বাবা সিদ্দিকি। —ফাইল চিত্র।
মহারাষ্ট্রের প্রবীণ নেতা বাবা সিদ্দিকির খুনের ঘটনায় রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি জোটের বিরুদ্ধে অস্ত্র পেয়ে গেল কংগ্রেস তথা বিরোধী শিবির। এই খুনের ঘটনার পরে রাহুল গান্ধী, শরদ পওয়ার, উদ্ধব ঠাকরে আজ এক সুরে মহারাষ্ট্রের আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
বাবা সিদ্দিকি মহারাষ্ট্রের অন্যতম উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত পওয়ারের এনসিপি গোষ্ঠীর নেতা ছিলেন। মুম্বই শহরে তাঁর খুনের ঘটনার পরে আজ কংগ্রেস তথা বিরোধী শিবির মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্দে, রাজ্যের আর এক উপমুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা দেবেন্দ্র ফডণবীসের পদত্যাগ দাবি করেছে।
পশ্চিম বান্দ্রার প্রাক্তন বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী বাবা সিদ্দিকি দীর্ঘদিন কংগ্রেসে ছিলেন। চলতি বছরের গোড়ায় তিনি অজিত পওয়ারের এনসিপি-তে যোগ দেন। তাঁর ছেলে জিশান সিদ্দিকি কংগ্রেসের বিধায়ক। শনিবার রাতে জিশানের দফতরের বাইরে বাবা সিদ্দিকি আততায়ীদের গুলিতে নিহত হন। অজিত পওয়ার এই ঘটনায় নিয়ে রাজনীতি না করার অনুরোধ করলেও মহারাষ্ট্রের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই সুযোগ হাতছাড়া করতে রাজি হয়নি বিরোধীরা। লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী এই প্রসঙ্গে মন্তব্য করেছেন যে, “এই ভয়ঙ্কর ঘটনায় স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, মহারাষ্ট্রে আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থা পুরোপুরিভেঙে পড়েছে।”
সামনেই মহারাষ্ট্রের বিধানসভা নির্বাচন। কয়েকদিনের মধ্যেই ভোট ঘোষণা হতে পারে। হরিয়ানার ভোটের হার থেকে শিক্ষা নিয়ে দশেরার ছুটি কাটতেই সোমবার মহারাষ্ট্রের কংগ্রেস নেতাদের দিল্লিতে ডেকে বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রাহুল। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি নানা পাটোলে থেকে পৃথ্বীরাজ চহ্বাণ, বাবাসাহেব থোরাট, বর্ষা গায়কোয়াঢ় ও রাজ্যের পর্যবেক্ষক রমেশ চেন্নিথালার সঙ্গে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে রাহুলবৈঠক করবেন।
মহারাষ্ট্রে বিরোধীদের এমভিএ জোটের অন্য দুই শরিক নেতা উদ্ধব ঠাকরে ও শরদ পওয়ারও বাবা সিদ্দিকির খুন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। পওয়ারের বক্তব্য, শাসক জোটের নেতাদের এই খুনের দায় নিয়ে পদত্যাগ করতে হবে। মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব প্রশ্ন তুলেছেন, বাবা সিদ্দিকিকে ওয়াই-ক্যাটেগরির নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছিল। তার পরেও কি ভাবে তাঁকে খুন করা হল? রাজ্য পুলিশ-প্রশাসনের গোয়েন্দা ব্যবস্থা কোথায় গেল?
বাবা সিদ্দিকি শুধু রাজনীতিক ছিলেন, তা নয়। সব দলের নেতাদের মধ্যে, বিশেষ করে বলিউডের তারকাদের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। সেই তালিকায় তিন খান— সলমন, শাহরুখ ও আমিরও ছিলেন। বাবার খুনের ঘটনায় বিধানসভা ভোটের মুখে শাসক জোটের তিন দল, একনাথ শিন্দের শিবসেনা, অজিত পওয়ারের এনসিপি ও বিজেপিও চাপে পড়ে গিয়েছে।
বিরোধীদের প্রশ্নের মুখে বিজেপি নেতারা যুক্তি দিয়েছেন যে, ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে একাধিক সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত পওয়ারের বক্তব্য, “আমার দলের নেতা ও আমাদের বন্ধুর মৃত্যুতে আমরা সবাই শোকাহত। বিরোধীদের এ নিয়ে রাজনীতি করা উচিত নয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy