ডিজিটাল অ্যারেস্ট, সাইবার প্রতারণার মামলায় এ বার কেন্দ্রীয় সরকারকে নোটিস দিল সুপ্রিম কোর্ট। দেশে এই ধরনের প্রতারণার ঘটনা দিন দিন বাড়ছে। বিশেষ ভাবে এতে নিশানা করা হচ্ছে বয়স্কদের। এই সংক্রান্ত একটি মামলা স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে শুনছিল শীর্ষ আদালত। সেখানে প্রতারণার বিশেষ কায়দা দেখে কেন্দ্রকে নোটিস দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ। আদালতের মন্তব্য, ‘‘সাধারণ ভাবে আমরা রাজ্য পুলিশকেই এই ঘটনার তদন্ত করতে বলতাম। কিন্তু আমরা বিস্মিত, হতবাক। একে সাধারণ ভাবে নেওয়া যাবে না।’’ সাইবার প্রতারণার মোকাবিলায় কেন্দ্র এবং রাজ্যগুলিকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে বলেও জানিয়েছে আদালত।
হরিয়ানার অম্বালার একটি ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা শুনছে সুপ্রিম কোর্ট। গত ২১ সেপ্টেম্বর সেখানকার এক বৃদ্ধ দম্পতি থানায় প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগ, ডিজিটাল অ্যারেস্টের মাধ্যমে ভয় দেখিয়ে গত ১ থেকে ১৬ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তাঁদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে প্রায় দেড় কোটি টাকা। ওই অর্থ দম্পতির সারা জীবনের সঞ্চয় ছিল।
আরও পড়ুন:
কী ভাবে প্রতারণা? কেনই বা এতে বিস্মিত শীর্ষ আদালত?
অভিযোগপত্র অনুযায়ী, সিবিআই এবং আইবি (ইনটেলিজেন্স ব্যুরো) আধিকারিক সেজে বৃদ্ধ দম্পতির সঙ্গে ভিডিয়ো কলে যোগাযোগ করা হয়েছিল। খোদ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের ভুয়ো কপি দেখানো হয় তাঁদের। এমনকি, তাতে ছিল প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার স্বাক্ষরও। বৃদ্ধ দম্পতিকে ভয় দেখিয়ে তাঁদের কাছ থেকে টাকা আদায় করে নেওয়া হয়। দফায় দফায় ব্যাঙ্ক লেনদেনের মাধ্যমে হাতানো হয় ওই অর্থ। এই সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, ‘‘সাধারণ ভাবে রাজ্য পুলিশকে আমরা তদন্তের দায়িত্ব দিতাম। কিন্তু দুষ্কৃতীরা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ দেখিয়ে, সুপ্রিম কোর্টের নামে প্রতারণা করেছে। এতে আমরা বিস্মিত। বিচারপতি, ইডি আধিকারিকের ভুয়ো স্বাক্ষর রয়েছে তাতে। আদালতের স্ট্যাম্পও রয়েছে। এতে জনগণের বিশ্বাসে, ভরসায় আঘাত লাগবে। এত গুরুতর অপরাধকে সাধারণ সাইবার প্রতারণা হিসাবে দেখা যাবে না।’’
দেশের নানা প্রান্তেই যে এই ধরনের ঘটনা বেড়ে গিয়েছে, বার বার অভিযোগ দায়ের করা হচ্ছে, তা-ও উল্লেখ করেছে শীর্ষ আদালত। নোটিস দেওয়া হয়েছে সিবিআই এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে। এ বিষয়ে তাদের বক্তব্যও জানতে চেয়েছে আদালত। এ ছাড়া নোটিস পাঠানো হয়েছে হরিয়ানার সরকার, অম্বালার সাইবার ইউনিটকে।