পহেলগাম হানার পরে এই প্রথম নিউ ইয়র্কে বসছে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সম্মেলন। নয়াদিল্লির পরিকল্পনা— বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক, বহুপাক্ষিক মঞ্চে এবং ভারতের জন্য নির্ধারিত দিনের বক্তৃতায় আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদের প্রসঙ্গটি তুলে জঙ্গিপনা সম্পর্কে শূন্য সহনশীলতার বার্তা দেবে মোদী সরকার। পাশাপাশি বর্তমান ভূকৌশলগত পরিস্থিতিতে নিজেদের ভারসাম্যের কূটনীতিকেও তুলে ধরা ভারতের লক্ষ্য।
এই দায়িত্ব নিয়েই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দূত হিসেবে নিউ ইয়র্কে বিভিন্ন স্তরের পার্শ্ববৈঠক করছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। বর্তমান প্রেক্ষিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকটি তিনি সেরেছেন আমেরিকার বিদেশসচিব মার্কো রুবিয়োর সঙ্গে। শুল্ক এবং ভিসা নিয়ে সংঘাতের মধ্যে ভারত-আমেরিকা বাণিজ্য চুক্তিকে সফল পরিসমাপ্তির দিকে নিয়ে যেতেআমেরিকা সফরকে কাজে লাগাচ্ছেন জয়শঙ্কর। সে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ও বাণিজ্যিক মহলে ভারতের হয়ে দরবার করছেন।
পাশাপাশি ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিদেশমন্ত্রীদের ঘরোয়া আলোচনায় যোগ দিয়েছিলেন তিনি। আলোচনা হয়েছে বহুপাক্ষিকতা, ভারতের সঙ্গে ই ইউ-এর সম্পর্ক, প্যালেস্তাইন-ইজ়রায়েল সংঘাতের মতো বিষয়গুলি নিয়ে। পাশাপাশি ইউক্রেন সংঘাত, গাজ়া পরিস্থিতি, শক্তি ও বাণিজ্য ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানো, আন্তর্জাতিক বণ্টন ব্যবস্থাকে চাঙ্গা রাখার মতো বিষয় আলোচনায় জায়গা পেয়েছে বলে খবর। ই ইউ-এর ভারতে নিযুক্ত দূত হার্বে ডেলফিনের বক্তব্য, ভারতের বক্তব্য ও আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গি মান্যতা পেয়েছে ওই ঘরোয়া আলোচনায়।
ব্রিকস-এর বিদেশমন্ত্রীদের সঙ্গেও নিউ ইয়র্কে বৈঠক করবেন জয়শঙ্কর। গত শুক্রবার রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় গৃহীত নিউ ইয়র্ক ঘোষণাপত্রে যে ১৪২টি দেশ স্বাধীন প্যালেস্টাইন রাষ্ট্র গঠনের পক্ষে ভোট দিয়েছে, তাদের অন্যতম ভারত৷ মোদী সরকারের সঙ্গে ইজ়রায়েলের ঘনিষ্ঠতা কারও অজানা নয়। কিন্তু এই মুহূর্তে আমেরিকা বাদে বিশ্বের প্রায় সব বৃহৎ শক্তিধর দেশ প্যালেস্টাইনের পাশে দাঁড়াচ্ছে। ভূকৌশলগত ভাবে একঘরে করার চেষ্টা হচ্ছে ইজ়রায়েলকে। ভারতও এই ঝাঁকের বাইরে থাকতে চাইছে না। তাই রাষ্ট্রপুঞ্জে জয়শঙ্করের দৌত্যে তার ছায়া পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)