বন্ধ ফ্ল্যাট থেকে এক যুবতীর দেহ উদ্ধারকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়াল মধ্যপ্রদেশের ভোপালে। ঘরের দরজা খুলতেই বার হয় দুর্গন্ধ। পুলিশ গিয়ে কম্বলে মোড়া যুবতীর পচাগলা দেহ ফ্ল্যাট থেকে বার করে। এই ঘটনায় পুলিশ ওই যুবতীর একত্রবাসের সঙ্গীকে (লিভ-ইন পার্টনার) গ্রেফতার করেছে। জেরায় খুনের কথা স্বীকার করেছেন অভিযুক্ত। কেন খুন করলেন, তা-ও পুলিশকে জানিয়েছেন তিনি।
ভোপালের গায়ত্রীনগরের একটি ভাড়া ফ্ল্যাটে একত্রবাসে থাকতেন সচিন রাজপুত এবং ঋতিকা সেন। সোমবার সেই ফ্ল্যাট থেকেই ঋতিকার পচাগলা দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, সচিন বেকার ছিলেন, ঋতিকা একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন। সচিনের সন্দেহ ছিল, ঋতিকা গোপনে অন্য কোনও সম্পর্কে জড়িয়েছেন। গত ২৭ জুন সেই সন্দেহের বশে ঋতিকার সঙ্গে অশান্তি শুরু করেন সচিন। অভিযোগ, অশান্তির মাঝে ওই যুবতীকে শ্বাসরোধ করে খুন করেন অভিযুক্ত। তার পরে তাঁর দেহ একটি কম্বলে মুড়ে ঘরের মধ্যেই রেখে দেন। শুধু তা-ই নয়, দুই রাত ওই ভাবেই ছিলেন।
পুলিশের অনুমান, খুন করার পর দু’দিন ধরে টানা মদ্যপান করেন সচিন। হুঁশেই ছিলেন না! রবিবার তিনি তাঁর এক বন্ধু অনুজকে জানান পুরো বিষয়টি। ঋতিকাকে খুন করার বিষয়টি প্রথমে বিশ্বাস করেননি অনুজ। ভেবেছিলেন মজা করছেন তাঁর বন্ধু। কিন্তু পরের দিন আবার একই কথা বার বার বলায় সন্দেহ হয় অনুজের। সোমবার বিকেলে তিনি পুলিশকে ফোন করে পুরো বিষয়টা জানান।
অনুজের থেকে খবর পেয়ে গায়ত্রীনগরের ওই ফ্ল্যাটে উপস্থিত হয় পুলিশ। উদ্ধার হয় কম্বলে মোড়া ঋতিকার দেহ। ঠিক যেমন সচিন তাঁর বন্ধুর কাছে বর্ণনা দিয়েছিলেন, তেমন অবস্থাতেই ঋতিকার দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন:
পুলিশ জানিয়েছে, ঋতিকা এবং সচিন সাড়ে তিন বছর ধরে একত্রবাসে ছিলেন। তদন্তকারী অফিসার শিল্পা কৌরব জানান, সচিন বিবাহিত, তাঁর দুই সন্তানও রয়েছে। তার পরেও ঋতিকার সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে ছিলেন। গত শুক্রবার দু’জনের মধ্যে ঝামেলা হয়। সেই ঝামেলার সময়ই ঋতিকাকে শ্বাসরোধ করে খুন করেন সচিন। তার পরে দেহ ঘরের মধ্যেই ফেলে রেখে দেন। সচিনের দাবি অনুযায়ী, ওই অবস্থায় মৃত প্রেমিকাকে জড়িয়ে ধরে দুই রাত ওই ঘরে ঘুমিয়েছেন সচিন। পরে মদের ঘোরে বন্ধুকে সব কথা জানান। প্রথমে তাঁর বন্ধু বিশ্বাস না করলেও পরে পুলিশকে খবর দেন।
পুলিশ সূত্রে আরও খবর, সচিন বিদিশার সিরোঞ্জ এলাকার বাসিন্দা। তবে গত ন’মাস ধরে গায়ত্রীনগরে ঋতিকার সঙ্গেই থাকতেন। কাজকর্ম কিছু করতেন না। ঋতিকার উপর সন্দেহ করতেন। পুলিশ সচিনকে হেফাজতে নিয়ে আরও তথ্য অনুসন্ধান করতে চায় বলে আদালতে জানিয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরেই খুনের কারণ আরও স্পষ্ট হবে বলে দাবি পুলিশের।