ভারত সফরের দিনক্ষণ চূড়ান্ত হয়নি। কিন্তু কূটনৈতিক মহলে আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির সম্ভাব্য ভারত সফর নিয়ে। ঘটনাচক্রে, এ বছরের শেষে দিকে ভারত সফরে আসার কথা রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনেরও। জ়েলেনস্কি পুতিনের আগেই ভারতে আসবেন কি না, তা এখনওস্পষ্ট নয় বলেই বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে।
আমেরিকার সঙ্গে শুল্কযুদ্ধের আবহে রুশ প্রেসিডেন্টের ভারত সফর তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠছে। কারণ, যখনই আমেরিকা ‘রক্তচক্ষু’ দেখিয়েছে, পুরনো বন্ধু ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছে রাশিয়া। রুশ প্রেসিডেন্টের ভারত সফর নিয়ে যখন আলোচনা তুঙ্গে, তার মধ্যেই ভারতে ইউক্রেনের দূতাবাস থেকে প্রেসিডেন্ট জ়েলেনস্কির ভারত সফরের বিষয়টি জানানো হল। রাশিয়া যেমন ভারতের পুরনো বন্ধু, তেমন ইউক্রেনের সঙ্গেও ভারতের সম্পর্ক ভাল। ইউক্রেন থেকে বিভিন্ন উচ্চপ্রযুক্তির যুদ্ধ সরঞ্জাম আমদানি করে ভারত। বড় বড় যুদ্ধ জাহাজের টারবাইনের যন্ত্রাংশ পরিষেবার ক্ষেত্রে ভারত অনেকটাই নির্ভরশীল এই দেশের উপর দীর্ঘদিন থেকেই। জ়েলেনস্কি যদি আসেন, এটাই হবে তাঁর প্রথম ভারত সফর। এর আগে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বেশ কয়েক বার সাক্ষাৎ হয়েছে প্রধানমন্ত্রী মোদীর। তবে এ বারের সফরের তাৎপর্য ভিন্ন। কূটনৈতিক শিবিরের মতে জ়েলেনস্কি দু’টি বিষয়ে ভারতের কাছে দাবি জানাতে পারেন। প্রথমত এবং প্রধানত তিনি ভারতীয় নেতৃত্বকে বলবেন, মস্কোর সঙ্গে নয়াদিল্লির সুসম্পর্ককে কাজে লাগিয়ে রাশিয়ার উপর যুদ্ধ বন্ধের জন্য চাপ দিতে। পাশাপাশি, এমনটাও তিনি বলতে পারেন প্রয়োজনে রাশিয়ার উপর চাপ বাড়াতে সে দেশ অশোধিত তেল কেনা কমাক ভারত।
বিষয়টি নিয়ে ভারতের নিজের দায়ও রয়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ হলে মস্কোর উপর থেকে আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা শিথিল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে ভারতের উপরে আমেরিকার বাড়তি ২৫ শতাংশ জরিমানা মকুব হতে পারে বলে আশা নয়াদিল্লির। সাউথ ব্লক এর আগে আমেরিকা এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের মধ্যে আলাস্কার বৈঠককে স্বাগত জানিয়ে বলেছিল, ভারত শান্তির পক্ষে, কূটনীতি এবং সংলাপের পক্ষে। সেই সূত্রে ধরেই আগামী দিনে জ়েলেনস্কির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদীর সম্ভাব্য বৈঠক কোন পথে এগোয় তা দেখার।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)