Advertisement
E-Paper

ভারত কি সত্যিই রাশিয়া থেকে তেল আমদানি স্থগিত করবে? বিকল্প হতে পারে কোন কোন দেশ? কত বেশি দাম দিতে হবে

আমেরিকা বিধিনিষেধ আরোপ করার পর থেকে রাশিয়া বিশ্ববাজারে তেলের দাম অনেক কমিয়ে দেয়। তার পর রাশিয়া থেকে ভারতের তেল আমদানি এক লাফে অনেকটা বেড়ে গিয়েছে। আমেরিকা তাতে অসন্তুষ্ট।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০২৫ ১১:০০
(বাঁ দিকে) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (ডান দিকে)। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (পিছনে)।

(বাঁ দিকে) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (ডান দিকে)। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (পিছনে)। —ফাইল চিত্র।

রাশিয়া থেকে খনিজ তেল এবং অস্ত্র আমদানির জন্য ভারতকে ‘জরিমানা’ দিতে হবে, ঘোষণা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই ভারত-রুশ বাণিজ্য নিয়ে যে তিনি অসন্তুষ্ট, তা স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছেন। আমেরিকার রোষের মুখে পড়ে কি সত্যিই রাশিয়ার কাছ থেকে সস্তায় তেল কেনা বন্ধ করে দেবে ভারত? কেন্দ্রের তরফে এখনও এ বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। তবে জল্পনা শুরু হয়েছে। শনিবার সকালে (ভারতীয় সময়) ট্রাম্পের মন্তব্য সেই জল্পনা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি শুনেছেন ভারত রাশিয়ার কাছ থেকে আর তেল কিনছে না। এটা ভাল সিদ্ধান্ত। কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতি কী বলছে?

ইউক্রেন আক্রমণ করার পর রাশিয়ার উপর বহু বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল আমেরিকা-সহ পশ্চিমি বিশ্ব। অর্থনীতি বাঁচাতে তখন রাশিয়া সস্তায় তেল বিক্রি শুরু করে। ভারতও সেই সুযোগ কাজে লাগিয়েছে। রাশিয়া থেকে প্রচুর ছাড়ে তেল কিনতে শুরু করেছে নয়াদিল্লি। গত কয়েক বছরে ০.২ শতাংশ থেকে রুশ তেল আমদানি বেড়ে হয়েছে ৩৫ শতাংশ। বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম তেল আমদানিকারক দেশ ভারত। রাশিয়ার তেলের অন্যতম বড় ক্রেতা এখন তারাই।

আমেরিকা বিধিনিষেধ আরোপ করার পর থেকে রাশিয়া বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমিয়ে দেয় ব্যারেল প্রতি ৪০ ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় সাড়ে তিন হাজার টাকা)। সেন্টার ফর রিসার্চ অন এনার্জি অ্যান্ড ক্লিন এয়ার (সিআরইএ)-র পরিসংখ্যান অনুযায়ী, তার পর থেকে রাশিয়ার তেল সবচেয়ে বেশি কিনেছে চিন (৪৭ শতাংশ) এবং ভারত (৩৮ শতাংশ)। এ ছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকেও ছয় শতাংশ রাশিয়ান তেল কেনা হয়েছে। এর ফলে সস্তায় তেল পেয়েছে ভারত। দেশের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে।

আমেরিকার চাপে পড়ে যদি সত্যিই ভারতকে রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ করে দিতে হয়, সে ক্ষেত্রে বিকল্প হতে পারে আরও চারটি দেশ। ভারতকে তখন আগের মতো পশ্চিম এশিয়ায় ফিরে যেতে হবে তেলের চাহিদা মেটাতে। ইরাক, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি ছাড়াও ভারত তেল কিনতে পারে আমেরিকার কাছ থেকে। নতুন দেশ হিসাবে তালিকায় ব্রাজ়িলকে যোগ করা যেতে পারে। তবে প্রতি ক্ষেত্রেই বর্তমানের চেয়ে অনেক বেশি খরচ করতে হবে। ইকোনমিক টাইম্‌সের রিপোর্ট বলছে, প্রতি ব্যারেলে চার থেকে পাঁচ ডলার (৩৩৬-৪৩৬ টাকা) বেশি খরচ হতে পারে।

আমেরিকার ‘জরিমানা’ হুমকির পর সংবাদ সংস্থা রয়টার্স একটি রিপোর্টে দাবি করেছিল, ভারতের চারটি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা রাশিয়া থেকে তেল কেনা স্থগিত রেখেছে। শনিবার সেই রিপোর্ট নিয়েই মন্তব্য করেন ট্রাম্প। কিন্তু শুক্রবারই বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রনধীর জয়সওয়াল এই সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করে দেন। তিনি বলেন, ‘‘বাজারে কে কী দাম নিচ্ছে এবং সার্বিক বিশ্ব পরিস্থিতির দিকে নজর রেখে আমরা আমাদের জ্বালানি চাহিদা পূরণ করে থাকি।’’ কোনও ভারতীয় সংস্থা তেল কেনা স্থগিত করেছে বলে কেন্দ্রের কাছে খবর নেই, জানান রনধীর। শনিবার সকালে সরকারি সূত্র উল্লেখ করে সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, রাশিয়ার কাছ থেকে তেল আমদানি চালিয়ে যাবে ভারতীয় সংস্থাগুলি। তেলের দাম, মান, মজুত এবং সরবরাহের উপর তাদের সিদ্ধান্ত নির্ভর করে।

কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরী এর আগে দাবি করেছিলেন, আমেরিকার হুমকিতে ভারত নত হবে না। তাঁর কথায়, ‘‘সারা বিশ্বের ১০ শতাংশ খনিজ তেল উৎপন্ন হয় রাশিয়ায়। আমরা হিসাব করে দেখেছি, তাদের বাদ দিলে তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ১৩০ ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় ১১.৩ হাজার টাকা) ছুঁয়ে ফেলত। চিন, তুরস্ক, ব্রাজ়িল, এমনকি ইউরোপও রাশিয়ার তেল কেনে। ওদের কাছ থেকে না কিনলে তেলের দাম আকাশ ছুঁয়ে ফেলবে।’’


India US Trade India Russia Trade Crude Oil Narendra Modi Vladimir Putin Donald Trump
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy