Advertisement
E-Paper

দু’কেজি অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট, সঙ্গে এক অতি-দাহ্য পদার্থও! দিল্লিকাণ্ডের বিস্ফোরক সম্পর্কে অনুমান ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের

বিশেষজ্ঞদের অনুমান, ২ কেজি অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট দিয়ে বোমা তৈরি করা হয়েছিল। তাতেই গত ১০ নভেম্বর বিস্ফোরণ ঘটে লালকেল্লার সামনে সিগন্যালে দাঁড়িয়ে থাকা সাদা হুন্ডাই আই২০ গাড়িটিতে।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০২৫ ১৯:০৮
দিল্লিতে লালকেল্লার সামনে ঘটনাস্থলে নিরাপত্তারক্ষীদের টহল।

দিল্লিতে লালকেল্লার সামনে ঘটনাস্থলে নিরাপত্তারক্ষীদের টহল। ছবি: পিটিআই।

দিল্লিতে লালকেল্লার সামনে বিস্ফোরণ ঘটাতে প্রায় দু’কেজি অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট লেগেছে। ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া মোট ৫২টি নমুনা বিশ্লেষণ করে এমনটাই অনুমান করছেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা। তবে শুধু অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট নয়। সঙ্গে আরও এক দাহ্য পদার্থ ব্যবহৃত হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের অনুমান, অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট এবং পেট্রোলিয়াম দিয়ে বোমা তৈরি করা হয়েছিল। তাতেই গত ১০ নভেম্বর তীব্র বিস্ফোরণ ঘটে লালকেল্লার সামনে সিগন্যালে দাঁড়িয়ে থাকা সাদা হুন্ডাই আই২০ গাড়িটিতে। মৃত্যু হয় ১৩ জনের।

ঘাতক গাড়িটির চালকের আসনে ছিলেন উমর নবি। এই কাশ্মীরি চিকিৎসক নিজে বোমা তৈরিতে পারদর্শী, জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। তিনি হরিয়ানার ফরিদাবাদের আল-ফালাহ্‌ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। অভিযোগ, দীর্ঘ দিন ধরে বড়সড় হামলার পরিকল্পনা করছিল চিকিৎসকদের একটি গোষ্ঠী। তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই কাশ্মীরি। জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের একটি দল হরিয়ানা এবং উত্তরপ্রদেশ পুলিশের সহযোগিতায় অভিযান চালিয়ে কয়েক জন ষড়যন্ত্রকারীকে পাকড়াও করেন। উদ্ধার করা হয় বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক পদার্থ। গোয়েন্দাদের অনুমান, এই খবর শুনে উমর কিছুটা বিব্রত হয়েছিলেন। ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন। সে দিন সন্ধ্যাতেই তিনি রাজধানীতে বিস্ফোরণ ঘটান।

ফরেন্সিক বিশ্লেষণ বলছে, দিল্লিকাণ্ডে যে ধরনের বোমা ব্যবহার করা হয়েছে, তা পাঁচ থেকে ১০ মিনিটের মধ্যেই বানিয়ে ফেলা সম্ভব। কিন্তু উমর কেন সোমবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তিন ঘণ্টার বেশি সময় ধরে পার্কিং এলাকায় দাঁড়িয়েছিলেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। ওই দিন বিকেল ৩টে ১৯ মিনিটে তাঁকে সাদা গাড়িটি নিয়ে পার্কিং এলাকায় প্রবেশ করতে দেখা গিয়েছে। সেখান থেকে বেরিয়েছেন সন্ধ্যা ৬টা ২৮ মিনিটে। এর পর আধঘণ্টার মধ্যে লালকেল্লা মেট্রো স্টেশনের সামনে ওই গা়ড়িতে বিস্ফোরণ ঘটে। ছিন্নভিন্ন হয়ে যান উমর নিজেও।

লালকেল্লা রাজধানীর পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ। তদন্তকারীরা মনে করছেন, ব্যস্ত সময়ে সেখানে বিস্ফোরণ ঘটানোর পরিকল্পনা ছিল ষড়যন্ত্রকারীদের। কিন্তু একাধিক চিকিৎসক ধরা পড়ে যাওয়ায় এবং প্রচুর বিস্ফোরক পুলিশ বাজেয়াপ্ত করে নেওয়ায় উমর পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করতে পারেননি। ভয় পেয়ে তিনি বিস্ফোরকবোঝাই গাড়ি নিয়ে দ্রুত লালকেল্লার সামনে পৌঁছোন। কিন্তু হয়তো তিনি ভুলে গিয়েছিলেন, সোমবার লালকেল্লা বন্ধ থাকে। ফলে সেখানে তেমন ভিড় ছিল না। এর পরেই হয়তো উমর সিগন্যালে গাড়ি নিয়ে গিয়ে বিস্ফোরণ ঘটানোর সিদ্ধান্ত নেন।

শ্রীনগর থেকে কিছু দিন আগে জইশ জঙ্গিদের সমর্থনে পোস্টার সাঁটতে গিয়ে গ্রেফতার হয়েছিলেন কাশ্মীরি চিকিৎসক আদিল আহমেদ রাথর। তাঁকে জেরা করে আরও কয়েক জনকে গ্রেফতার করা হয়। বিস্ফোরক পদার্থ উদ্ধারের অভিযানও হয়েছে ওই চিকিৎসকের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে। কাশ্মীর, হরিয়ানা এবং উত্তরপ্রদেশ থেকে মোট ২৯০০ কেজি বিস্ফোরক পদার্শ এবং বেশ কিছু অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করেছিল পুলিশ। বিস্ফোরক ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য কাশ্মীরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। শুক্রবার রাতে শ্রীনগরের নওগাম থানায় বাজেয়াপ্ত করে রাখা সেই অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে মৃত্যু হয়েছে পুলিশ ও ফরেন্সিক আধিকারিক-সহ ন’জনের।

Delhi Blast Red Fort Red Fort Explosion Ammonium Nitrate
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy