Advertisement
E-Paper

ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার বেগে আফ্রিকা থেকে দিল্লির আকাশে উড়ে এল আগ্নেয়গিরির বিষাক্ত ছাই! সতর্কতা বিমান চলাচলেও

আফ্রিকা থেকে লোহিত সাগর পেরিয়ে আগ্নেয়গিরির ছাই চলে এসেছে এশিয়ায়। রাত ১১টা নাগাদ উত্তর পশ্চিম দিক দিয়ে ওই ছাইমেঘ বাতাসের সঙ্গে মিশে ভারতের আকাশে ঢুকে যায়।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২৫ ১০:৫০
আফ্রিকার আগ্নেয়গিরির থেকে লোহিত সাগর পেরিয়ে ছাই চলে আসছে এশিয়ায়। উপগ্রহচিত্রে ধরা পড়েছে সেই দৃশ্য।

আফ্রিকার আগ্নেয়গিরির থেকে লোহিত সাগর পেরিয়ে ছাই চলে আসছে এশিয়ায়। উপগ্রহচিত্রে ধরা পড়েছে সেই দৃশ্য। ছবি: এক্স থেকে নেওয়া।

গত ১২০০০ বছর ধরে ঘুমিয়েই ছিল। আচমকাই জেগে উঠেছে পূর্ব আফ্রিকার ঘুমিয়ে থাকা আগ্নেয়গিরি। ইথিয়োপিয়ার হায়েলি গুব্বি আগ্নেয়গিরি থেকে অগ্নুৎপাত শুরু হয়েছে রবিবার থেকে। সেই ছাইয়ের কুণ্ডলী মেঘের সঙ্গে মিশে লোহিত সাগর পেরিয়ে উড়ে আসছে এশিয়া মহাদেশে। সালফার ডাইঅক্সাইডমিশ্রিত ঘন ছাইমেঘ (অ্যাশ ক্লাউড) প্রায় ১২০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা‌ বেগে উড়তে উড়তে প্রবেশ করেছে ভারতেও। এমনকি দিল্লির আকাশেও পৌঁছে গিয়েছে। তার প্রভাব পড়েছে বিমান পরিষেবাতে। উড়ান সংস্থাগুলির জন্য ইতিমধ্যে সতর্কবার্তা জারি করেছেন ভারতের অসামরিক বিমান পরিবহন নিয়ামক কর্তৃপক্ষ ডিজিসিএ।

রবিবার সকালে (স্থানীয় সময়ে) আচমকা জেগে ওঠে ইথিয়োপিয়ার এই আগ্নেয়গিরি। এর আগে গত ১২০০০ বছরে হায়ালি গুব্বিতে কোনও অগ্নুৎপাতের প্রমাণ নেই। ওই লাভার ছাই দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে সোমবার রাতে ভারতে পৌঁছে যায়। রাত ১১টা নাগাদ উত্তর পশ্চিম সীমান্ত দিয়ে ভারতের আকাশে ঢুকে যায় ওই ছাইমেঘ। প্রাথমিক ভাবে জানা যাচ্ছে, রাজস্থানের জয়সলমের-যোধপুর অঞ্চল দিয়ে এই মেঘ প্রবেশ করেছে ভারতে। তার পরে রাজস্থান, হরিয়ানা এবং দিল্লির আকাশে বিস্তীর্ণ অঞ্চলে এই ‘বিষ-মেঘ’ ছড়িয়ে পড়ে। মেঘ ছড়িয়েছে গুজরাতের কিছু অংশের আকাশেও।

তবে আগ্নেয়গিরি থেকে নির্গত লাভার ছাইমিশ্রিত মেঘ দেশবাসীর স্বাস্থ্যের উপর কোনও বিরূপ প্রভাব ফেলবে না বলেই আশ্বস্ত করছেন বিশেষজ্ঞেরা। কারণ, এই ছাইমেঘ উড়ছে ভূপৃষ্ঠ থেকে অনেক উঁচুতে। প্রায় ২৫০০০-৪৫০০০ ফুট উচ্চতায় উড়ছে এগুলি। ফলে মানুষের স্বাস্থ্যের উপর এই মেঘ প্রভাব ফেলার সম্ভাবনা খুবই কম বলে মনে করছেন তাঁরা। যদিও দিল্লিতে বাতাসের গুণমান আগে থেকেই অত্যন্ত খারাপ পর্যায়ে রয়েছে। সেই বিষয়েও সতর্ক করে দিচ্ছেন‌ বিশেষজ্ঞেরা।

জনস্বাস্থ্যে এই প্রতিকূল প্রভাবের সম্ভাবনা কম থাকলেও সোমবার রাত থেকে এর প্রভাব পড়েছে উড়ান পরিষেবায়। ছাইমেঘের জেরে কেরলের কন্নুর থেকে আবুধাবিগামী ইন্ডিগোর ৬ই১৪৩৩ বিমানের যাত্রাপথ বদলে দিতে হয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গুজরাতের অহমেদাবাদ বিমানবন্দরে অবতরণ করানো হয়েছে সেটি। ইন্ডিগো পরে জানায়, বিমানটি অহমেদাবাদে নিরাপদেই অবতরণ করেছে। যাত্রীদের কন্নুরে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ারও ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রভাবিত হয়েছে আরও বেশ কিছু উড়ান‌ পরিষেবা। কোচি থেকে অন্তত দু’টি আন্তর্জাতিক বিমান বাতিল হয়েছে ছাইমেঘের জেরে।

কেএলএম রয়্যাল‌ ডাচ উড়ান‌ সংস্থারও বেশ কিছু বিমান পরিষেবা বিঘ্নিত হয়েছে। ব্রিটেনের আমস্টারডাম থেকে দিল্লিমুখী কেএল ৮৭১ এবং বিপরীতমুখী কেএল ৮৭২— দু’টিই উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বাতিল করা হয়েছে। এয়ার ইন্ডিয়া, স্পাইসজেট, আকাশ এয়ারের মতো উড়ান সংস্থাগুলিও পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে। আকাশ উড়ান বিবৃতিতে জানিয়েছে, প্রভাবিত এলাকাগুলিতে বিমান পরিষেবা বিঘ্নিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। উড়ান সংস্থাগুলিকে সতর্ক করে ‌দিয়েছে ডিজিসিএ-ও। আগ্নেয়গিরির ছাইমেঘ প্রভাবিত এলাকা এড়িয়ে চলার জন্য বলা হয়েছে সব ভারতীয় উড়ান সংস্থাকে। প্রয়োজন অনুসারে যাত্রাপথ বদল এবং বিকল্প পরিকল্পনারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

Ethiopia Volcano Volcanic Eruption
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy