গাছের ডাল থেকে ঝুলছে মহিলার অর্ধনগ্ন দেহ!
সেই বদায়ূঁর ছায়া এ বার উত্তরপ্রদেশেরই বাহরাইচে। সপ্তাহ দুয়েক আগে বদায়ূঁর কাটরা সাদতগঞ্জ গ্রামে এ ভাবেই ধর্ষণ করার পর খুন করে আমগাছ থেকে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল দুই বোনের মৃতদেহ। তার দিন কয়েক পরে সীতাপুরেও একই ঘটনা। সে নিয়ে তোলপাড় গোটা দেশ। কড়া শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ দেশ জুড়ে। এর সঙ্গে চলে নেতামন্ত্রীদের বিতর্কিত মন্তব্য। দু’সপ্তাহও কাটল না, আজ ফের সেই চেনা ছবি।
রাজ্যে একের পর এক ধর্ষণের ঘটনায় যে দিন হস্তক্ষেপ করল ইলাহাবাদ হাইকোর্ট, সে দিনই অর্থাৎ বুধবার উত্তরপ্রদেশের মেরঠ, পিলিভিট ও বাহরাইচ থেকে মিলল নারী-নিগ্রহের খবর। এর মধ্যে বাহরাইচের ঘটনায় প্রশাসনের অস্বস্তি চরমে।
পুলিশ জানিয়েছে, বছর পঁয়তাল্লিশের মহিলা লোনিয়ানপুর গ্রামের বাসিন্দা। আজ ডাক্তার দেখাতে লখনউ যাচ্ছিলেন তিনি। মাঝপথে ছেলের ফোনে খবর পান, তিনি ঠাকুমা হয়েছেন। ছেলেই মাকে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরে আসতে বলেন। সেই মতো ফিরতি পথ ধরেন মধ্যবয়সী মহিলা। বাহরাইচে পৌঁছে ছেলেকে ফোন করে জানান, তাঁকে নিয়ে যেতে। মা-ছেলের সেই শেষ কথা।
বাহরাইচে এসে মাকে আর দেখতে পাননি ছেলে। ফোন করে দেখতে গিয়ে দুশ্চিন্তা আরওই বাড়ে। বন্ধ মোবাইল ফোন। এর পর তন্নতন্ন করে খুঁজে দেখার পর হঠাৎই এক জায়গায় পড়ে থাকতে দেখেন মায়ের চটিজোড়া। চোখে পড়ে কাছেই একটি গাছ থেকে শাড়ির ফাঁসে ঝুলছে মায়ের দেহ।
খুনের পিছনে হাত রয়েছে বলে, এফআইআরে পাঁচ জনের নাম করেছেন ওই যুবক। তাদের ৩ জনকে আজ গ্রেফতার করা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, মদ চোরাচালানকারী এক দল মাফিয়ার রাগ ছিল ওই মহিলার উপর। এক সময় ওই লোকগুলোর বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন তিনি। তারই জেরে হয়তো বদলা নিয়েছে মাফিয়ারা।
ধর্ষণের ঘটনার পাশাপাশি তা নিয়ে মন্তব্যের ঝড়ও অব্যাহত। আজ মহারাষ্ট্র বিধানসভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আর আর পাটিল বলে বসেন, সরকার যদি প্রত্যেক বাড়িতে এক জন পুলিশ নিয়োগ করে, তা হলেও নারী নিগ্রহ কমবে না। বিজ্ঞাপনে মেয়েদের অশ্লীল ছবি ব্যবহারই এর জন্য দায়ী। কিছু দিন আগে রাজ্যসভার সদস্য, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদবের কাকা রামগোপাল যাদব প্রায় একই ধরনের কথা বলেছিলেন “টিভিতে অশালীন অনুষ্ঠান এখন দিন-রাত্তির দেখানো হয়। ধর্ষণের মতো অপরাধ বাড়ছে এই কারণেই।” অখিলেশের পাশে দাঁড়িয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন মধ্যপ্রদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাবুলাল গৌরও। বলেছিলেন, “এটা আসলে একটা সামাজিক অপরাধ। কখনও ঠিক, কখনও ভুল। সেটা নির্ভর করে ছেলেমেয়েদের উপর।”
পরিস্থিতি দেখে অনেকেরই দাবি, এত সমালোচনা হওয়া সত্ত্বেও মন্তব্যে রাশ টানতে রাজি নন কেউই। লোকসভায় আজ এ নিয়েই মুখ খোলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। “ধর্ষণের মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ করা বন্ধ করুন”, বলেন তিনি।
বদায়ূঁর ঘটনার পর এই প্রথম ধর্ষণ প্রসঙ্গে কিছু বলতে শোনা গেল প্রধানমন্ত্রীকে। কেন তিনি কিছু বলছেন না, সে নিয়েই বরং কানাঘুষো কথা শুরু হয়েছিল। আজ লোকসভায় মোদী রাজনৈতিক নেতাদের সেই চুপ থাকারই পরামর্শ দিলেন। বলেন, “সব সময় কি মন্তব্য করতেই হবে? কেন আমরা মাঝেমধ্যে নীরব থাকতে পারি না।” তবে সে গুড়ে বালি ঢেলে এ মুহূর্তে বিতর্কের চুড়োয় পাটিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy