কিডনির অসুখ থেকে বাঁচতে মেনে চলুন ঠিক খাদ্যাভ্যাস। ছবি: আইস্টক।
কিডনির সমস্যায় ভুগছেন? তা হলে আজই ছাড়তে হবে একটি বিশেষ ফল। শুধু কিডনির সমস্যায় ভোগা রোগীরাই নয়, কিডনিকে সার্বিক ভাল রাখতেও এই ফলকে ‘নিষিদ্ধ’ বলে জানাল একটি গবেষণা।
ভারত, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা-সহ নানা দেশে এই ফলের ফলন ভালই। বিশেষত, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া জুড়েই এই ফলের হরেক ব্যবহার দেখা যায়। কোথাও কাঁচা, কোথাও বা চাটনি আকারে, আবার কোথাও সেদ্ধ করেও এই ফল খাওয়ার চল আছে। জনপ্রিয় সেই কামরাঙাকেই এ বার কিডনির রোগীদের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক বলে সম্প্রতি ঘোষণা করল ব্রাজিলের সাও পাওলো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা।
তবে সাও পাওলো একা নয়, এর আগে চিন ও মার্কিন মুলুকে নানা গবেষকও এই একই কথা বলেছেন। তাঁদের মতকে মান্য করার কথা জানাচ্ছেন কিডনি বিশেষজ্ঞ অভিজিৎ তরফদারও। তাঁর মতে, ‘‘শুধু কিডনির রোগীদের ক্ষেত্রে তো এই নিষেধাজ্ঞা নিয়ে কোনও দ্বিমতই নেই। শুধু তা-ই নয়, যাঁদের কিডনির অসুখ নেই, তাঁদের ক্ষেত্রেও তা ভাল রাখতে এই ফল যত সম্ভব কম খাওয়াই ভাল।’’
ইতিহাসের পাতায় আজকের তারিখ, দেখতে ক্লিক করুন — ফিরে দেখা এই দিন।
আরও পড়ুন: মাইগ্রেন আছে? তা হলে আজই ছাড়ুন এ সব অভ্যাস
কিন্তু কেন এমন নিদান? চিকিৎসকদের মতে, কামরাঙায় থাকা নানা উপাদানের মধ্যে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, ভিটামিন সি, সাইট্রিক অ্যাসিড, পটাশিয়াম ইত্যাদি উপকারী উপাদান যেমন আছে, তেমনই ‘ক্যারামবক্সিন’ (মার্কিন বিজ্ঞানীদের দেওয়া নাম) নামের এক টক্সিনের উপস্থিতিও। মূলত, এই কারণেই কামরাঙাকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে বলে চিকিৎসকদের মত।
ক্যারামবক্সিন মস্তিষ্কের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক। কামরাঙা খাওয়ার ফলে তা শরীরে প্রবেশ করলে কিডনির মূল কাজই হয়, তাকে ছেঁকে শরীরের বর্জ্যের সঙ্গে বার করে দেওয়া। কিন্তু কিডনি দুর্বল হলে সেই কাজ সে ঠিক মতো করতে পারে না। ফলে রক্তের মাধ্যমে ওই টক্সিন মস্তিষ্কে প্রবেশ করে।
এর ভয়াবহতা এতটাই যে, কিডনির সমস্যায় ভুগতে থাকা মানুষ কামরাঙা খেলে, এই টক্সিনের প্রভাবে সাধারণ মাথা যন্ত্রণা থেকে শুরু করে মৃগীর মতো খিঁচুনি, এমনকি, মস্তিষ্ককোষের ক্ষতি হয়ে তিনি কোমায় পর্যন্ত চলে যেতে পারেন। ফলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
আরও পড়ুন: তেল-মশলা-ঘি থেকে ফ্যাটি লিভারের ভয়? প্রতি দিন খান এই দুই পানীয়
তা হলে কি একেবারেই বারণ? অভিজিৎবাবুর মতে, ‘‘কিডনি সুস্থ থাকলে বা তার স্বাভাবিক কাজকর্ম বজায় থাকলে কামরাঙা খাওয়া চলে, তবে তাও খুব বেশি মাত্রায় নয়। কারণ ঘন ঘন ক্যারামবক্সিন টক্সিন বার করতে করতে কিডনির দুর্বল হয়ে পড়ার সম্ভাবনা বাড়ে। আর যদি কোনও কিডনির অসুখের রোগী এই ফল খেয়েও ফেলেন তা হলে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন ডায়ালিসিসের জন্য।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy