প্রসাধনীর বাজারে উঁকিঝুকি দিলে শিট মাস্ক থেকে মুখের মাস্ক, টোনারে পাবেন ফুলের ছোঁয়া। তার কোনওটিতে ব্যবহার হয়েছে গোলাপ ফুলের নির্যাস, কোনওটিতে জবা। ল্যাভেন্ডারের সুবাসযুক্ত শিট মাস্কও মিলবে তালিকায়। ত্বকের যত্নে ভিটামিন এবং খনিজ সমৃদ্ধ ফলের ব্যবহার যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে, তেমনই ফুলের ছোঁয়াতেও মুখের জেল্লা ফেরানো পন্থা কিন্তু নয়া নয়। অতীতেও রূপচর্চায় গোলাপের ব্যবহার হয়েছে।
ফুল দিয়ে যদি রূপচর্চা করতে হয় তা হলে আর বাজারচলতি পণ্য কিনবেন কেন? তার চেয়ে বরং বাড়িতেই বাগানের টাটকা ফুল দিয়ে বানিয়ে নিন ত্বকের উপযোগী ফুলের মাস্ক।
গোলাপ: এই ফুল শুধু সুগন্ধে ভরপুর এবং সুন্দরই নয়, ত্বকের জন্য উপযোগীও। স্নানের জলে গোলাপির পাপড়ির ব্যবহারে শরীর শুধু তরতাজাই থাকে না, ফুলের গুণে ত্বক হয় মসৃণ এবং সুন্দর। গোলাপে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। তারুণ্য ধরে রাখতে যা উপযোগী। ত্বককে আর্দ্র রাখতেও সাহায্য করে ফুলটি। টোনার হিসেবে গোলাপ জলের ব্যবহার হয়। রোজ অয়েলে থাকা ভিটামিন এ, সি বলিরেখা দূর করে ত্বক টানটান রাখতে সাহায্য করে। গোলাপ দিয়ে বাড়িতেই বানিয়ে নিন মাস্ক।
গোলাপজল, রোজ় ওয়াটার এবং মুলতানি মাটির মাস্ক
গোলাপজল তৈরির জন্য প্রথমেই ১০-১২টি টাটকা গোলাপের পাপড়ি ছাড়িয়ে ভাল করে ধুয়ে নিন। একটি বড় কানা-উঁচু পাত্রে ছোট একটি পাত্র রেখে তার চারপাশে পাপড়ি ছড়িয়ে দিন। আধ কাপ জল পাপড়িতে ছিটিয়ে দিন। এ বার গ্যাস অভেনে বসিয়ে ঢাকা দিয়ে দিন। তাপে গোলাপের নির্যাসযুক্ত জল বাষ্পীভূত হবে। সেটি জল হয়ে পাত্রের মধ্যে রাখা মুখ খোলা ছোট পাত্রে জমা হবে। সেটি সংগ্রহ করলেই পেয়ে যাবেন গোলাপ জল।
এ বার ২ টেবিল চামচ মুলতানি মাটির সঙ্গে ২ টেবিল চামচ গোলাপজল এবং ২-৩ ফোঁটা রোজ় অয়েল মিশিয়ে মাস্ক বানিয়ে নিন। মুখ ফেসওয়াশ দিয়ে ধুয়ে সেটি মাখুন। ১৫ মিনিট মেখে ধুয়ে ফেললেই হবে।
জবা: রূপচর্চায় জবা ফুলের ব্যবহারও নতুন নয়। এই ফুল অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, এএইচএ (আলফা হাইড্রক্সি অ্যাসিড) এবং ভিটামিন সি সমৃদ্ধ, যা প্রাকৃতিক ভাবে ত্বকের মৃত কোষ সরাতে সাহায্য করে। এ ছাড়া ত্বক টান টান রাখে, ত্বকে আর্দ্রতার অভাব মেটায় এবং ব্রণ নিয়ন্ত্রণে বড় ভূমিকা পালন করে।
আরও পড়ুন:
জবার পাপড়ি গুঁড়ো, দুধ এবং মধুর মাস্ক: শুষ্ক ত্বক এবং বলিরেখা পড়ে গেলে এই মাস্ক বিশেষ কার্যকর হবে। জবা ফুলের পাপড় শুকিয়ে গুঁড়িয়ে নিন। ২ টেবিল চামচ জবাফুলের পাপড়ির গুঁড়োর সঙ্গে মিশিয়ে নিতে হবে ২ টেবিল চামচ দুধ এবং কয়েক ফোঁটা মধু। তিন উপকরণ ভাল করে মিশিয়ে মুখে মেখে ১৫-২০ মিনিট রেখে ধুয়ে নিন।
জু্ঁই: গরম থেকে বর্ষার মরসুমে মেলে জুঁইফুল। এই ফুলের সুবাসের জন্যই তার খ্যাতি। ত্বকের জন্যও কিন্তু তা কম উপকারী নয়। এতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। শরীর ভাল রাখতেও জুঁইফুলের নির্যাসযুক্ত চা খাওয়ার চল রয়েছে। এসেনশিয়াল অয়েল হিসেবেও জেসমিন অয়েলের ব্যবহার রয়েছে। ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে, মুখের জেল্লা ফেরাতে জুঁইফুল কার্যকর।
জুঁই, দুধ এবং বেসনের মাস্ক: টাটকা জুঁইফুল ধুয়ে পাপড়ি আলাদা করে নিন। তার সঙ্গে দুধ এবং বেসন মিশিয়ে মুখে মাখুন। ১৫-২০ মিনিট মেখে ধুয়ে ফেলতে হবে। মুখের কালচে ভাব দূর হবে এতে।
প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা। যে কোনও নতুন মাস্ক ব্যবহারের আগে প্যাচ টেস্ট জরুরি। মুখে মাখার আগে সেটি হাতে বেশি কিছু ক্ষণ লাগিয়ে দেখুন কোনও সমস্যা হচ্ছে কি না। না হলে মুখে মাখুন।