গত কাল লোকসভার পর আজ রাজ্যসভাতেও গ্রেফতার হলে মন্ত্রীদের অপসারণ সংক্রান্ত সংবিধান সংশোধনী বিলটিকে ঘিরে ওয়েলে নেমে সুর চড়াল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে লোকসভাতেও বিরোধীদের মধ্যে তৃণমূলই একমাত্র ওয়েলে নেমে হৈহল্লা করেছে। আজও তার পুনরাবৃত্তি হয়েছে। দৃশ্যতই সংসদের বাদল অধিবেশনের শেষ দিনে কংগ্রেস এবং তৃণমূলের ঐক্যকে ভঙ্গুর দেখিয়েছে। রাজনৈতিক সূত্রের মতে, সংসদ চলাকালীন বিজেপি-বিরোধী কক্ষ সমন্বয়ের প্রয়োজন ছিল তৃণমূলের। কিন্তু অধিবেশন শেষ হওয়ার পর তৃণমূলের সাংসদেরা আবার ভোটমুখী রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে দাঁড়িয়ে লড়বেন। কংগ্রেস তৃণমূলেরশরিক দল নয়, বরং রাজ্যে প্রতিপক্ষ। তাই শেষ পর্বে এসে এই তিক্ততা। তবে এর জেরে ১ সেপ্টেম্বর তেজস্বী যাদব এবং রাহুল গান্ধীর পটনারজনসভায় তৃণমূলের কোনও সদস্য যোগ দেবেন না, বিষয়টি এমন নয়। তৃণমূল নেতৃত্ব জানাচ্ছেন, কেউ অবশ্যই যাবেন। কিন্তু সেটা দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ই কিনা, সে বিষয়ে স্থির সিদ্ধান্ত হয়নি।
গত কালই কংগ্রেস এবং তৃণমূলের মধ্যে ক্ষোভ বিনিময় হয়েছে। তৃণমূলের বক্তব্য, সকালের বিরোধী বৈঠকে স্থির করা হলেও সংবিধান সংশোধনী বিলটিকে রুখতে লোকসভায় সর্বাত্মক ভাবে ওয়েলে ঝাঁপিয়ে প্রতিবাদ করেনি কংগ্রেস। বরং তাদের এই বিল নিয়ে বক্তৃতার দেওয়ার দিকেই ঝোঁক ছিল বেশি। অন্য দিকে কংগ্রেসের বক্তব্য, তৃণমূল উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিরোধী প্রার্থীর জন্য প্রথম সারির নেতাদের প্রস্তাবক হিসাবে রাখেনি, অপেক্ষাকৃত নতুন এবং অনভিজ্ঞদেরই এগিয়ে দিয়েছে। আজ উপরাষ্ট্রপতি পদে বিরোধী প্রার্থী বি সুদর্শন রেড্ডির সঙ্গে মনোনয়ন জমা দিতে তৃণমূলের পক্ষ থেকে শুধু গিয়েছেন শতাব্দী রায়।
রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গের ঘরে আজ সকালের বিরোধী সমন্বয় বৈঠক হয়নি। তৃণমূল নেতারা ‘তড়ি পার’ প্ল্যাকার্ড লিখে এনে ওয়েলে নেমেছেন,কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সামনে গিয়ে চিৎকার করেছেন ওই বিলটি পেশ করার সময়ে। প্রায় মিছিলের মতো করে ঘুরপাক খেয়েছেন রাজ্যসভার ভিতরে। কংগ্রেস সাংসদদের যে যার আসনে দাঁড়িয়ে বিলটি ছিঁড়তে দেখা গিয়েছে। তৃণমূলের অভিযোগ, গত কাল লোকসভার ওয়েলে তৃণমূলেরমহিলা সাংসদদের ধ্বস্তাধ্বস্তির সময় হেনস্থা করেছেন বিজেপি সাংসদ। আজ স্পিকার ওম বিড়লাকে অভিযোগপত্র লিখেছেন তৃণমূলের মিতালি বাগ, শতাব্দী রায় এবং মহুয়া মৈত্র।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)