গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
সোমবার সুপ্রিম কোর্টে শুনানির দিকে তাকিয়ে থাকবে গোটা বাংলা। শুধু বাংলাই নয়, গোটা দেশের নজরই থাকবে শীর্ষ আদালতের দিকে। আরজি কর-কাণ্ডে সিবিআই কী রিপোর্ট জমা দেবে তা নিয়েও অনেক কৌতূহল, অনেক জল্পনা। নির্যাতিতা চিকিৎসকের পরিবারের পক্ষে রবিবারেও দাবি করা হয়েছে, পুলিশ অসহযোগিতা করছে। তিনিও সুপ্রিম কোর্টের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন জানিয়ে নির্যাতিতার বাবা ফের তথ্য প্রমাণ নষ্ট করার অভিযোগ তুলেছেন কলকাতা পুলিশের বিরুদ্ধে। একই দিনে নবান্নে প্রশাসনিক পর্যালোচনা বৈঠক ডেকেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যে যে দ্রোহকাল চলছে তার প্রেক্ষিতে নবান্নের দিকেও নজর থাকবে সোমবার। তবে সব চেয়ে বেশি আগ্রহ থাকবে সুপ্রিম কোর্টে কী হয় তা জানার জন্যই।
সুপ্রিম শুনানি
সুপ্রিম কোর্টে সোমবার হতে চলেছে আরজি কর মামলার দ্বিতীয় শুনানি। আপাতত সে দিকেই নজর গোটা দেশের। ৫ সেপ্টেম্বর, গত বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার শুনানি ছিল। সে দিন প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ না বসায় শুনানি পিছিয়ে যায়। সোমবারের শুনানির দিকে তাকিয়ে রবিবার রাজ্য জুড়ে একাধিক প্রতিবাদ কর্মসূচির ডাক দেয় জুনিয়র ডাক্তার-সহ বিভিন্ন আন্দোলনকারী সংগঠন। ‘মেয়েদের রাতদখল’-এর কর্মসূচিও হয়েছে। পথে নেমেছেন বহু সাধারণ মানুষ। এমনই এক প্রেক্ষিতে শুনানি। সেখানে সিবিআই তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে কী রিপোর্ট জমা দেবেন সে দিকেও তাকিয়ে রয়েছে মানুষ। তবে সবচেয়ে বেশি কৌতূহল সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা কী বলবেন তা নিয়েই।
নবান্নে বৈঠক
অনেক দিন পরে রাজ্যের সব দফতর ও জেলা প্রশাসনকে নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠকে বসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আরজি কর-কাণ্ডের অভিযোগ নিয়ে রাজ্য জুড়ে যে বিক্ষোভ চলছে তার মধ্যেই এই বৈঠক নিয়ে নানা জল্পনাও রয়েছে। পুজোর আগে প্রতি বছরই মমতা বড় আকারে প্রশাসনিক পর্যালোচনা করেন। তবে এ বারে এই বৈঠকের অন্য গুরুত্বও রয়েছে। সেই বৈঠকের আগে রাজ্যের সব দফতরকে কড়া চিঠি পাঠিয়েছেন নতুন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। সেই চিঠি পাঠানো হয়েছে রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমারকেও। চিঠি গিয়েছ সব জেলাশাসক, পুলিশ কমিশনারেটের কমিশনার এবং ডিভিশনাল কমিশনারের কাছেও। চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকের গুরুত্ব উল্লেখ করা হয়েছে মুখ্যসচিবের তরফে। সঙ্গে বলা হয়েছে, সরকারি কাজের প্রতিনিয়ত পর্যালোচনার প্রয়োজন রয়েছে।
জহর-জ্বালা তৃণমূলে
দলীয় সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় আরজি কর-কাণ্ড নিয়ে প্রথম থেকেই সরব। তা নিয়ে তৃণমূলের অস্বস্তি রয়েছেই। রবিবার সেই অস্বস্তি বাড়িয়ে দিয়েছেন দলের আর এক রাজ্যসভা সাংসদ জহর সরকার। এই প্রথম শাসকদলের কোনও সাংসদ ইস্তফা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। শুধু তা-ই নয়, রাজনীতি থেকেও সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন জহর। মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে লেখা চিঠিতে জহর বলেছেন, ‘‘আমি গত এক মাস ধৈর্য ধরে আরজি কর হাসপাতালের ঘৃণ্য ঘটনার বিরুদ্ধে সবার প্রতিক্রিয়া দেখেছি আর ভেবেছি, আপনি কেন সেই পুরনো মমতা ব্যানার্জির মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে সরাসরি জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলছেন না। এখন সরকার যে সব শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে, তা এককথায় অতি অল্প এবং অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে।’’ এর পরে মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য অনুরোধ করেন। জহর জানান, তিনি মানুষকে কথা দিয়েছেন আর ফেরা সম্ভব নয় তাঁর পক্ষে। নজর থাকবে এর গতিপ্রকৃতির দিকে।
আন্দোলন চলছেই
আরজি করে ধর্ষণ ও খুনের প্রতিবাদে মিছিলের অন্ত নেই। প্রতি দিনই বিভিন্ন ক্ষেত্রের মানুষ বিভিন্ন ব্যানার নিয়ে মিছিলে যোগ দিচ্ছেন। সোমবারেও এই রকম বেশ কয়েকটি মিছিল হওয়ার কথা রয়েছে কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায়। আবার সুপ্রিম কোর্টের শুনানির পরেও নতুন করে মিছিলের আয়োজন হতে পারে বলেও ইঙ্গিত রয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট প্রথম শুনানির দিনেই কলকাতা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। সোমের শুনানিতে সিবিআইয়ের রিপোর্টের ভিত্তিতে তদন্ত ও মামলা নতুন মোড় নেয় কি না সেটাও দেখার। আর তার উপরেই নির্ভর করবে আন্দোলনের গতিপ্রকৃতি।
বৃষ্টির ভ্রুকুটি
বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে। যা আগামী ২৪ ঘণ্টায় শক্তি বাড়িতে গভীর নিম্নচাপের আকার নিতে পারে। হাওয়া অফিস জানিয়েছে, এই নিম্নচাপের প্রভাবে সমুদ্রের উপর ঝড় বইছে। হাওয়ার বেগ ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৫৫ কিলোমিটার। রবিবার রাতে তা ৬০ কিলোমিটারে পৌঁছে যেতে পারে। ক্রমে স্থলভাগের দিকে এগোচ্ছে নিম্নচাপ। কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ অংশে এর প্রভাবে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। এই সংক্রান্ত খবরের দিকে নজর থাকবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy