নাগরিকত্ব আইন-বিরোধী অশান্তির ক্ষতিপূরণ হিসেবে বুলন্দশহরের মুসলিম সমাজের বিশিষ্ট নাগরিকেরা জেলা প্রশাসনকে ৬ লক্ষেরও বেশি টাকা তুলে দিয়েছেন বলে ভিডিয়ো এবং প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানাল উত্তরপ্রদেশ সরকার। হিংসা হয়েছিল লাগোয়া মুজফ্ফরনগরেও। তার জন্য ওই জেলার মুসলিম ধর্মগুরুরা জেলা প্রশাসনের কাছে দুঃখপ্রকাশ করেছেন বলে প্রচার করেছে রাজ্য সরকার।
ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, ৬ লক্ষ ২৭ হাজার টাকার ডিমান্ড ড্রাফ্ট সরকারি অফিসারদের হাতে তুলে দিচ্ছেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নাগরিকেরা। গত শুক্রবার বুলন্দশহরে সরকারি একটি গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ভাঙচুর হয় বহু গাড়ি। নিজেকে কাউন্সিলর বলে পরিচয় দিয়ে হাজি আক্রম আলি নামে এক ব্যক্তি বলেন, ‘‘সমগ্র সম্প্রদায় এক হয়ে টাকা তুলেছে। সেই টাকাই প্রতীকী হিসেবে সরকারের হাতে তুলে দেওয়া হল।’’
বিরোধীদের যদিও প্রশ্ন, ২০১৮ সালে এই বুলন্দশহরেই গোরক্ষকদের হাতে খুন হন ইনস্পেক্টর সুবোধকুমার সিংহ। জ্বালানো হয় থানা। সেই ঘটনায় কি ক্ষতিপূরণ আদায় করা হয়েছিল? বরং প্রধান অভিযুক্ত বজরং দলের সদস্য তো এখনও জামিন মুক্ত।
আরও পড়ুন: বিদেশি খুঁজতে ই-ট্রাইবুনালের সিদ্ধান্ত মোদী সরকারের
নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সব চেয়ে বেশি অশান্তি হয়েছে উত্তরপ্রদেশেই। প্রাণ গিয়েছে ১৯ জনের। আজ যোগী-রাজ্য জুড়ে ছিল কড়া নিরাপত্তা। অশান্তি রুখতে ৭৫টি জেলার মধ্যে ২১টিতে ইন্টারনেট বন্ধ ছিল। ওড়ানো হয়েছিল নজরদার-ড্রোন। নামানো হয়েছিল আধাসেনা।
আগেই ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল বিজনৌর, বুলন্দশহর, মুজফ্ফরনগর, মেরঠ, আগরা, সম্ভল, ফিরোজাবাদ, আলিগড়, রামপুর, গাজিয়াবাদ ও কানপুরে। উত্তরপ্রদেশের ডিজিপি ও পি সিংহ বলেন, ‘‘রাজ্যে আজ কোথাও অশান্তি হয়নি।’’ সাড়ে তিন হাজার আধাসেনা ও উত্তরপ্রদেশ প্রভিন্সিয়াল আর্মড কনস্ট্যাবুলারির ১২ হাজার জওয়ানকে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছিল। লখনউয়ে কড়াকড়ি ছিল চোখে পড়ার মতো। গোরক্ষপুরে ফ্ল্যাগ মার্চ করে পুলিশ। পুলিশের অভিযোগ, সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করে অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা চলছে। ইতিমধ্যেই সাড়ে ১৯ হাজার সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করেছে যোগীর প্রশাসন।
আজ প্রতিবাদ হয়েছে অমৃতসরে। মুম্বইয়ের আজাদ ময়দানে সিএএ ও এনপিআর-বিরোধী জমায়েত হয়। কয়েকশো পড়ুয়া ও সমাজকর্মী বিক্ষোভ দেখান। এক বিক্ষোভকারী বলেন, ‘‘সিএএ, এনআরসি, এনপিআর শুধু ধর্মীয় বিষয় নয়। এতে সবার ক্ষতি হবে। আমরা নোটবন্দির পার্ট-২ দেখতে চাই না।’’ অগস্ট ক্রান্তি ময়দানে সিএএ-র সমর্থনে সভা করেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীস।