দূষণের হার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই চাহিদা বাড়ছে অ্যান্টি-পলিউশন মাস্কের। বিশেষত বয়স্ক ও শিশুদের মধ্যে শ্বাসনালী ও ফুসফুসের সংক্রমণ এবং বিভিন্ন অসুখের সম্ভাবনা বাড়ছে। সর্দি-কাশির সমস্যা সারা বছর লেগেই থাকছে। তাই শহরের মধ্যে চলাচলে মাস্ক হয়ে পড়ছে অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু কোন মাস্ক কিনলে কাজে দেবে, তা কি জানেন? ওষুধের দোকানে অনেক মাস্কই বিক্রি হয়। কিন্তু কোনটা নিজের দরকারে লাগবে, তা বুঝবেন কী করে?
গাড়ির ধোঁয়া, রাস্তার ধুলো, কারখানার ধোঁয়া, রান্নার ধোঁয়া... বায়ুতে দূষণকণাও বিবিধ। ফলে সেই প্রত্যেক ধরনের কণাকে রোধ করার জন্য বাজারে বিভিন্ন রকমের মাস্ক পাওয়া যায়। জেনে নিন, কোন মাস্কে কাজ কতটা হবে।
এন ৯৫
এটি সবচেয়ে কমন মাস্ক। একটানা তিন-চার দিন ব্যবহার করতে পারেন। এই মাস্ক ২.৫ পিএম (পার্টিকুলেট ম্যাটার) প্রায় শতকরা ৯৫ ভাগ আটকে দেয়। এর দামও খুব বেশি হয় না। ৯০ থেকে ১৫০ টাকার মধ্যেই পাওয়া যায়।
এন ৯৯ ও এন ১০০
বায়ুতে ২.৫ পার্টিকুলেট ম্যাটার প্রায় শতকরা ৯৯ ভাগ রোধ করতে পারে এই মাস্ক। এই মাস্কের দাম ২০০০ থেকে ৩০০০ টাকার মধ্যে। ভাল করে ধুয়ে নিয়ে একাধিক বার ব্যবহার করা যায়। নিয়মিত ব্যবহার করলে ছ’মাস পরে কিনতে হবে নতুন মাস্ক।
পি ৯৫
পি এবং এন মাস্কের মধ্যে তফাত আছে। পি মাস্ক তৈলাক্ত দূষণকণাকেও পরিশোধিত করতে পারে, যা এন মাস্ক পারে না। এন মাস্কে শুধু শুষ্ক কণাই আটকায়। ফলে পি মাস্কের দামও বেশি। তবে এটি অনেক বেশি কার্যকর। এই মাস্ক এক দিনে আট-ন’ঘণ্টা ব্যবহার করতে পারেন। মাস্ক প্রতি প্রায় ১১০০-১২০০ টাকা খরচ পড়বে।
এয়ার পিউরিফিকেশন মাস্ক
শহরের প্রাণকেন্দ্রে যাঁদের বাস, তাঁদের জন্য এই মাস্ক উপযোগী। বিশেষত দীর্ঘ সময় খেলা, দৌড়োনো বা জগিং-সহ ব্যায়ামের সঙ্গে সঙ্গে শ্বাস-প্রশ্বাসও দ্রুত হতে থাকে। ফলে তাঁদের ক্ষেত্রে দূষিত বায়ু গ্রহণের পরিমাণ বেড়ে যায়। সে ক্ষেত্রে এই এয়ার পিউরিফিকেশন মোশন মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন। খরচও বেশি। মাস্ক প্রতি প্রায় ৩০০০ থেকে ৩৫০০ টাকা দাম। তবে এই মাস্কের ফিল্টার পালটে নিলে তা আবার কাজ করবে।
রেসপ্রো মাস্ক
এই মাস্কে পি এম ১০ পর্যন্ত পরিশোধন করা যায়। এটা ব্যবহার করা যায় প্রায় ৭০ ঘণ্টা। এর দাম ৭৫০ থেকে ১০০০ টাকার মধ্যে।
সার্জিকাল মাস্ক
সাদা বা নীলচে, সবুজ রঙের এই কাপড়ের মাস্ক সব ওষুধের দোকানেই পেয়ে যাবেন। অনেকেই এই মাস্ক ব্যবহারও করেন। তবে এতে দূষণ রোধ করার মতো কোনও কাজ হয় না। শুধু ধুলো আটকাতে সক্ষম এই ধরনের মাস্ক সার্জিকাল কাজেই ব্যবহার্য।
খেয়াল রাখবেন
• গাড়ি চলাচলের রাস্তা দিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করতে হলে মাস্ক সঙ্গে রাখুন। বিশেষত যাঁরা কাজের জন্য রোজ বেরোন, বাইকে বা বাসে বা অটোয় যাতায়াত করেন, তাঁদেরও এটি কাজে লাগবে।
• অন্ততপক্ষে এন মার্ক করা মাস্ক কিনে ব্যবহার করুন। দাম বেশি হলেও কার্যকর।
• মাস্কের আকারও ঠিক হতে হবে। তা যেন মুখে চেপে না বসে।
• মাস্ক পরিষ্কার করাও জরুরি। প্রত্যেকটি মাস্ক কেনার সময়ে তার ব্যবহারবিধি বুঝে নিন।
• এক্সপায়ারি ডেটের পরে সেই মাস্ক ব্যবহার করে কিন্তু কোনও লাভ নেই।
• মাস্কের ফিল্টার থাকলে, সেটি নির্ধারিত সময়ে বদলান।
• বাড়ির বয়স্ক ও শিশুদের জন্য শহরের রাস্তাঘাটে এই মাস্ক যেমন জরুরি, তেমনই প্রয়োজন অসুস্থ মানুষদের জন্যও। বিশেষত সর্দি-কাশি বা হাঁপানির সমস্যায় যদি কেউ নিয়মিত ভোগেন, তাঁরাও এই মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন।
মাস্কের সাহায্যে দূষণকে দূরে তো সরিয়ে রাখা যায়। কিন্তু কমানো যায় না। মাস্কের আড়ালেই যাতে থেকে না যেতে না হয়, তাই বায়ুদূষণ কমাতে কিছু পদক্ষেপ করতেই পারেন। যাতে পরবর্তী প্রজন্মকে মুখোশের আড়ালে থাকতে না হয়!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy