মণিপুরের দুই পড়ুয়াকে অপহরণ এবং খুনের ঘটনা নিয়ে শোকপ্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ওই রাজ্যে গত ছ’মাস ধরে চলা হিংসার জন্য নিশানা করলেন ‘ডাবল ইঞ্জিন সরকার’কে।
বুধবার এক্স হ্যান্ডলে মমতা লেখেন, ‘‘মণিপুরে দুই নিহত তরুণের শোকাহত পরিবারের প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা। তাঁদের মায়েদের কান্নায় প্রতিফলিত বেদনা এবং যন্ত্রণা আমাকে গভীর ভাবে প্রভাবিত করেছে। রাজ্য (মণিপুর) সরকার দায়িত্ব নিচ্ছে না। তাদের জবাবদিহি করাতে ব্যর্থ কেন্দ্রীয় সরকার। এই পরিস্থিতি হতাশাজনক।’’
সেই সঙ্গে মমতা লিখেছেন, ‘‘ইম্ফলের শান্তিপূর্ণ ছাত্র বিক্ষোভের বিরুদ্ধে বলপ্রয়োগও গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা ন্যায়বিচার এবং ঐক্যের দাবিতে মণিপুরের সঙ্গে আছি। আসুন আমরা মণিপুরের চেতনার পুনর্নির্মাণ এবং পুনরুজ্জীবনে সচেষ্ট হই। একসঙ্গে মিলে আমরা একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ তৈরি করতে পারি।’’
আরও পড়ুন:
মেইতেই জনগোষ্ঠীর দুই পড়ুয়ার অপহরণ এবং নৃশংস খুনের ঘটনায় চলতি সপ্তাহে নতুন করে অশান্ত হয়েছে মণিপুর। গুজব ঠেকাতে মঙ্গলবার থেকে সে রাজ্যের বিজেপি সরকার ইন্টারনেট পরিষেবার উপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। বুধবার ঘোষণা করা হয়েছে, কুকি অধ্যুষিত পাহাড়ি অঞ্চলে আগামী ছ’মাসের জন্য বলবৎ থাকবে ‘সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন’ (‘আর্মড ফোর্সেস স্পেশাল পাওয়ার অ্যাক্ট’ বা আফস্পা)। এই পরিস্থিতিতে বুধবার কেন্দ্রীয় বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেন, ‘‘বাইরে থেকে আসা কিছু ব্যক্তি মণিপুরে হিংসা ছড়াচ্ছে।’’
আরও পড়ুন:
সূত্রের খবর, গত ৬ জুলাই থেকে ওই দুই পড়ুয়া নিখোঁজ ছিলেন। সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ছবিতে দেখা গিয়েছে, দুই সশস্ত্র আততায়ীর সঙ্গে বসে রয়েছে দুই পড়ুয়া। অন্য একটি ছবিতে দেখা গিয়েছে, তাদের দেহ পড়ে রয়েছে। এনডিটিভি সূত্রে খবর, ওই দুই পড়ুয়ার দেহ এখনও উদ্ধার করা হয়নি। ওই দুই পড়ুয়াকে শেষ বার দেখা গিয়েছিল বিষ্ণুপুর জেলায়। অভিযোগ, মেইতেই জনগোষ্ঠীর ওই দুই পড়ুয়াকে অপহরণ করে খুন করেছে কুকিরা।
দুই পড়ুয়াকে খুনের ঘটনা ঘিরে আবার অশান্ত হয়েছে মণিপুর। এই ঘটনায় বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন পড়ুয়ারা। পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষের ঘটনায় ইম্ফলে প্রায় ৫০ জনেরও বেশি জখম হয়েছেন বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে বুধবার দুই পড়ুয়ার খুনের ঘটনার তদন্ত করতে সিবিআইয়ের স্পেশাল ডিরেক্টর অজয় ভাটনগরের নেতৃত্বাধীন বিশেষ তদন্তকারী দল ইম্ফলে পৌঁছেছে।