অমৃতসর বিমানবন্দরে নামলেন আমেরিকায় অবৈধবাসী ভারতীয়েরা। ছবি: ভিডিয়ো থেকে।
১০৪ জন অবৈধবাসী ভারতীয়কে নিয়ে অমৃতসরে নামল মার্কিন সেনার বিমান। মঙ্গলবার টেক্সাস থেকে উড়েছিল বিমানটি। কোনও রকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয়, তাই আগেই সতর্ক করা হয় পঞ্জাব পুলিশকে। সেই মতো আঁটসাঁট নিরাপত্তা ছিল অমৃতসর বিমানবন্দরে। সূত্রের খবর, প্রথম দফায় এই ১০৪ জনকে পাঠানো হল ভারতে। এর পরে আমেরিকায় থাকা আরও অবৈধবাসী ভারতীয়দের ক্রমে ক্রমে পাঠানো হবে। আগে যদিও একটি রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল, ২০০ জন অবৈধবাসী ভারতীয় মার্কিন সেনার বিমানে উঠেছেন। শেষ পর্যন্ত অমৃতসর বিমানবন্দরে নামেন ১০৪ জন।
একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম একটি সূত্রকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, বিমানে সওয়ার প্রত্যেকের পরিচয় খতিয়ে দেখা হয়েছে। এর থেকে নয়াদিল্লির সক্রিয়তাও স্পষ্ট। বুধবার দুপুর ১টা ৫৯ মিনিট নাগাদ অমৃতসরের শ্রীগুরু রামদাসজি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামে মার্কিন সেনার বিমানটি। সেখানে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ এবং প্রশাসনের কর্তারা। নয়াদিল্লিতে মার্কিন দূতাবাসের এক প্রতিনিধিও উপস্থিত ছিলেন বিমানবন্দরে।
একটি সূত্র বলছে, এই অবৈধবাসী ভারতীয়দের বেশির ভাগই ধরা পড়েছেন মেক্সিকো-আমেরিকা সীমান্তে। তবে ভারতে ফেরার পরে তাঁদের গ্রেফতার করা হবে না। কারণ তাঁদের বিরুদ্ধে এ দেশের আইন লঙ্ঘন করার কোনও অভিযোগ নেই। একটি সূত্র বলছে, এই অবৈধবাসীরা আইনি পথেই ভারত ছেড়েছিলেন। পরে বেআইনি ভাবে আমেরিকায় প্রবেশ করতে গিয়ে ধরা পড়েছেন। তাই তাঁদের এ দেশে গ্রেফতারের সম্ভাবনা নেই। একটি সূত্র বলছে, পাসপোর্ট না থাকলে এই অবৈধবাসী ভারতীয়দের আঙুলের ছাপ দেখে শনাক্ত করা হবে।
পঞ্জাব পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল (ডিজিপি) গৌরব যাদব মঙ্গলবার জানিয়েছিলেন, রাজ্য সরকার ওই অবৈধবাসীদের বিমানবন্দরে গ্রহণ করবে। সেখানে তাঁদের সাহায্যের জন্য একটি কাউন্টারও খোলা হবে। এই অবৈধবাসী ভারতীয়দের ফেরানো নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন পঞ্জাবের প্রবাসী ভারতীয় বিষয়ক মন্ত্রী কুলদীপ সিংহ ঢালিওয়াল। পরের সপ্তাহে এই নিয়ে তিনি বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে কথা বলবেন বলেও জানিয়েছেন। কুলদীপের দাবি, আমেরিকা সরকারের এই অবৈধবাসীদের বৈধ নাগরিকত্ব দেওয়া উচিত ছিল। কারণ ওই দেশের অর্থনীতিতে তাঁদের অবদান রয়েছে। তাঁর আরও দাবি, অনেক ভারতীয়ই আমেরিকায় কাজ করার বৈধ অনুমতি (ওয়ার্কিং ভিসা) নিয়ে প্রবেশ করেছিলেন। পরে সেই ভিসার মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ায় অবৈধবাসীতে পরিণত হয়েছেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পরই সে দেশ থেকে অবৈধ অভিবাসীদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে উদ্যোগী হন। এমন অভিবাসীদের চিহ্নিত করে ধরপাকড়ও শুরু করে আমেরিকার প্রশাসন। ইতিমধ্যে আমেরিকায় বসবাসকারী বেশ কয়েকটি দেশের অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠাতে শুরু করে আমেরিকা। তার মধ্যে ভারতও রয়েছে। মঙ্গলবার অবৈধ অভিবাসীদের ভারতে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করে হোয়াইট হাউস।
উল্লেখ্য, ট্রাম্পের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে আমেরিকায় গিয়ে অবৈধ অভিবাসন প্রসঙ্গে দিল্লির অবস্থান স্পষ্ট করেছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। আমেরিকায় কোনও অবৈধ ভারতীয় অভিবাসী রয়েছেন কি না, তা নিয়ে মন্তব্য করেননি বিদেশমন্ত্রী। সম্প্রতি ট্রাম্পের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে জয়শঙ্কর বলেন, “অভিবাসনের ক্ষেত্রে আমাদের একটি নীতিগত অবস্থান রয়েছে, যা প্রতিটি দেশের জন্যই প্রযোজ্য। আমরা বৈধ অভিবাসন সব সময় সমর্থন করি।’’
এই আবহের মধ্যেই গত ২৭ জানুয়ারি ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনে কথা হয় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। পরে আমেরিকার সংবাদমাধ্যমে ট্রাম্প জানান, সম্ভবত ফেব্রুয়ারিতেই তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy