ছবি এপি।
বাংলাদেশের রোগীদের উপর করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক বা ভ্যাকসিনের পরীক্ষা করতে চায় চিন।
বাংলাদেশের হাজার চারেক মানুষের উপর এই সম্ভাব্য-ভ্যাকসিন পরীক্ষার প্রস্তাব দিয়েছে গবেষণারত চিনা সরকারি সংস্থা সিনোভ্যাক বায়োটেক। বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যমের খবর, এ মাসের প্রথমার্ধেই সেই পরীক্ষা করা হতে পারে। চিনের প্রস্তাবটি গ্রহণ করবে কি না, বাংলাদেশ সরকার সে বিষয়ে প্রকাশ্যে মুখ না-খুললেও স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্তাদের ইঙ্গিত, সরকারের আপত্তি নেই। তাঁদের যুক্তি, এর ফলে ভ্যাকসিন ব্যবহারে অগ্রাধিকার পাবে বাংলাদেশ। তাতে আখেরে দেশেরই লাভ। তবে প্রশ্ন উঠেছে, পরীক্ষা সফল না-হলে বা রোগীর দেহে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গেলে তার দায় কে নেবে?
চিনের সিনোভ্যাকের সঙ্গে একযোগে বাংলাদেশি করোনা রোগীদের উপর সম্ভাব্য-ভ্যাকসিনের পরীক্ষাটি তাঁরা করতে চান বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সরকার পরিচালিত ‘আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র’-এর সিনিয়র সায়েন্টিস্ট ফেরদৌসি কাদরি। স্বাস্থ্য অধিদফতরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেছেন, “ভ্যাকসিনের ট্রায়ালটি যাতে দ্রুত করা যায়, সে বিষয়ে সরকার সব ধরনের সাহায্য করবে।” তিনি জানিয়েছেন, শুধু সিনোভ্যাক-ই নয়, ব্রিটেনের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়কেও জানানো হয়েছে, প্রয়োজনে বাংলাদেশের করোনা-রোগীদের উপর তারা ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা পরীক্ষা করতে পারে। ওই স্বাস্থ্য-কর্তার দাবি, চিনা সংস্থাটির ‘হিউম্যান ট্রায়াল’-এ যে যে ক্ষেত্রে সরকারি অনুমোদনের দরকার, তা নিয়ে সমস্যা হবে না। তাঁরা চেষ্টা করবেন, বাংলাদেশে যাতে এই ভ্যাকসিন তৈরি করা যায়— সেটিও নিশ্চিত করতে। অন্য স্বাস্থ্যকর্তারাও জানিয়েছেন, বাংলাদেশের রোগীদের উপরে চিনের ভ্যাকসিনের ট্রায়ালে আপত্তির কারণ পাচ্ছেন না তাঁরা। কারণ, চিনে এখন পর্যাপ্ত করোনা-রোগী নেই। জুনের গোড়ায় বেজিংয়ে যে ৩০০ নতুন সংক্রমিতের হদিশ মিলেছিল, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় দেখা গিয়েছে, দক্ষিণ বা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে কোনও ভাবে তা সংক্রমিত হয়েছিল।
বাংলাদেশের রোগীদের উপরে ভ্যাকসিন পরীক্ষা করে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হলে, দায় কে নেবে বা ক্ষতিপূরণ কারা মেটাবে, অনেকেই নানা মাধ্যমে সেই প্রশ্ন তুলে সরব হয়েছেন। সরকার এ বিষয়ে নিজেদের অবস্থান জানায়নি। তবে করোনা-সংক্রমণ হু-হু করে বেড়ে চলেছে বাংলাদেশে। বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড ৪০১৯ জনের সংক্রমণ ধরা পড়ায় দেশে সংক্রমিতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫৩ হাজার ২৭৭ জনে। এক দিনে আরও ৩৮ জন মারা যাওয়ায় করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ১৯২৬ জন। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক সংস্থার তালিকায় আক্রান্তের সংখ্যায় বাংলাদেশ এখন রয়েছে ১৮ নম্বরে।
আরও পড়ুন: ভারতীয় বংশোদ্ভূত চিকিৎসক, সেবিকাদের ধন্যবাদ ট্রাম্পের
আরও পড়ুন: ক্ষমতায় এলে ফের এইচ-১বি চালু: বাইডেন
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy