ব্যস্ততা, কাজের চাপ, বাড়ির দায়িত্ব, অফিস— সব সামলে আলাদা করে রূপচর্চার সময় আর হয় না। সালোঁয় গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় কাটানোও যেন বিলাসিতা। অথচ দীর্ঘ দিনের অযত্নে ত্বকও ক্রমশ জেল্লা হারাতে থাকে। নির্জীব হয়ে পড়ে। ত্বকের যত্নে হয় দোকান থেকে দাম দিয়ে প্রসাধনী কিনে নেন অনেকে, না হলে ঘরোয়া টোটকাতেই ভরসা রাখেন। ইদানীং ঘরোয়া পদ্ধতিতে ত্বকের যত্নের নানা উপায় ইন্টারনেটে সহজলভ্য। তারকারাও ঘরোয়া পদ্ধতিতে তাঁদের রূপচর্চার পদ্ধতি নিয়ে কথা বলছেন নানা সাক্ষাৎকারে। কেউ মাখছেন বেসন, তো কেউ হলুদ। প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে বা ভেষজ উপাদানে ত্বকের পরিচর্যা করার অভ্যাস খুবই ভাল, তবে কোন উপকরণ কার জন্য উপকারী তা জেনে নেওয়া জরুরি। হেঁশেলের যে সব উপকরণ রূপচর্চায় কাজে লাগে, সে গুলির সবই যে সকলের ত্বকের জন্য স্বাস্থ্যকর হবে তা নয়। তাতে লাভের চেয়ে ক্ষতিই বেশি হবে।
হেঁশেলের কোন কোন উপকরণ বুঝেশুনে ব্যবহার করা উচিত?
লেবু বা টক জাতীয় ফল
স্ক্রাব করার জন্য লেবু ব্যবহার করেন অনেকে। মধুর সঙ্গে লেবু মিশিয়ে বা চিনি-লেবুর ফেস-স্ক্রাব খুবই পরিচিত। লেবু ত্বকের দাগছোপ, মৃতকোষ দূর করে ঠিকই, তবে এর মধ্যে থাকা অ্যাসিডিক উপাদান ত্বকের পিএইচের ভারসাম্য নষ্ট করে দেয়। তাই ঘন ঘন লেবু ব্যবহার করলে ত্বক আরও বেশি খসখসে হয়ে উঠতে পারে। লেবুর স্ক্রাব ব্যবহার করে রোদে গেলে ত্বক পুড়েও যেতে পারে।
হলুদ
হলুদের কারকিউমিন যৌগের অ্যান্টি-ফাঙ্গাল ও অ্যান্টি-ব্যাক্টেরিয়াল গুণ আছে। হলুদ মাখলে ত্বকের সংক্রমণ দূর হতে পারে। তবে হলুদ ব্যবহার করতে হয় পরিমিত পরিমাণে। বেশি ব্যবহার করলে ত্বকের প্রদাহ বাড়বে, অ্যালার্জির সমস্যাও হতে পারে।
আরও পড়ুন:
দই
দই ত্বকের জন্য ভাল। ত্বকের মৃতকোষ দূর করতে দই খুবই কার্যকরী। তবে ত্বক খুব সংবেদনশীল হলে দই না মাখাই ভাল। দইয়ে থাকে ল্যাকটিক অ্যাসিড যা সকলের জন্য কার্যকরী না-ও হতে পারে। বিশেষ করে কনট্যাক্ট ডার্মাটাইটিস, সোরিয়াসিসের মতো চর্মরোগ থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ত্বকে দই না মাখাই ভাল।
কফি ও চিনির স্ক্রাব
কফি ও চিনির মিশ্রণ ফেস-স্ক্রাব হিসেবে ভাল হলেও সকলের ত্বকের জন্য ভাল নয়। অতিরিক্ত ব্যবহারে ত্বকের র্যাশ বা ফুস্কুড়ির সমস্যা হতে পারে। ত্বকের অ্যালার্জিও হতে পারে।
অ্যাপল সাইডার ভিনিগার
সংবেদনশীল ত্বক হলে ভিনিগার ব্যবহার না করাই ভাল। এতে ত্বকে জ্বালাভাব হতে পারে, ত্বক পুড়ে যেতে পারে। অতিরিক্ত ব্যবহারে ত্বকে লালচে ভাব দেখা দিতে পারে।
আরও পড়ুন:
বদলে কী কী ব্যবহার করা যাবে?
লেবুর রসের বদলে টম্যাটোর রস ব্যবহার করা যাবে। টম্যাটোর রস ভিটামিন ও খনিজ উপাদানে সমৃদ্ধ। এতে অম্লের মাত্রাও কম থাকে। এতে ত্বকে জ্বালাপোড়া ভাব হবে না আবার দাগছোপও উঠে যাবে।
দইয়ের বদলে ব্যবহার করা যেতে পারে দুধের সর। বেসন, মুসুর ডাল বাটার সঙ্গে দুধের সর মিশিয়ে মাখলে ত্বক নরম হবে, দাগছোপও উঠে যাবে।
চিনি ও কফির বদলে ব্যবহার করা যেতে পারে ওট্স। ওট্মিলের মধ্যে রয়েছে বিটা-গ্লুকান্স। যা প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজ়ারের মতো কাজ করে। ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতেও সাহায্য করে এই উপাদানটি। ২ চামচ ওট্মিলের মধ্যে রয়েছে বিটা-গ্লুকান্স। যা প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজ়ারের মতো কাজ করে। ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতেও সাহায্য করে এই উপাদানটি।