Advertisement
E-Paper

মৃতদের কেউ বাড়িতে লুকিয়ে, কেউ বন্ধুদের জোরাজুরিতে চিন্নাস্বামীতে! বয়স ১৩ থেকে ৩৩

মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া জানিয়েছিলেন, বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের বাইরে পদপিষ্ট হয়ে যাঁদের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের অধিকাংশ কমবয়সি। বৃহস্পতিবার প্রকাশ্যে এসেছে মৃত ১১ জনের সম্পূর্ণ তালিকা।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০২৫ ১৬:৫৮
Who are the eleven people lost lives in Bengaluru incident

বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে আরসিবি-র আইপিএল জয়ের উৎসবে বিপর্যয়। মৃতেরা অধিকাংশই কমবয়সি। ছবি: সংগৃহীত।

বুধবার রাতেই কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া জানিয়েছিলেন, বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের বাইরে পদপিষ্ট হয়ে যাঁদের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের অধিকাংশ কমবয়সি। বৃহস্পতিবার প্রকাশ্যে এসেছে মৃত ১১ জনের সম্পূর্ণ তালিকা। কেউ বাড়িতে মিথ্যা বলে একবার চোখের দেখা দেখতে গিয়েছিলেন প্রিয় ক্রিকেটার বিরাট কোহলিকে। কেউ আবার ক্রিকেটে অনীহা সত্ত্বেও বন্ধুদের জোরাজুরিতে বাধ্য হয়ে চিন্নাস্বামীর বাইরে জমায়েতে শামিল হয়েছিলেন। মৃতদের তালিকায় যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের প্রত্যেকের বয়স ৪০ বছরের নীচে। সবচেয়ে কমবয়সি ১৩ বছরের কিশোরী!

বেঙ্গালুরু কাণ্ডে মৃতদের তালিকায় কনিষ্ঠতম ১৩ বছরের দিব্যাংশী। ছোটবেলা থেকেই সে বিরাটের অন্ধভক্ত। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু আইপিএল জেতার পর প্রিয় ক্রিকেটারকে দেখার জন্য অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে কর্নাটকে পাড়ি দেয় দিব্যাংশী। কিন্তু চিন্নাস্বামীর বাইরে প্রবল ভিড়ে দমবন্ধ হয়ে এসেছিল তার। পড়ে গিয়ে মাথাতে চোট পায় দিব্যাংশী। আর উঠতে পারেনি।

১৯ বছর বয়সি চিন্ময়ী শেট্টির ক্রিকেটে তেমন আগ্রহ ছিল না। কোহলিকে দেখার উন্মাদনাও ছিল না। তিনি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ভরতনাট্যম শিল্পী। ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রথম বর্ষের পড়ুয়া। কিন্তু বন্ধুদের চাপে পড়ে বুধবার আরসিবি-র বিজয়োৎসবে শামিল হয়েছিলেন তিনি। প্রথমে গিয়েছিলেন বিধান সৌধে। সেখান থেকে চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের বাইরে পৌঁছেছিলেন। আর বাড়ি ফেরা হয়নি।

কর্নাটকের চিন্তামণি শহরের বাসিন্দা ২০ বছরের প্রোজ্জ্বল। গত কয়েক দিন ধরেই চাকরির সন্ধানে ঘুরছিলেন তিনি। বুধবার বাড়ি থেকে বেরোনোর আগে পরিবারের সদস্যদের জানিয়েছিলেন, বেঙ্গালুরুতে একটি চাকরির ইন্টারভিউ দিতে যাচ্ছেন। কিন্তু আদৌ সে দিন তাঁর কোনও ইন্টারভিউ ছিল না। বরং চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে কোহলিদের উৎসব দেখার পরিকল্পনা ছিল যুবকের। বাড়িতে মিথ্যা বলে বেঙ্গালুরুতে যান প্রোজ্জ্বল। সেখান থেকে আর ঘরে ফেরা হয়নি।

কর্নাটকের মাণ্ড্য জেলার বাসিন্দা ২৬ বছরের পূর্ণ চন্দ্র। মাইসুরুর একটি সংস্থায় সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে কর্মরত ছিলেন। আরসিবি এবং কোহলিভক্ত হিসাবে বিজয়োৎসবে শামিল হতে চিন্নাস্বামীতে গিয়েছিলেন তিনি। ভিড়ের ধাক্কায় পড়ে যান। আর উঠতে পারেননি।

১৭ বছরের শিবলিঙ্গ স্বামী সবে দশম শ্রেণির পরীক্ষা দিয়ে উঠেছিল। কোহলির অন্ধভক্ত ছিল সে। কিন্তু চিন্নাস্বামীতে বিজয়োৎসব দেখতে যাচ্ছে বললে বাড়িতে অশান্তি হবে আঁচ করেছিল। সে বাবা-মাকে জানিয়েছিল, স্কুলে দশম পরবর্তী প্রয়োজনীয় শংসাপত্র আনতে যাচ্ছে। বাড়ি থেকে বেরিয়ে স্কুলে না-গিয়ে স্টেডিয়ামের দিকে যায় সে। সেখান থেকে আর ফেরা হয়নি।

এ ছাড়াও বেঙ্গালুরুতে মৃতদের তালিকায় আছে ২০ বছরের ভূমিক, ১৯ বছরের সাহানা, ২৭ বছরের অক্ষতা, ৩৩ বছরের মনোজ কুমার, ২০ বছরের শ্রাবণ এবং ২৯ বছরের দেবী। নিহতদের পরিবারের জন্য ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছে কর্নাটক সরকার। ইতিমধ্যে বেঙ্গালুরুর ঘটনায় ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া। কর্নাটক হাই কোর্টে শুরু হয়েছে এই সংক্রান্ত মামলার শুনানি। তদন্তের স্বার্থে আরসিবি এবং কর্নাটক ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনকে নোটিস দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে।

Bengaluru RCB Karnataka Stampede
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy