তমান উপমুখ্যমন্ত্রী ডি শিবকুমার? এমন নানা প্রশ্ন উঠছে। আর এই জল্পনা উস্কে দিয়েছে দিল্লিতে মল্লিকার্জুন খড়্গের বাসভবনে এক বৈঠক। কংগ্রেস সভাপতির সঙ্গে দেখা করেন শিবকুমারের ঘনিষ্ঠ বেশ কয়েক জন বিধায়ক। কংগ্রেসের এক সূত্রে দাবি করা হয়, ওই বিধায়কেরা নাকি শিবকুমারকে মুখ্যমন্ত্রী করার দাবি জানিয়েছেন! সেই জল্পনা নিয়ে এ বার মুখ খুললেন সিদ্দারামাইয়া এবং শিবকুমার, দু’জনেই। একই সুরে কর্নাটকের সরকার ভাঙনের সব জল্পনা উড়িয়ে দিয়েছেন। সিদ্দারামাইয়া যাবতীয় গুজব উড়িয়ে দিয়ে দাবি করেছেন, ‘অপ্রয়োজনীয় বিতর্ক’। অন্য দিকে, শিবকুমার জানান, দলের মধ্যে কোনও দল গঠন করা তাঁর রক্তে নেই। দু’জনেই জানান, তাঁরা দলের শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশ মেনেই চলবেন!
সিদ্দারামাইয়া এবং শিবকুমারের মধ্যে চাপানউতর অবশ্য নতুন নয়। ২০২৩ সালের মে মাসে বিজেপিকে হারিয়ে কর্নাটকে ক্ষমতায় আসে কংগ্রেস। মুখ্যমন্ত্রী করা হয় সিদ্দারামাইয়াকে। আর উপমুখ্যমন্ত্রী হন শিবকুমার। সেই সময় শোনা গিয়েছিল, আড়াই বছর পর শিবকুমারকে মুখ্যমন্ত্রী করা হবে। যদিও কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছুই বলা হয়নি। কয়েক দিন আগেই মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে আড়াই বছরের মেয়াদ শেষ করেছেন সিদ্দারামাইয়া। তার পর থেকেই শিবকুমারকে মুখ্যমন্ত্রী করার দাবি উঠেছে। অনেকেই দাবি করেন, শিবকুমার নিজেও তা-ই চান। তবে শীর্ষ নেতৃত্বের থেকে কোনও ইঙ্গিত না-মেলায় ‘বিদ্রোহের’ জল্পনা শুরু হয়। সেই জল্পনা কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেয় খড়্গের সঙ্গে কর্নাটকের কয়েক জন বিধায়কের বৈঠকের খবর!
সেই জল্পনা নিয়ে শুক্রবার নীরবতা ভাঙেন শিবকুমার। এক্স পোস্টে তিনি লেখেন, ‘‘১৪০ জন বিধায়কই আমার বিধায়ক। দলের মধ্যে নতুন দল গঠন করা আমার রক্তে নেই। মুখ্যমন্ত্রী এবং আমি—দু’জনই সব সময় বলে এসেছি আমরা হাইকমান্ডের নির্দেশ মেনে চলি।’’ তা হলে খড়্গের সঙ্গে দলীয় বিধায়কেরা কেন বৈঠক করলেন? কর্নাটকের উপমুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মন্ত্রিসভা রদবদলের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সকলেই মন্ত্রী হতে চান। তাই দিল্লির নেতৃত্বে সঙ্গে দেখা করা তাঁদের পক্ষে খুবই স্বাভাবিক। এটা তাঁদের অধিকার। আমরা তাঁদের আটকাতে পারি না।’’ আড়াই বছর, আড়াই বছর মুখ্যমন্ত্রিত্বের ‘চুক্তির’ বিষয়টি উড়িয়ে দিয়েছেন শিবকুমার। তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন যে তিনি মুখ্যমন্ত্রিত্বের পাঁচ বছরের মেয়াদ পূর্ণ করবেন। আমরা সকলে তাঁর সঙ্গে কাজ করব।’’
আরও পড়ুন:
সিদ্দারামাইয়াও স্পষ্ট করেন, ‘‘আমার ক্ষমতা এখন বা ভবিষ্যতেও সুরক্ষিত। আমরা জনগণকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণের চেষ্টা করছি। আমাদের শাসন করার জন্য পাঁচ বছর সময় দেওয়া হয়েছে। পাঁচ বছর পর আবার নির্বাচন হবে আর আমরাই আবার জিতব।’’
প্রশ্ন উঠছে, তবে কেন কংগ্রেস বিধায়কেরা দিল্লিতে বৈঠক করলেন? খড়্গের সঙ্গে বৈঠকে যোগ দেওয়া বিধায়ক কেএন রাজন্না বলেন, ‘‘২০২৮ সালে কর্নাটকে কী ভাবে ক্ষমতা ধরে রাখা যায়, সেই সম্পর্কে আলোচনা হয়েছে।’’