বিয়ের দিন অনেক কনেই চান রাজকন্যার মতো সাজতে। সে তিনি সাধারণ পরিবারের হোন বা ‘অ-সাধারণ’— সাধ্যমতো, রুচি মেনে সুন্দর হতে চান প্রত্যেকেই। কারণ, বিয়ের দিনটিকে অধিকাংশই জীবনের বিশেষ দিন হিসাবে দেখেন। একটি মানুষের সঙ্গে নতুন সফরের সূচনা, তাঁর সঙ্গে অনেক পরিবর্তন, সুখ-দুঃখেরও সূচনা বলে কথা! সেই শুরুকে উদ্যাপনই করতে চান বর-কনে। বলিউডের অভিনেত্রী প্রিয়ঙ্কা চোপড়াও নিজের বিয়েতে সেই ধারা মেনেছেন। এক সাক্ষাৎকারে সেই সাজেরই গল্প শুনিয়েছেন অভিনেত্রী।
মায়ের হাত ধরে বিয়ের আসরে প্রবেশ প্রিয়ঙ্কা চোপড়ার। ছবি: সংগৃহীত।
প্রিয়ঙ্কার বিয়ে হয়েছিল ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে। রাজস্থানের জোধপুরের এক প্রাসাদের মতো হোটেলে সেই বিয়ের আসর বসেছিল। আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া থেকে হবু বর নিক জোনাসের পরিবার এসেছিল সেখানেই। তাঁদের উপস্থিতিতে প্রিয়ঙ্কা এবং নিকের চার হাত এক হয়েছিল খ্রিস্টান রীতি মেনেই। পরে হিন্দু মতেও বিয়ে হয় প্রিয়ঙ্কার। কিন্তু তাঁর খ্রিস্টান বিয়ের সাজ নিয়ে আলোচনা হয়েছিল ফ্যাশন দুনিয়া জুড়ে। কারণ, প্রিয়ঙ্কা পরেছিলেন মার্কিন পোশাকশিল্পী র্যাল্ফ লরেনের নিজের হাতে বানানো ওয়েডিং গাউন। যা বেশ বিরলই বলা চলে। র্যাল্ফ লরেন আন্তর্জাতিক ফ্যাশন ব্র্যান্ড। তাঁর ব্র্যান্ডের তৈরি বিয়ের পোশাক ফ্যাশন দুনিয়ায় জনপ্রিয় হলেও তিনি নিজের হাতে বিয়ের পোশাক বানিয়েছেন খুব কমই। সাক্ষাৎকারে প্রিয়ঙ্কা বলেছেন, ‘‘আমি পরে জেনেছিলাম, তিনি আমার আগে মাত্র তিন জনের বিয়ের পোশাক নিজে বানিয়েছিলেন। একটি নিজের মেয়ের জন্য, একটি পুত্রবধূর জন্য এবং একটি নিজের ভাগ্নির জন্য। আর চতুর্থটি বানিয়েছিলেন আমার জন্য।’’ শুধু তা-ই নয়, সেই পোশাক কেমন হবে, তা নিয়ে র্যাল্ফ খুঁতখুঁতও করেছিলেন বিস্তর।
প্রিয়ঙ্কার বিয়ের পোশাকের অন্যতম আকর্ষণ ছিল তাঁর ‘ভেল’। খ্রিস্টধর্মের বিয়ের পোশাকে যে সাদা ওড়না দিয়ে কনের মুখ ঢাকা থাকে, তাকে বলা হয় ‘ভেল’। প্রিয়ঙ্কার ক্ষেত্রে তার দৈর্ঘ্য ছিল ৭৫ ফুট! যা টেক্কা দিয়েছিল ব্রিটেনের রাজবধূ মেগান মর্কেলের ‘ভেল’কেও।
মেগানের ১৬ ফুটের ‘ভেল’। ছবি: সংগৃহীত।
ওই বছরেই বিয়ে হয়েছিল ব্রিটেনের কনিষ্ঠ রাজপুত্র হ্যারির। তাঁর স্ত্রী তথা বাকিংহাম প্রাসাদের রাজবধূ মেগান বিয়ের পোশাকের সঙ্গে সুদীর্ঘ ভেল পরে গোটা বিশ্বের নজর নিজের দিকে টেনে নিয়েছিলেন। নকশাহীন ধবধবে সাদা গাউনের সঙ্গে পরা মেগানের সেই ওড়নায় ছিল ৫৩টি দেশের ফুলের নকশা। সেই ওড়নার দৈর্ঘ্য ছিল ১৬ ফুট। সেই বিয়েতে বাকিংহামে মেগানের বন্ধু হিসাবে আমন্ত্রিত ছিলেন প্রিয়ঙ্কাও। মাস কয়েক পরে দেখা যায়, বিয়ের সাজে ব্রিটেনে রাজবধূকেও টেক্কা দিয়েছেন তিনি! উমেদ ভবনের লালচে বেলেপাথরের সিঁড়িতে লুটিয়ে পড়ে থাকা সেই ওড়নার ছবি সমাজমাধ্যমে প্রকাশ্যে আসতেই ছড়িয়ে পড়েছিল। ৭৫ ফুট ওড়না নিয়ে শুরু হয়েছিল আলোচনা।
ওড়নার দৈর্ঘ্য নিয়ে পোশাকশিল্পীর সঙ্গে দরাদরি করেছিলেন প্রিয়ঙ্কা। ছবি: সংগৃহীত।
প্রিয়ঙ্কা জানিয়েছেন, ওই ওড়নার দৈর্ঘ্য ১০০ ফুট করতে চেয়েছিলেন পোশাকশিল্পী র্যাল্ফ। প্রিয়ঙ্কা পাল্টা বলেছিলেন ওড়নার দৈর্ঘ্য ৫০ ফুট রাখতে। সাক্ষাৎকারে সে কথা মনে করে প্রিয়ঙ্কা বলেছেন, ‘‘আমার ঘাড়ের পেশির উপর আস্থা রাখতে পারছিলাম না আসলে।’’ ওড়নার দৈর্ঘ্য নিয়ে এর পর র্যাল্ফের সঙ্গে তাঁর খানিক দর কষাকষি চলে। শেষে ৭৫ ফুটে থামতে রাজি হয়েছিলেন র্যাল্ফ। বিয়ের দিন সেই ওড়না ধরতে হয়েছিল ছ’জনকে।
ওড়নাটি ধরতে ছ’জন লোক লেগেছিল। ছবি: সংগৃহীত।
ওড়নাটি সেলাই করে দেওয়া হয়েছিল প্রিয়ঙ্কার মাথায় আটকানো একটি ব্যান্ডের সঙ্গে। সেই ওড়না পরে হাঁটার অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে প্রিয়ঙ্কা বলেছেন, ‘‘হাঁটতে হাঁটতে ওড়নাটা আটকে গিয়েছিল কোথাও একটা। টান পড়তে আমার তো হৃৎপিণ্ড বেরিয়ে আসার জোগাড়! শেষ পর্যন্ত অবশ্য আমার ঘাড়ের পেশি তার দায়িত্ব পালন করেছিল।’’
আরও পড়ুন:
-
পায়ের পাতা কি শরীরের আয়না? কী ভাবে পা দেখে বুঝবেন চিকিৎসকের দ্বারস্থ হবেন কি না?
-
বাড়িতে টবে রুদ্রাক্ষের গাছ বসাতে চান! কেমন পরিবেশ উপযুক্ত? কী ভাবেই বা যত্ন নেবেন?
-
প্রেমে পড়লেন, কিন্তু পছন্দ হল না স্বভাব! তবু কি সম্পর্কে থাকবেন? না কি ছেড়ে দেবেন হাত?
-
বেনারসি আসল না কি নকল? বিয়ের শাড়ি কেনার সময়ে মান বুঝবেন কী ভাবে?