ছেঁড়া টেপজামা, ফুটো হয়ে যাওয়া গেঞ্জি, ন্যাকড়াসম নাইটি, অথবা ফ্যাকাশে শর্ট প্যান্ট-টি শার্ট। গ্রীষ্মমণ্ডলীয় দেশে প্রবল গরমের সময়ে এমন পোশাকই রাতের জন্য উপযুক্ত। ঘুমোনোর সময়ে যেন যথেষ্ট হাওয়া-বাতাস খেলতে পারে, সে দিকেই কেবল নজর। কিন্তু হুট করে বাড়িতে লোক চলে এলে সামনে যাওয়ার অবস্থা থাকে না। এমনকি আয়নায় নিজেকে দেখলে মোটেও ভাল লাগে না। ফেলে দেওয়ার মতো জামাগুলির উপর এত ভরসা না করে নিজেকে সাজিয়ে গুছিয়ে রাখলে মন্দ কি? যখন কেউ দেখার নেই, তখন যে নিজের জন্য পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয়ে থাকা যায়, সে কথা মাথায় থাকে না অনেকেরই। কিন্তু সম্প্রতি নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা রাতের পোশাক নিয়ে বেশ খুঁতখুঁতে হয়ে পড়েছেন। নিজের বিছানায়, একা থাকার সময়েও যে নিজের যত্ন নেওয়ার গুরুত্ব রয়েছে, তা বুঝিয়ে দিচ্ছে নতুন প্রজন্ম। কেবল আরামের জন্য নয়, মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য ভাল রাখতে তা উপকারী বলে দাবি উঠছে। ঠিক কী কী কারণে রাতের পোশাক নিয়ে অবহেলা কমছে?
বিছানায় শুতে যাওয়ার পোশাক ভাল মানের হতে হবে
বেশির ভাগ মানুষই রাতের পোশাকে সবচেয়ে বেশি সময় কাটান। তা ৭ ঘণ্টা থেকে ১২ ঘণ্টা হতে পারে। কারণ, ঘুমের আগে ও পরেও সে পোশাক পরে থাকেন অনেকে। ফলে সারা দিনে সবচেয়ে বেশি ক্ষণ সে পোশাক গায়ে থাকে আপনার। তা হলে সেটির সঙ্গে এমন আচরণ কেন? তাই ঘুমোনোর সময়ে খুব বেশি চিন্তা না করেই পুরনো টি শার্ট বা জীর্ণ পোশাক পরে নেন অনেকে। কিন্তু উৎকৃষ্ট মানের বিছানার চাদর পেতে ঘুমোনো বা সুন্দর মোটা পর্দা টাঙিয়ে শুতে যাওয়ার মতোই গুরুত্বপূর্ণ এটি। সুতির মতো প্রাকৃতিক কাপড় শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে, আপনার গায়ে হাওয়া খেলতে পারে। রাতের ঘুমকে আরও আরামদায়ক করে তোলার জন্য রাতের পোশাকের কাপড় ভেবেচিন্তে বেছে নেওয়া উচিত।

কী কারণে রাতের পোশাক নিয়ে অবহেলা কমছে? ছবি: সংগৃহীত।
পুরনো নয়, নতুন এবং আরামদায়ক হোক রাতের পোশাক
পুরনো টি শার্টের পরিবর্তে আরও আরামদায়ক কিছু ব্যবহার করুন, যা নরম, সুন্দর করে ডিজ়াইন করা। পোশাক পরার মধ্যে মানসিক প্রশান্তি খুব জরুরি। এটি আপনার মস্তিষ্ককে সঙ্কেত দেয় যে, দিনের শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছেন, এখন বিশ্রামের প্রয়োজন। সুন্দর, আরামদায়ক পাজামা, টপ অথবা হালকা নাইটড্রেস ব্যবহার করতে পারেন। বদলটি খুবই ছোট, অথচ মেজাজ উন্নত করার জন্য খুব তাৎপর্যপূর্ণ।
কেউ না দেখলেও আপনি দেখছেন নিজেকে
নিজের ঘরটিই এমন এক জায়গা, যেখানে সম্পূর্ণ নিজের মতো থাকতে পারেন আপনি। আর সেই নিরিবিলিতে নিজেকে যে ভাবে খুশি সাজাতে পারেন। এতে স্বাধীনতার স্বাদ মিলতে পারে। লোককে দেখানোর জন্য নয়, নিজের প্রতি বিশ্বাস গড়ে তোলা এবং নিজের প্রতি যত্নবান হওয়ার গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ এটি।
পরিমাণে কম, মানে ভাল
প্রাকৃতিক, দীর্ঘস্থায়ী কাপড় দিয়ে তৈরি এক বা দু’টি উৎকৃষ্ট মানের জিনিস কিনে ফেলুন। ১০টি ছেঁড়া, জীর্ণ পোশাকের বদলে দু’টি ভাল মানের পোশাকই যথেষ্ট। একটু দামি হোক, কিন্তু টেকসই ও দীর্ঘস্থায়ী হওয়া উচিত। মনের পাশাপাশি আপনার ত্বক এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্যও তা উপকারী।