Advertisement
E-Paper

বিরোধীদের কাছে ‘ঐক্য’ চাইলেন মোদী! নীতি আয়োগ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে কী কী চাইলেন বিরোধী মুখ্যমন্ত্রীরা

শনিবারের নীতি আয়োগের বৈঠকে উঠে এসেছে নানা মুহূর্তের ছবি। মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে খোশমেজাজে দেখা গিয়েছে নরেন্দ্র মোদীকে। বিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা তো বটেই, বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অবিজেপি শাসিত রাজ্যের বেশ কয়েক জন মুখ্যমন্ত্রীও।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০২৫ ২০:৪০
What are the demands of non-BJP Chief Ministers in the meeting led by the Prime Minister

শনিবার নীতি আয়োগ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে অবিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা। ছবি: পিটিআই।

নীতি আয়োগের বৈঠকে সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে কেন্দ্র-রাজ্যের ‘ঐক্যের’ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে পাল্টা বিরোধী দলের মুখ্যমন্ত্রীরা বৈঠকে তাঁর কাছে ‘কেন্দ্রীয় বঞ্চনা’ থেকে ‘তহবিলবণ্টনের বৈষম্য’-এর কথা তুলে ধরেন। কেউ জলবণ্টন নিয়ে, তো কেউ আবার কেন্দ্রীয় তহবিল নিয়ে মুখ খুলেছেন। নীতি আয়োগের বৈঠকে অবিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের নানা অভিযোগ শোনেন মোদী। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী প্রথম থেকেই কেন্দ্র-রাজ্য কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করার কথা বলেন। সেই বৈঠকেই বিরোধী দলের মুখ্যমন্ত্রীরা কেন্দ্র-রাজ্যের মধ্যে অর্থবণ্টন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। কেন্দ্রীয় তহবিল বৃদ্ধির বিষয়ে যেমন জোর দিয়েছেন বিরোধী দলের মুখ্যমন্ত্রীরা, তেমনই কর বাবদ প্রাপ্ত অর্থে রাজ্যের বরাদ্দ নিয়েও কথা হয়!

শনিবারের নীতি আয়োগের বৈঠকে উঠে এসেছে নানা ছবি। মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে খোশমেজাজে দেখা গিয়েছে মোদীকে। বিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা তো বটেই, বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অবিজেপি শাসিত রাজ্যের বেশ কয়েক জন মুখ্যমন্ত্রীও। সেই তালিকায় ছিলেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন, ঝাড়খণ্ডের হেমন্ত সোরেন, পঞ্জাবের ভগবত মান, তেলঙ্গানার রেবন্ত রেড্ডিরা।

বৈঠকে মোদী জোর দেন ‘২০৪৭-এ বিকশিত ভারতের জন্য বিকশিত রাজ্য’ গড়ে তোলার উপর! শুধু তা-ই নয়, রাজ্যগুলির পর্যটন নিয়েও নিজের মত প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁকে এ-ও বলতে শোনা যায়, ‘‘আমাদের উন্নয়নের গতি আরও বৃদ্ধি করতে হবে। যদি কেন্দ্র এবং রাজ্যগুলি একসঙ্গে ‘টিম ইন্ডিয়া’র মতো মিলেমিশে কাজ করে, তবে কোনও লক্ষ্যই অসম্ভব নয়।’’ মোদীর কথায়, ‘‘আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রত্যেক রাজ্যের উচিত অন্তত একটি পর্যটনকেন্দ্র তৈরি করা। তবে অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে, সেই সব পর্যটনকেন্দ্রে সমস্ত রকম সুযোগ-সুবিধা এবং পরিকাঠামো যেন থাকে।’’

বৈঠকে স্ট্যালিন জোর দেন রাজ্যের জন্য কেন্দ্রীয় তহবিল বৃদ্ধিতে। আবার ভগবত হরিয়ানার সঙ্গে জল ভাগাভাগিতে আপত্তির কথা তুলে ধরেন। জাতীয় নয়া শিক্ষানীতিকে কেন্দ্র করে মোদী সরকারের সঙ্গে ‘ভাষাযুদ্ধ’ শুরু হয়েছে স্ট্যালিনের। অভিযোগ, কেন্দ্র নয়া শিক্ষানীতিকে শিখণ্ডী করে হিন্দিকে চাপিয়ে দেওয়া চেষ্টা করছে। তাঁর রাজ্যে নয়া শিক্ষানীতি চালু করবেন না তিনি। তার পরে কেন্দ্র শিক্ষাখাতে তামিলনাড়ুর প্রাপ্য টাকা আটকে দিয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়িয়েছে। কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগ তুলে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে তামিলনাড়ু সরকার। সেই আবহে শনিবারের বৈঠকে স্ট্যালিন কী বলেন, সে দিকে নজর ছিল অনেকেরই। বৈঠকে ‘কেন্দ্রীয় বঞ্চনা’র প্রসঙ্গ তোলেন স্ট্যালিন। তিনি বলেন, ‘‘ভারতের মতো যুক্তরাষ্ট্রীয় গণতন্ত্রের দেশে প্রাপ্য তহবিলের জন্য লড়াই, মামলা করা আদর্শ নয়। এই সব কারণই রাজ্য এবং কেন্দ্র— উভয়ের উন্নয়নে বাধা হতে পারে।’’

শুধু তা-ই নয়, কেন্দ্র এবং রাজ্যের মধ্যে কর বিভাজন নিয়েও মুখ খুলেছেন স্ট্যালিন। এ ছাড়াও তিনি বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলিতে রাজ্যের প্রত্যাশিত খরচের তুলনায় ব্যয় বেশি হচ্ছে। ফলে তামিলনাড়ুর মতো রাজ্যগুলির ক্ষেত্রে চাপ বাড়ে। অন্য দিকে, কেন্দ্র থেকে প্রাপ্ত কর বরাদ্দও কমানো হয়েছে, যা রাজ্যের আর্থিক পরিস্থিতিতে বড় ধাক্কা।

সিন্ধুর উপনদী শতদ্রুর (সাটলুজ়) উপরে রয়েছে ভাকরা-নাঙাল বাঁধ। সেই বাঁধের জল-বণ্টন নিয়ে হরিয়ানা এবং পঞ্জাবের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। সেই বিরোধ গড়াল নীতি আয়োগের বৈঠকেও। পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবত বৈঠকে দাবি করেন, তাঁর রাজ্য চরম ঘাটতির মুখে। এক ফোঁটাও জল দেওয়ার অবস্থায় নেই পঞ্জাব। আপ নেতার দাবি, সাটলুজ়-যমুনা-লিঙ্ক খালের পরিবর্তে যমুনা-সাটলুজ়-লিঙ্ক খাল নির্মাণের কথা বিবেচনা করা উচিত!

শনিবারের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না অবিজেপি শাসিত তিন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। তাঁরা হলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, কর্নাটকের সিদ্দারামাইয়া এবং কেরলের পিনারাই বিজয়ন। গত জুলাইয়ে নীতি আয়োগের পরিচালন পরিষদের বৈঠকে যোগ দিয়েও মাঝপথে বেরিয়ে এসেছিলেন মমতা। তিনি অভিযোগ করেছিলেন, তাঁর বলার সময় মাইক বন্ধ করে দেওয়া হয়। নীতি আয়োগের বৈঠকে তাঁকে বলতে বাধা দেওয়া হয়েছে। তখনই তিনি ঘোষণা করেন, নীতি আয়োগের আর কোনও বৈঠকে যোগ দেবেন না। তবে সিদ্দারামাইয়া এবং বিজয়ন কেন বৈঠকে যাননি, তা এখনও স্পষ্ট নয়। শুধু তা-ই নয়, বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারও। তিনি শনিবার দুপুরে দিল্লি গিয়েছেন ঠিকই তবে বৈঠকে যোগ দেননি। কেন নীতীশ বৈঠকে ছিলেন না, তা জেডিইউ-র তরফে স্পষ্ট করা হয়নি। তবে সূত্রের খবর রবিবার এনডিএ-র এক বৈঠকে থাকতে পারেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী।

NITI Aayog Meet
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy