অফিসের সহকর্মী বলেই বসলেন, “মুখটা এত সুন্দর, পোশাকটাও দারুণ কিনেছ, কিন্তু হাতের যত্ন নাও না কেন?” তার পরেই যেন আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে বেশি করে নজর গেল শরীরের দিকে নজর গেল সুকন্যার। হাতকাটা পোশাকে স্পষ্ট হাতের কালচে ছোপ। এমনকি, গরমের উপযোগী করে তৈরি বুক পর্যন্ত কাটা এবং পিঠের দিকেও বেশ কিছুটা খোলা পোশাকের ফাঁকে দৃশ্যমান জেল্লাহীন ত্বক।
এমন সমস্যা শুধু সুকন্যার নয়, রয়েছে অনেকেরই। মুখ এবং চুলের যত্ন নিয়ে লোকজন যতটা ভাবেন, তার বিন্দুমাত্র নজর থাকে না হাত, পা, পেট, পিঠের ত্বকের যত্ন নিয়ে। হাল ফ্যাশনের রকমারি পোশাক পরলে, ত্বকের খুঁতগুলোও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। তবে এই সমস্যার সমাধান হতে পারে সহজ উপায়ে।
বাজারে রকমারি স্ক্রাব পাওয়া যায়। মৃত কোষ ঝরিয়ে ত্বককে সুন্দর করে তোলার জন্য এগুলি ব্যবহার করতে পারেন। তবে যদি সমস্যা এবং ত্বকের ধরন অনুযায়ী প্রাকৃতিক উপায়ে পরিচর্যা করতে চান, ঘরোয়া উপায়ও রয়েছে।
ওট্স, দুধ এবং মধু: ত্বকের যত্নে ওট্সের জনপ্রিয়তা দিনে দিনে বাড়ছে। গরমকালে বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি হলেও, কার্যসূত্রে যাঁদের দিনের মধ্যে ৮-১০ ঘণ্টা বাতানুকূল ঘরে থাকতে হয়, তাঁদের ত্বক কিন্তু শুষ্ক হয়ে পড়ে। বাড়িতেও গরম থেকে রেহাই পেতে রাতভর এসি চালাতে হয়। তারই ফল হল ত্বকে শুষ্ক ভাব। ওট্স দুধে ভিজিয়ে রেখে তাতে এক চা-চামচ মধু মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি মুখেও মাখতে পারেন। একই সঙ্গে স্নানের আগে মিনিট পাঁচেক শরীরের বাকি অংশেও হালকা হাতে মাসাজ করুন। রোদে পোড়া কালচে ভাব দূর হবে এক মাসেই। নিয়মিত ব্যবহার করতে পারেন, আবার সপ্তাহে ২-৩ দিনও মাখতে পারেন।
কফি, অলিভ অয়েল এবং চিনি: যাঁদের ত্বক কালচে, জেল্লা হারিয়েছে তাঁদের জন্য এই স্ক্রাব আদর্শ। রোদের তাপে ত্বকে ট্যান পড়ে যায়। ট্যান তোলার পাশাপাশি স্ক্রাবের ব্যবহারে শরীরে রক্তসঞ্চালন ভাল ভাবে হয়। কফি এবং চিনি অলিভ অয়েলে মিশিয়ে রাখুন ১০ মিনিট। চিনির দানা একটু গলে গেলে মিশ্রণটি সারা গায়ে হালকা হাতে মাসাজ করুন। তার পর স্নান করে নিন। সপ্তাহে ১ বা ২দিন এটি ব্যবহার করুন, তফাত চোখে পড়বে এক মাসেই।
আরও পড়ুন:
বেসন, চালের গুঁড়ো এবং গোলাপজল: মুখের ময়লা পরিষ্কারের জন্য বেসনের ব্যবহার বেশ পুরনো। স্ক্রাব করার জন্য এর সঙ্গেই মিশিয়ে নিতে হবে চালের গুঁড়ো। মিশ্রণটি গোলাপজল দিয়ে গুলে কাদার মতো বানিয়ে ফেলুন। তার পর সারা গায়ে মেখে নিন। চালের গুঁড়োর দানা ভাব শরীর থেকে মৃত কোষ পরিষ্কারে সাহায্য করবে। ত্বকের ধরন তৈলাক্ত হলে এই স্ক্রাবটি বেছে নিতে পারেন।
সামুদ্রিক লবণ: ত্বকের যত্নে সামুদ্রিক লবণের ব্যবহার দীর্ঘ দিনের। শুষ্ক, নিষ্প্রাণ ত্বকে জেল্লা ফেরাতে একটি উপাদানই যথেষ্ট। ম্যাগনেশিয়াম এবং অন্যান্য খনিজ সমৃদ্ধ লবণটি নারকেল বা অলিভ অয়েলের সঙ্গে মিশিয়ে সারা গায়ে মাখতে পারেন। এর সঙ্গে পছন্দের কোনও এসেনশিয়াল অয়েল কয়েক ফোঁটা মিশিয়ে নিন।
গ্রিন টি: অনেকেরই পিঠে ব্রণ হয়। সে ক্ষেত্রে কাজে আসতে পারে গ্রিন টি স্ক্রাব। এতে থাকে অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল উপাদান। আধ কাপ উষ্ণ জলে ২টি গ্রিন টি ব্যাগ ভিজিয়ে রাখুন। ১০ মিনিট পর টি-ব্যাগ সরিয়ে এতে যোগ করুন ব্রাউন সুগার এবং নারকেল তেল বা অলিভ অয়েল। মিশ্রণটি গায়ে মাসাজ করুন। তবে স্ক্রাব ব্যবহারের সময় অতিরিক্ত ঘষাঘষি চলবে না। বিশেষত ব্রণ থাকলে তা লাগাতে হবে খুব সাবধানে, আলতো করে।