প্রেমিকের সঙ্গে ঘর বাঁধার স্বপ্ন দেখে স্বামীকে ছেড়ে এসেছিলেন। বেশ কিছু দিন একত্রবাসে থাকার পরে সেই প্রেমিকের হাতেই খুন হলেন যুবতী! পুলিশ সূত্রে খবর, সম্প্রতি বাড়ির পছন্দ করা একটি মেয়েকে বিয়ে করতে রাজি হয়ে গিয়েছিলেন ‘প্রেমিক’। ‘প্রেমিকা’কে তিনি প্রস্তাব দেন, দু’জনকে নিয়েই থাকতে চান। এমন অদ্ভূত আবদার মানতে পারেননি যুবতী। সেই জন্য পানীয়ে বিষ মিশিয়ে তাঁকে খুন করেছেন উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা জগদীশ রায়কুয়ার। পুলিশের হাতে ধরা পড়ে ধৃতের দাবি, প্রেমিকা মরতে চেয়েছিলেন। তাই তাঁকে মুক্তি দিয়েছেন!
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতার নাম রানি। পরকীয়ায় জড়িয়ে স্বামীকে ছেড়ে এসেছিলেন ওই যুবতী। উত্তরপ্রদেশের ললিতপুরে জগদীশের সঙ্গে একটি ভাড়াবাড়িতে উঠেছিলেন যুবতী। কিন্তু গত বুধবার ললিতপুরে নদীর চর থেকে রানির দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তদন্তে নেমে গ্রেফতার করা হয়েছে প্রেমিক জগদীশকে। যদিও পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পরে কৃতকর্মের জন্য কোনও আক্ষেপ করেননি ওই যুবক। পুলিশি জেরায় তিনি জানিয়েছেন, প্রেমিকাকে খুন করার জন্য গুগ্ল করেছিলেন। দীর্ঘ ‘গবেষণা’ করে পানীয়ে বিষ মিশিয়ে খুনের পরিকল্পনাই তাঁর মনে ধরেছিল। খুনের পরে রানিকে নদীর চরে পুঁতে দিয়ে গ্রামে পালানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তার আগেই ধরা পড়া গিয়েছেন।
পুলিশকে ধৃত জগদীশ জানিয়েছেন, রানির সঙ্গে তাঁর অনেক দিনের সম্পর্ক। আবার সম্প্রতি বাড়ি থেকে তাঁর বিয়ের জন্য একটা সম্বন্ধ করা হয়েছিল। তিনি ‘হ্যাঁ’ বলে দেন বাড়িতে। এই কথা জানার পরে ভেঙে পড়েন প্রেমিকা। তখন তিনি রানিকে বলেন, দু’জনের সঙ্গেই থাকতে চান। এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন প্রেমিকা। প্রেমিককে ছেড়ে তিনি চলে যান।
কিন্তু কয়েক দিন পরে জগদীশ জানতে পারেন মধ্যপ্রদেশের অশোকনগরের এক যুবকের সঙ্গে প্রেম করছেন রানি। এটা তিনি মানতে পারেননি বলে পুলিশকে জানিয়েছেন। তাঁর স্বীকারোক্তি, প্রেমিকাকে খুন করার জন্য গুগ্ল করেছেন। ইউটিউবে বিভিন্ন রকম ভিডিয়ো দেখেছেন। তার পর খুনের ছক কষে এক দিন দেখা করতে চান।
আরও পড়ুন:
গত মঙ্গলবার রানির সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং তাঁকে শেষ বারের মতো দেখা করতে বলেছিলেন জগদীশ। ওই যুবতী রাজি হন। গত মঙ্গলবার দু’জনে খাওয়া-দাওয়া করেন। সেই সময় প্রেমিকার পানীয়ে বিষ মিশিয়ে দেন প্রেমিক। ওই পানীয় পান করার কিছু ক্ষণ পরেই মারা যান রানি। তখন তাঁদ দেহ নিয়ে গিয়ে নদীর চরে পুঁতে দিয়ে আসেন জগদীশ।
পরের দিন অর্থাৎ, গত বুধবার স্থানীয় মৎস্যজীবীরা একটি মহিলার দেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দিয়েছিলেন। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, যুবতীর দেহে পচন ধরেছিল। তবে মৃতার হাতের ট্যাটু দেখে অনেক চেষ্টার পরে তাঁকে চিহ্নিত করেন তাঁরা। রানির এক হাতে লেখা ছিল ‘আর-জগদীশ।’ তা-ই দেখে খোঁজখবর করে গ্রেফতার করা হয় জগদীশকে। ধৃতকে হাজির করানো হচ্ছে আদালতে। তবে খুনের কথা স্বীকার করে নিলেও অভিযুক্তের কোনও অনুশোচনা নেই। এক তদন্তকারীর কথায়, ‘‘ধৃত বলেছেন, ‘‘ও (রানি) মরতে চেয়েছিল। তাই ওকে খুন করেছি।’’