Advertisement
E-Paper

গয়নার জন্যই এত খুন! মহিলাদের একাকিত্বের সুযোগ নিতেন ডাক্তার

ডক্টর পল আসলে কোনও ডাক্তারই নন। চিকিৎসা করার আড়ালে গয়না হাতিয়ে খুন করাটাই ছিল তাঁর উদ্দেশ্য। আগে তো ৬ জনকে খুনের কথা স্বীকার করেইছেন তিনি, কয়েক দিনের মধ্যে আরও দু’জনকে খুন করার পরিকল্পনা ছিল নাকি তার!

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০১৬ ১৫:৫২
চিকিৎসকের বাগানবাড়ি থেকে একের পর এক দেহ উদ্ধার। ইনসেটে, মূল অভিযুক্ত সন্তোষ পল।

চিকিৎসকের বাগানবাড়ি থেকে একের পর এক দেহ উদ্ধার। ইনসেটে, মূল অভিযুক্ত সন্তোষ পল।

ডক্টর পল আসলে কোনও ডাক্তারই নন। চিকিৎসা করার আড়ালে গয়না হাতিয়ে খুন করাটাই ছিল তাঁর উদ্দেশ্য। আগে তো ৬ জনকে খুনের কথা স্বীকার করেইছেন তিনি, কয়েক দিনের মধ্যে আরও দু’জনকে খুন করার পরিকল্পনা ছিল নাকি তার! পরবর্তী টার্গেটই ছিল তাঁর প্রেমিকা! খুনি সন্তোষ পলকে জেরায় এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে পুলিশের তদন্তে। এই ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ আরও জেনেছে যে, টুকটাক চিকিৎসা করলেও তাঁর ডাক্তারি ডিগ্রিটা আসলে ভুয়ো। খোঁজ নিয়ে দেখা গিয়েছে যে, তিনি আসলে এক চিকিৎসকের ক্লিনিকে অ্যাসিস্ট্যান্ট-এর কাজ করতেন। শুধু তাই নয়, তাঁর বিরুদ্ধে ওই চিকিৎসকের অ্যাম্বুল্যান্স চুরির অভিযোগও রয়েছে।

পুলিশ সূত্রে খবর, তাঁর প্রেমিকা জ্যোতি মান্দ্রে নামে ওই নার্স আসলে সব কীর্তির খবরই জানতেন। এমনকী, বেশ কিছু খুনের ঘটনায় তিনিও সহকারীর ভূমিকাও পালন করেছিলেন। কিন্তু, সম্প্রতি তাঁদের দু’জনের সম্পর্কে টানাপড়েন চলছিল। প্রেমিকা সব ফাঁস করে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছিলেন। সেই ভয় থেকেই সন্তোষ প্রেমিকাকে খুনের ছক কষেছিলেন বলে জানা গিয়েছে। তার পর সম্পত্তিজনিত বিবাদে এক ব্যক্তিকে মারার ফন্দি এঁটেছিলেন তিনি।

কিন্তু ৬ জন ‘রোগী’কে কেন খুন করতে গেলেন তিনি?

আরও পড়ুন: খুনের পর খুন করে লাশ গায়েব! দোষ কবুল পুণের ডাক্তারের

খুনের প্রথম ঘটনাটি ঘটেছিল ২০০৩ সালে। কিসান চিকানে নামে এক গৃহবধূকে ঠিক এ ভাবে খুন করে তাঁর দেহ বাড়ির কাছেই একটা ফাঁকা জায়গায় পুঁতে দিয়েছিলেন। পরের ঘটনাটি ঘটে ২০০৬ সালে। এইচআইভি আক্রান্ত এক রোগীকে আশ্রয় দিয়ে তাঁর মন জিতে নিয়েছিলেন। সেই সুযোগে একই ভাবে গয়না হাতিয়ে খুন করেন তাঁকে। সেই ঘটনারও কোনও কিনারা হয়নি এত দিনে। একটার পর একটা খুন করে নির্দ্বিধায় ঘুরে বেড়াতেন তিনি। এর ফলে দিনে টাকা-পয়সার লোভ আরও পেয়ে বসে তাঁকে। আরও গয়না, আরও টাকার লোভে একের পর এক খুন করে ফেলেন ৬ জনকে। যাঁরা প্রত্যেকেই তাঁর রোগী ছিলেন। তবে শেষ রক্ষা হল না। মঙ্গল জেডে নামে বছর চল্লিশের এক মহিলার রহস্যজনক নিখোঁজের তদন্ত করতে গিয়েই ফাঁস হয়ে যায় সবটা। গ্রেফতার হন ওই ‘চিকিৎসক’ সন্তোষ পল।

কেন তাঁর ফাঁদে পা দিতেন রোগীরা?

আচার-ব্যবহারে তিনি নাকি ভীষণই দয়ালু ছিলেন। খুব কম টাকায় চিকিৎসা করতেন। তাই গ্রামে তাঁকে সবাই ‘দয়ালু’ চিকিৎসক বলেই জানতেন। অল্প কয়েক দিনের মধ্যে যথেষ্ট খ্যাতি অর্জন করে ফেলেছিলেন তিনি। আশেপাশের গ্রামেও তাঁর বেশ নামডাক হয়েছিল। সেটাই ছিল তাঁর হাতিয়ার। এই হাতিয়ারকে কাজে লাগিয়ে রোগীদের সঙ্গে ভাব জমাতে খুব বেশি সময় লাগত না তাঁর।

পুলিশ জানাচ্ছে, এই ভাবে চিকিৎসার অছিলায় রোগীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াতেন পুণের সন্তোষ পল। কে কতটা মানসিক অবসাদে রয়েছেন তা মেপে নিতেন। প্রথমে সেই মতো ঘনিষ্ঠতা বাড়াতেন, তার পর সুযোগ বুঝে মূল্যবান গয়না বা টাকা হাতিয়ে খুন করতেন তিনি। টার্গেট কিন্তু ‘ফিক্সড’। মানসিক অবসাদে ভুগতে থাকা মহিলারা।

doctor murder woman protector
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy