চুল লম্বা, কিন্তু শ্রী নেই? চুলের প্রতিটি ডগাই প্রায় ফাটা? চুল ছোট হোক বা বড় কিংবা মাঝারি— এমন সমস্যা খুবই সাধারণ। বিশেষত রুক্ষ চুলের ধরন যাঁদের, তাঁদেরই এমন হয়। প্রতিটি চুল ডগার দিক থেকে ফাটতে শুরু করে। দেখতে যেমন বিশ্রী লাগে, তেমনই ডগা ফাটার সমস্যা হলে চুলের বৃদ্ধিও থমকে যায়। এ ক্ষেত্রে কী করবেন?
ছাঁট: প্রথম কাজটি হল ফাটা ডগা ছেঁটে ফেলতে হবে। কিন্তু কাজটি সহজ নয়। অসমান চুলের কোথায় কোন ডগা ফেটেছে, বুঝে ছাঁটা রীতমতো কষ্টসাধ্য। এ জন্য সালোঁতেই যেতে হবে। বাড়িতে চেষ্টা করে দেখতে পারেন। অল্প পরিমাণ চুল নিয়ে আঁচড়ে হাতের সাহায্যে লম্বা অবস্থায় পাকিয়ে নিন। ডগা ফাটা চুলগুলি বেরিয়ে থাকবে। কাঁচির সাহায্যে সেগুলি ছেঁটে দিন।
তেল মাসাজ: চুলের রুক্ষ ভাব দূর করার জন্য তেল মাসাজের বিকল্প উপায় নেই। তা ছাড়া, মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন ভাল হয় এতে। চুলের গোড়াও মজবুত হয়। নারকেল তেল খুবই ভাল। তবে চাইলে আর্গন তেল, হোহোবা অয়েল, কাঠবাদামের তেলও বেছে নিতে পারেন। আর্গন তেলে রয়েছে ভিটামিন ডি এবং ই, নানা রকম ফ্যাটি অ্যাসিড। অন্য তেলের তুলনায় হালকা আর্গন অয়েল মাখাও সহজ। চুলে আর্দ্রতা জুগিয়ে রুক্ষ ভাব দূর করতে সাহায্য করে এটি।
তেল কিন্তু সব সময় পরিষ্কার মাথার ত্বকে মাখা দরকার। শ্যাম্পু করে চুল শুকোনোর পর ঈষদুষ্ণ তেল নিয়ে মাথার ত্বকে মালিশ করুন। আধ থেকে এক ঘণ্টা পর চুল ধুয়ে নিন।
কন্ডিশনিং: চুলের আর্দ্রতা উধাও হলেই এই ধরনের সমস্যা হয়। রুক্ষ চুলে কন্ডিশনার ব্যবহার করা খুব জরুরি। সঠিক উপাদান বাছাই করাটাও দরকার। শ্যাম্পু করার পর কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে।
আরও পড়ুন:
চুলের মাস্ক
চুলের রুক্ষ ভাব দূর করে আর্দ্রতা জোগাবে মাস্ক। বাজারচলতি মাস্কের বদলে ঘোরায়া উপকরণেও তা তৈরি করা যায়।
কাঠবাদাম এবং মধু: তিন টেবিল চামচ কাঠবাদামের তেলের সঙ্গে এক চামচ মধু মিশিয়ে চুল এবং মাথার ত্বকে ভাল করে মাসাজ করুন। ঘণ্টাখানেক রেখে ধুয়ে ফেলুন।
ডিমের হলুদ অংশে অর্থাৎ কুসুমে ভরপুর মাত্রায় বায়োটিন রয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে ভিটামিন এ, ডি এবং ই। এই সমস্ত উপাদান চুলের জন্য ভাল। রুক্ষ, শুষ্ক চুল মোলায়েম করতে পারে ডিমের কুসুম। মাথার ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতেও এই উপাদানটির ভূমিকা রয়েছে।
ডিমের কুসুম, নারকেল তেল এবং মধু: দু’টি ডিমের কুসুমের সঙ্গে ১ টেবিল চামচ নারকেল তেল এবং ১চা-চামচ মধু মিশিয়ে নিন। পরিষ্কার চুলে মাস্ক হিসেবে মাখুন। আধ ঘণ্টা পের ধুয়ে ফেলুন।
আর কী করবেন?
· চুল সব সময় মোটা দাঁড়ার চিরুনি দিয়ে আঁচড়ানো দরকার। এতে চুলে টান পড়বে কম। ডগা ফাটার সমস্যা কমবে।
· চুল বেশি খোলা রাখলেও ডগা ফাটার সমস্যা বাড়তে পারে। আবার চুল টেনে বাঁধাও ঠিক নয়। বাইরে বেরোনোর আগে টুপি, ছাতা ব্যবহার করুন।
· চুল যেন ঘষা না খায়, মাথা মোছার সময় খেয়াল রাখা দরকার।
একই সঙ্গে কেশসজ্জার জন্য রাসায়নিক স্প্রে এবং হেয়ার স্ট্রেটনার, কার্লার যন্ত্রের ব্যবহার কমিয়ে ফেলা প্রয়োজন। ঘরোয়া পন্থায় ডগা ফাটার সমস্যা না মিটলে পেশাদার কারও সাহায্য নেওয়া দরকার। ডগা ফাটার সমস্যা কমাতে নানা রকম ‘ট্রিটমেন্ট’ রয়েছে।