Advertisement
E-Paper

গুলাব জামুন আর পান্তুয়া কি আলাদা? না কি একই মায়ের যমজ সন্তান?

বাইরে থেকে দেখলে গুলাব জামুন আর পান্তুয়ার চেহারায় বিশেষ অমিল নেই। রং বাদামি। দু’টিকেই চুবিয়ে রাখা হয় রসে। আকার মূলত গোল। তা হলে পার্থক্য কোথায়? সেটা বোঝা যায় কামড় দিলে!

ঐন্দ্রিলা বসু সিংহ

শেষ আপডেট: ২২ মে ২০২৫ ০৮:৫৯
পান্তুয়া আর গুলাব জামুনে মিল বেশি না অমিল?

পান্তুয়া আর গুলাব জামুনে মিল বেশি না অমিল? গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

দেশের গণ্ডি পেরিয়ে যে সব ভারতীয় মিষ্টি বিদেশেও নাম করেছে, গুলাব জামুন তার একটি। হোক ঘিয়ে ভাজা, রসে টসটসে, তবু চিজ়কেক-সুফলে খাওয়া সাহেবসুবোরা হাতের কাছে পেলে এ মিষ্টির টান এড়াতে পারেন না। যেমন উত্তর ভারতের মিষ্টি গুলাব জামুনকে এড়াতে পারে না দক্ষিণ ভারতও। খাওয়াদাওয়া আর সংস্কৃতির ফারাক নিয়ে উত্তর-দক্ষিণের লড়াই যতই বড় হোক, উত্তরের গুলাব জামুন থেকে মুখ ফেরাতে পারেননি দক্ষিণের মানুষ। এ হেন গুলাব জামুনের নানা রূপ ছড়িয়ে আছে দেশের নানা প্রান্তে। গুলাব জামুনের ধাঁচের মিষ্টি আছে বাংলাতেও। তার মধ্যে সবচেয়ে কাছাকাছি দেখতে যেটি, তার নাম হল ‘পান্তুয়া’।

বাংলার পান্তুয়া আর গুলাব জামুনের মিল এতটাই যে দু’টিকে গুলিয়ে ফেলেন খোদ বাঙালিরাই। কিন্তু দুই মিষ্টির মধ্যে সত্যিকারের মিল কতটা, তফাতই বা কিসে? কেনই বা ভিন্‌রাজ্যের গুলাব জামুনের থেকে নিজেদের পান্তুয়াকে আলাদা করতে পারে না বাঙালি?

বাঙালির আর দোষ কী! দুই মিষ্টির তফাত এক নজরে চোখেই পড়ে না। বাইরে থেকে দেখলে গুলাব জামুন আর পান্তুয়া— দুই-ই এক ছাঁচে (যমজ বললেও অত্যুক্তি হয় না) ঢালা। বাদামি রং। আকারে গোলগাল। মিষ্টির দোকানে দু’টিকেই রসে চুবিয়ে রাখা থাকে। হাতে পেয়ে ছুঁয়ে দেখেও আলাদা করা যায় না কারণ, দু’টিই একই রকম নরমসরম। এমনকি, গুলাব জামুনের মতো পান্তুয়াকেও রসে ফেলার আগে গাওয়া ঘিয়ে ভেজে নেওয়ার নিয়ম!

গুলাব জামুন না কি পান্তুয়া, গুলিয়ে ফেলেন বাঙালিরাও।

গুলাব জামুন না কি পান্তুয়া, গুলিয়ে ফেলেন বাঙালিরাও। ছবি: সংগৃহীত।

তা হলে পার্থক্য কোথায়?

সেটা বোঝা যায় কামড় দিলে। তখন মালুম হয়, তফাত একেবারে মূলে। পান্তুয়া বাংলার ছানার তৈরি মিষ্টি। যে ছানার সুনাম মিষ্টিপ্রেমীদের দুনিয়ায় উঁচু দরের। অন্য দিকে, গুলাব জামুন আর পাঁচটি অবাঙালি মিষ্টির মতোই মাওয়া বা খোয়া ক্ষীর দিয়ে তৈরি। তাতে ছানার চিহ্নমাত্র নেই। কারণ, বাংলার বাইরে উৎকৃষ্ট ছানাই অমিল। গুলাব জামুনের ভিতরটাও ফাঁপা। তার পেটের ভিতর দেওয়া থাকে জাফরান অথবা পেস্তা। খোয়া ক্ষীরকে সুজি, ময়দা দিয়ে মেখে তাতে গোলাপ জলের সুগন্ধ মিশিয়ে তৈরি হয় গুলাব জামুন।

আর পান্তুয়া?

পান্তুয়া বানানোর একটি পুরনো প্রক্রিয়ার উল্লেখ রয়েছে ১২০০ সালে লেখা চালুক্য রাজা তৃতীয় সোমেশ্বরের কাব্যগ্রন্থ ‘মানসোল্লাস’-এ। পান্তুয়া নামের উল্লেখ না থাক, সেখানে বর্ণিত মিষ্টি বানানোর প্রক্রিয়াটি পান্তুয়ার সঙ্গে নব্বই শতাংশ মিলে যায়। দ্বাদশ শতাব্দীর সেই গ্রন্থে বলা হচ্ছে, ‘‘দুধ থেকে ছানা কাটিয়ে তার জল ঝরাতে হবে। তার পরে চালের আটা, চিনি এবং ছোট এলাচ দিয়ে মেখে ঘিয়ে ভেজে চিনির রসে ফেললে তৈরি হবে ভাজা ছানার মিষ্টি। যে মিষ্টি রাজার প্রিয়’’!

এখনকার পান্তুয়া বানানোর পদ্ধতির সঙ্গে এর পার্থক্য একটিই। এখন চালের গুঁড়োর বদলে পান্তুয়ার ছানা মাখা হয় সুজি এবং ময়দা দিয়ে। তবে বঙ্গে পান্তুয়া বানানোর একটি নয়, একাধিক রীতি প্রচলিত। আর প্রত্যেকটির সঙ্গেই জড়িয়ে রয়েছে আলাদা আলাদা কাহিনি, আলাদা ঐতিহ্য।

পান্তুয়ার নাম না করেও একই পদ্ধতিতে মিষ্টি তৈরির উল্লেখ রয়েছে ৮০০ বছর আগে লেখা এক চালুক্য রাজার কাব্যগ্রন্থে।

পান্তুয়ার নাম না করেও একই পদ্ধতিতে মিষ্টি তৈরির উল্লেখ রয়েছে ৮০০ বছর আগে লেখা এক চালুক্য রাজার কাব্যগ্রন্থে। ছবি: সংগৃহীত।

পান্তুয়া ও পান্তুয়ারা

বাংলার পান্তুয়া গোত্রের যে সব মিষ্টি আছে, তা বানানোর পদ্ধতি অঞ্চলবিশেষে বদলেছে।

কাটোয়ার নোড়া পান্তুয়ার কথাই ধরা যাক। পান্তুয়া বললে যে গোলগাল মিষ্টির ছবি মনে হয়, নোড়া পান্তুয়াকে কিন্তু মোটেই তেমন দেখতে নয়। বরং নোড়া পান্তুয়াকে দেখতে খানিকটা শিলনোড়ার ছোট্ট নোড়ার মতোই। অর্থাৎ, গোল নয়, কিছুটা লম্বাটে গড়ন। পান্তুয়া লম্বাটে হলে শহুরে বাঙালি তাকে লেডিকেনি বলেই চেনে। কিন্তু সে মিষ্টির আলাদা ইতিহাস আছে। কাটোয়ার নোড়া পান্তুয়ার সঙ্গে লেডিকেনির কোনও যোগ নেই। নোড়া পান্তুয়ার বিশেষত্ব হল, এর ছানার পরতের ভিতরে একটি ক্ষীরের বল থাকে। আর থাকে এলাচের একটি দানা। কামড় দিলে সেই ক্ষীর আর এলাচের স্বাদ মেশে ঘিয়ে ভাজা ছানার সঙ্গে। তার পরে জিভে মিলিয়ে যায়। কাটোয়ার জনতা অবশ্য এই নোড়া পান্তুয়াকে চেনেন ‘পরানের পান্তুয়া’ নামে। কারণ, ওই মিষ্টি যাঁর হাতে তৈরি, তাঁর নাম প্রাণকৃষ্ণ কুন্ডু। প্রাণকৃষ্ণের ‘প্রাণ’ই একটি দ্ব্যর্থক ব্যঞ্জনা তৈরি করে বদলে যায় ‘পরান’-এ । শোনা যায়, প্রাণকৃষ্ণ তাঁর বাবার সঙ্গে দেশভাগের পরে পূর্ববঙ্গ থেকে কাটোয়ায় এসেছিলেন। বাবার মিষ্টির দোকানে তিনিও বসতেন। পরে তিনিই বানান পান্তুয়া।

কাটোয়ার নোড়া পান্তুয়া। নামে পান্তুয়া, কিন্তু দেখতে গোল নয়।

কাটোয়ার নোড়া পান্তুয়া। নামে পান্তুয়া, কিন্তু দেখতে গোল নয়। ছবি: আনন্দবাজার আর্কাইভ।

কিন্তু সে তো দেশভাগের পরের কথা। অর্থাৎ একশো বছর আগেও নয়। অথচ ‘মানসোল্লাস’ কাব্যগ্রন্থে নামহীন পান্তুয়ার উল্লেখ করা হচ্ছে ৮০০ বছর আগে! এমনকি, পান্তুয়া নামের উল্লেখও পাওয়া যাচ্ছে ১৫৫৭ সালে লেখা ‘চৈতন্য চরিতামৃত’তে। ৫০০ বছর আগে বাংলায় সেই পান্তুয়া কে বানিয়েছিলেন? সে ইতিহাস জানা না গেলেও গবেষকেরা বলছেন, ঘিয়ে ভেজে, রসে ফেলে মিষ্টি তৈরির ওই প্রক্রিয়া ইরান থেকে পশ্চিম এশিয়া হয়ে এসেছিল বাংলায়। যেমনটা হয়তো হয়েছিল গুলাব জামুনের ক্ষেত্রেও।

১২২৬ সালে বাগদাদে লেখা একটি রান্নার বই ‘কিতাব আল তাবি’তে পান্তুয়া বা গুলাব জামুনের মতো একটি মিষ্টি বানানোর প্রক্রিয়া বলা আছে। সে মিষ্টির নাম ‘লুকমাত আল কাদি’ বা লোকমা। ইস্টকে ঘিয়ে ভেজে গোলাপজল আর মধুতে চুবিয়ে বানানো হত লোকমা। খানিকটা একই ভাবে গোলাপজল আর চিনির রসে ডুবিয়ে বানানো গুলাব জামুন ভারতে জনপ্রিয় হয় মোগল রাজাদের শাসনকালে। মোগল সংস্কৃতির অনেকটাই ইরান থেকে প্রভাবিত বলে মনে করেন ইতিহাস গবেষকেরা। গুলাব জামুন তৈরির প্রক্রিয়াটিও ইরানের প্রভাব হওয়া বিচিত্র নয়।

জামের মতো দেখতে আর গোলাপজলে ডোবানো বলে মোগলরা এ মিষ্টির নাম দিয়েছিল গুলাব জামুন। মোগল রাজত্বে সে মিষ্টি এতটাই জনপ্রিয় হয় যে বিয়ে থেকে ইদ— প্রায় সমস্ত উৎসবেই পরিবেশন করা হত গুলাব জামুন।

বিদেশের ফাইন ডাইনিং রেস্তরাঁর মেনুতেও থাকে গুলাব জামুন, যা মোগল আমলে জনপ্রিয় হয়েছিল ভারতে।

বিদেশের ফাইন ডাইনিং রেস্তরাঁর মেনুতেও থাকে গুলাব জামুন, যা মোগল আমলে জনপ্রিয় হয়েছিল ভারতে। ছবি: সংগৃহীত।

মোগল সাম্রাজ্যের পত্তন হয়েছিল ১৫২৬ সালে। ভারতে গুলাব জামুনের জন্ম যদি তার কয়েক বছর পরে হয়, তবে দেখা যাচ্ছে একই সময়ে বাংলাতেও তৈরি হয়েছিল পান্তুয়া। কারণ, ‘চৈতন্য চরিতামৃত’তে চৈতন্যদেবকে পরিবেশিত খাবারে পান্তুয়া সাজিয়ে দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে ১৫৫৭ সালে। হতেই পারে বিদেশ থেকে আসা মিষ্টি বানানোর পদ্ধতি একই সময়ে আলাদা আলাদা ভাবে আপন করেছিল বাংলা এবং উত্তর ভারত। যা পরবর্তী কালে আরও বদলায়।

বঙ্গে যেমন ছানা দিয়ে পান্তুয়া বানানো হয়েছে, তেমনই পান্তুয়ায় ছানার ভিতরে এলাচ দানা, ক্ষীরের পুর কিংবা ছানার সঙ্গে ক্ষীর মেশানো হয়েছে কোথাও কোথাও। আবার গুলাব জামুনে ভিতরে জায়গাবিশেষে থাকে জাফরান, পেস্তা কিংবা অন্য কিছু। ফলে অমিলের মধ্যে মিলও থেকে গিয়েছে অঢেল।

বাংলার পান্তুয়া বিভিন্ন হাতে বিভিন্ন নাম এবং রূপ পেয়েছে। উদাহরণ হিসাবে বলা যেতে পারে উত্তরবঙ্গে লালমোহন, মুর্শিদাবাদের ছানাবড়া, কালোজাম, বর্ধমানের নিখুতি কিংবা ল্যাংচার কথা।

ময়রার শারীরিক অক্ষমতার দৌলতে পান্তুয়ার মতো বানানো মিষ্টির নাম হয় ল্যাংচা।

ময়রার শারীরিক অক্ষমতার দৌলতে পান্তুয়ার মতো বানানো মিষ্টির নাম হয় ল্যাংচা। ছবি: সংগৃহীত।

হাত বদলে পান্তুয়ার ধরন বদলে যাওয়ার একটি গল্প শুনিয়েছেন খাবার নিয়ে চর্চা করা দীপঙ্কর দাশগুপ্ত। তিনি জানাচ্ছেন, পান্তুয়ার মতো মিষ্টি বানাতে গিয়ে কালনায় জন্ম হয়েছিল ল্যাংচার। বর্ধমানের শক্তিগড়কে ল্যাংচার আদি ক্ষেত্র ভাবা হলেও কালনার ল্যাংচা তৈরির গল্পটি বেশ অদ্ভূত! দীপঙ্কর বলছেন, ‘‘কালনার ভঞ্জ ময়রা ছানার সঙ্গে ক্ষীর মিশিয়ে মণ্ড বানিয়ে তাকে ঘিয়ে ভেজে রসে ফেলে পান্তুয়ার মতোই মিষ্টি তৈরি করেছিলেন। কিন্তু যেহেতু ভঞ্জ এক পায়ে লেংচে চলতেন, তাই তাঁর তৈরি মিষ্টির নাম হয়ে যায় ল্যাংচা। ভঞ্জ ময়রার সেই কাহিনি ‘বনপলাশির পদাবলী’ ছবিতেও বলা আছে।’’

পান্তুয়ার কথা বলতে হলে রানাঘাটের জগু ময়রার নামও বলতে হয়। জগু ময়রার পান্তুয়ার গড়ন যদিও পরানের পান্তুয়া বা কালনার ভঞ্জ ময়রার তৈরি মিষ্টির মতো লম্বাটে নয়। বরং গুলাব জামুনের মতোই নিটোল গোল। তবে গোল হলেও এ মিষ্টির নাম নাকি পান্তুয়া ছিল না। ছিল লেডিকেনি! শোনা যায়, ওই মিষ্টি তৈরি করেছিলেন রানাঘাটের হরিদাস পাল নামে এক ব্যক্তি। তখন রানাঘাটের জমিদার ছিলেন পালচৌধুরীরা। তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে রানাঘাটে এসেছিলেন সস্ত্রীক লর্ড ক্যানিং। তাঁদের খাতিরেই ছানা ভেজে রসে চুবিয়ে তৈরি করা হয় এমন মিষ্টি, যার বাইরেটা লাল হবে অথচ ভিতরটা সাদা। লক্ষ্য ছিল ‘সাহেব-মেম’কে অবাক করে দেওয়া। সেই সূত্রেই লর্ড ক্যানিংয়ের স্ত্রীর নামে মিষ্টির নাম দেওয়া হয় লেডিক্যানিং। অপভ্রংশে লেডিকেনি। যদিও জগু ময়রার দোকানের বর্তমান কর্ণধারদের বলতে শোনা যায়, আসল লেডিকেনি বানিয়েছিলেন কলকাতার মিষ্টি প্রস্তুতকারক ভীম নাগ। আর তাঁদের পূর্বপুরুষের তৈরি মিষ্টির আকার যেহেতু গোল, তাই নাম বদলে পান্তুয়া হয়ে যায়।

লর্ড ক্যানিংয়ের স্ত্রীর সম্মানে মিষ্টি বানিয়েছিলেন ভীম নাগ। লেডি ক্যানিং থেকে অপভ্রংশে মিষ্টির নাম হয় লেডিকেনি।

লর্ড ক্যানিংয়ের স্ত্রীর সম্মানে মিষ্টি বানিয়েছিলেন ভীম নাগ। লেডি ক্যানিং থেকে অপভ্রংশে মিষ্টির নাম হয় লেডিকেনি।

এ তো গেল পান্তুয়ার গল্প। যে ভীম নাগের লেডিকেনির কথা বলা হচ্ছে, তাঁর মিষ্টির সঙ্গেও একই কাহিনি জড়িয়ে। লর্ড ক্যানিংয়ের স্ত্রীর জন্যই লম্বাটে গড়নের ঘিয়ে ভাজা ছানার রসালো মিষ্টি বানিয়েছিলেন ভীম নাগ। সেই মিষ্টি খেয়ে লেডি ক্যানিংয়ের ভালও লাগে। মিষ্টির নাম হয় লেডিকেনি। কিন্তু এখন সেই ভীম নাগেরই বৌবাজারের মিষ্টির দোকানে গেলে লেডিকেনি নয়, আয়েদিন মিলবে গুলাব জামুন! দোকানের কর্মচারীকে প্রশ্ন করতে তিনি বললেন, ‘‘লেডিকেনি চাইলে দু’দিন আগে বলতে হবে। গুলাব জামুন যে কোনও দিন পাওয়া যাবে।’’ আর পান্তুয়া? মিষ্টির নাম শুনতেই ফোন কেটে দিলেন তিনি!

কালেদিনে আমজনতার স্মৃতি থেকে পান্তুয়ার ইতিহাস ‘পথ হারাইয়াছে’ হয়তো!

Gulab jamun Pantua Bengali Dessert Gulab Jamun vs Pantua Gulab Jamun Origin Pantua Origin
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy