মোদী সরকারের চিন নীতি নিয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে কেন্দ্রের সংঘাত ক্রমশ বাড়ছে। সম্প্রতি বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুকে বিঁধেছিলেন চিন-রোমান্টিকতার অভিযোগে। আজ একটি বিবৃতি দিয়ে কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশ ভারত-চিন প্রকৃত নিযন্ত্রণরেখার পরিস্থিতি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে নিশানা করেছেন। তাঁর অভিযোগ, ‘নিজের ভাবমূর্তি তৈরি করতে এবং ভোটের রাজনীতিতে ফায়দা তুলতে নরেন্দ্র মোদী জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে আপস করেছেন।’
কংগ্রেস আজ সেনাপ্রধান মনোজ পাণ্ডের দু’দিন আগের একটি মন্তব্যকে এই প্রসঙ্গে তুলে ধরেছে। রমেশের কথায়, “সেনাপ্রধানের বছরের গোড়ায় করা সাংবাদিক সম্মেলনে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে মোদী সরকারের জমানায় জাতীয় নিরাপত্তার বেহাল পরিস্থিতি। পাণ্ডে বলেছেন, ২০২০-র সালের মধ্যবর্তী পর্যায়ে যে স্থিতাবস্থা ছিল, চিনা সেনার সেখানে ফিরে যাওয়ার জন্য আমাদের চাপ বহাল রয়েছে। তাঁর এই কথায় স্পষ্ট, গত চার বছরে লাদাখ অঞ্চলে অনুপ্রবেশ করে চিনা সেনা ২ হাজার বর্গ কিলোমিটার দখল করে রেখেছে।”
জয়রাম তাঁর বিবৃতিতে মনে করিয়ে দিয়েছেন, ২০২০ সালের ১৯ জুন প্রধানমন্ত্রী মোদী চিনকে ‘ক্লিন চিট’ দিয়ে বলেছিলেন, কেউ আমাদের সীমানা পেরিয়ে ঢুকে আসেনি। জয়রামের কথায়, “গোটা বিষয়টি আমাদের সেনাবাহিনীকে অপমান করা। ১৮ রাউন্ড সেনা-আলোচনার পরেও যে ২ হাজার বর্গ কিলোমিটার জমি আমরা ফিরে পেলাম না, তার কারণ প্রধানমন্ত্রীর এই মনোভাব। চিন আমাদের প্রতিবেশী বলয়ে থাবা বাড়াচ্ছে। তার সবচেয়ে বড় উদাহরণটি হল মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মইজ্জু ভারত সফরের আগে চিনে চলে গেলেন। ভুটানের ভিতরেও ঢুকে পড়ছে চিন।”
আজই নাগপুরে একটি অনুষ্ঠানে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর মন্তব্য করেছেন, চিন যদি ভেবে থাকে, সীমান্তে উত্তেজনা বজায় রাখার পরেও সম্পর্কের বাকি দিকগুলি স্বাভাবিক ভাবে চলবে, তারা ভুল করছে। জয়শঙ্কর বলেন, “এটা হওয়া অসম্ভব। আমি চিনের বিদেশমন্ত্রীকে বুঝিয়েছি এটা, যে লড়াই ও বাণিজ্য একসঙ্গে হয় না।” তবে বিদেশমন্ত্রী জানিয়েছেন, সমস্যা মেটাতে কূটনৈতিক প্রয়াস চালু রয়েছে। জটিল সমস্যার সমাধান তাড়াহুড়ো করে করা উচিত নয়।
আবার কংগ্রেসের বিবৃতিটিতে বলা হয়েছে, মোদী সরকার দেশের নিরাপত্তার প্রশ্নে উদাসীন। তারা নিজেদের নির্বাচনী সুবিধার নিরিখেই বিষয়টিকে দেখে। প্রধানমন্ত্রী মনে করেন, জাতীয় নিরাপত্তাকে সুরক্ষিত রাখতে হাতে কলমে পদক্ষেপের বদলে সমুদ্র সৈকতে সফর করে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার চালানোটাই যথেষ্ট।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)