Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
মানবাধিকার পরিষদে তোপ পাকিস্তানকে

বেঁচে থাকার অধিকারই কেড়ে নেয় জঙ্গিরা: দিল্লি

কাল এই অধিবেশনে কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ভারতকে অস্বস্তিতে ফেলেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলে।

রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার পরিষদে বক্তৃতা দিচ্ছেন বিদেশ মন্ত্রকের সচিব-পূর্ব বিজয় সিংহ ঠাকুর (মাঝে)। টুইটার

রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার পরিষদে বক্তৃতা দিচ্ছেন বিদেশ মন্ত্রকের সচিব-পূর্ব বিজয় সিংহ ঠাকুর (মাঝে)। টুইটার

সংবাদ সংস্থা
জেনিভা শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৪:০৯
Share: Save:

বাগাড়ম্বরে না গিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার পরিষদে ধারালো ভাষায় পাকিস্তানকে জবাব দিল ভারত। কোনও প্রতিক্রিয়ার পরোয়া না করে দিল্লি কাশ্মীরের মানুষের মৌলিক অধিকারকে ‘পদদলিত’ করছে বলে দাবি করেছিল পাকিস্তান। জবাবে পাকিস্তানের নাম না করে ভারত জানিয়েছে, ‘সন্ত্রাসের উৎসস্থল’ ওই দেশটির মদতে পুষ্ট জঙ্গিরা মানুষের বেঁচে থাকার মৌলিক অধিকারই কেড়ে নেয়। সেইসঙ্গে পাকিস্তানে সংখ্যালঘু নিগ্রহের অভিযোগ নিয়েও সরব হয়েছে দিল্লি।

কাল এই অধিবেশনে কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ভারতকে অস্বস্তিতে ফেলেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলে। তাঁর বক্তব্যকে স্বাগত জানান পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। আজ পরিষদের অধিবেশনে পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি বলেন, ‘‘ভারত কোনও প্রতিক্রিয়ার পরোয়া না করে কাশ্মীরের মানুষের মৌলিক অধিকারকে পদদলিত করছে। সেখানে গণহত্যার সম্ভাবনা রয়েছে।’’ সেই সম্ভাবনা এড়াতে এখনই কাশ্মীরে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার জন্য ভারতকে অনুরোধ জানাতে মানবাধিকার পরিষদের কাছে আর্জি জানান কুরেশি। কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘনে যুক্ত ব্যক্তিদের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর জন্য একটি আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিশন গঠনের পক্ষেও সওয়াল করেন পাক বিদেশমন্ত্রী।

কুরেশির গুরুত্বকে লঘু করতেই জেনিভায় বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে পাঠানো হয়নি বলে সাউথ ব্লক সূত্রের দাবি। আজ ভারতের তরফে জবাব দেন বিদেশ মন্ত্রকের সচিব (পূর্ব) বিজয় সিংহ ঠাকুর। তিনি বলেন, ‘‘কাশ্মীর সম্পর্কে সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত ভারতের সংসদে বিতর্কের পরে পাশ হয়েছে। এই পরিবর্তনের পরে অনেক প্রগতিশীল নীতির সুবিধে পাবেন জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখের বাসিন্দারা। তার ফলে সেখানে লিঙ্গ বৈষম্য কমবে, নাবালকদের অধিকার আরও সুরক্ষিত হবে। নিশ্চিত হবে শিক্ষা, তথ্য ও কাজের অধিকার।’’ বিজয় সিংহ ঠাকুরের বক্তব্য, ‘‘ভারত অভ্যন্তরীণ বিষয়ে সার্বভৌম সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ কেউই বরদাস্ত করবে না। ভারত তো নয়ই।’’

তিনি বলেন, ‘‘কঠিন সময়ের মধ্যেও জম্মু-কাশ্মীরের প্রশাসন একান্ত প্রয়োজনীয় পরিষেবা দেওয়া নিশ্চিত করেছে। নিষেধাজ্ঞা ধীরে ধীরে তোলা হচ্ছে। সীমান্তের ওপার থেকে এসে জঙ্গিদের হামলা চালানোর সম্ভাবনা ছিল। তাই কিছু প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার।’’

এর পরেই নাম না-করে পাকিস্তানকে তুলোধোনা করে বিজয় সিংহ ঠাকুর বলেন, ‘‘এই মঞ্চে একটি দেশের প্রতিনিধি দল আমার দেশের বিরুদ্ধে মিথ্যের ধারাবিবরণী দিয়েছে। সকলেই জানে ওই দেশটি সন্ত্রাসে মদত দেয়। সেখানে জঙ্গি চাঁইরা বছরের পর বছর আত্মগোপন করে থাকে।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘যারা নিজেদের ভূখণ্ড থেকে সন্ত্রাসে মদত দেয় তারা মানবাধিকার লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় অপরাধী। রাষ্ট্রীয় মদতে পুষ্ট জঙ্গিদের কার্যকলাপের জন্য ভারত তথা বিশ্বকে অনেক মূল্য দিতে হয়েছে। জঙ্গি গোষ্ঠী ও তাদের মদতদাতাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করার সময় এসেছে। কারণ, তারা মানুষের বেঁচে থাকার অধিকারই কেড়ে নেয়।’’ পরে পাক বক্তব্যের জবাব দেওয়ার অধিকার প্রয়োগ করে (রাইট টু রিপ্লাই) ভারতীয় কূটনীতিক ভিমর্ষ আরিয়ান বলেন, ‘‘মানবাধিকার প্রসঙ্গে পাকিস্তানের রেকর্ড সবাই জানেন। ভারতের বিরুদ্ধে মিথ্যে বলে পাকিস্তানে সংখ্যালঘুদের উপরে অত্যাচার এবং তাঁদের মেরে ফেলার ঘটনা থেকে বিশ্বের নজর ঘোরানো যাবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE