পুজোর আর এক সপ্তাহও বাকি নেই। যাঁরা এক মাস আগে ডায়েট করে রোগা হবেন বলে ভেবেছিলেন, তাঁরা হয় ওজন মাপার যন্ত্রে উঠে খুশি হয়েছেন নয়তো ‘কিচ্ছু হবে না’ ভেবে হাল ছেড়েছেন। যাঁরা হতাশ, তাঁদের জন্য একটি কথা— হাল ছেড়ো না বন্ধু! কথায় আছে, ‘সোজা আঙুলে ঘি না উঠলে আঙুল বাঁকাতে হবে’। তাই ওজন না কমলেও পুজোয় রোগা দেখানোর অন্য উপায় আছে। আর সে উপায় বলে দিয়েছেন স্বয়ং পোশাকশিল্পীরাই।
১। বড় গলা
কলকাতার পোশাকশিল্পী সব্যসাচী মুখোপাধ্যায়ই শিখিয়েছেন কী ভাবে প্লাস সাইজ় অর্থাৎ পৃথুলাদেরও রোগা দেখাতে হয়। জ়িরো সাইজের মোহমুক্ত হয়ে ফ্যাশনদুনিয়ার একাংশ যখন প্লাস সাইজ়কে আপন করতে শুরু করেছে, সেই শুরুর সময়ে সব্যসাচী তাঁর ব্র্যান্ডের মুখ করেছিলেন প্লাস সাইজ় দক্ষিণী মডেল বর্ষিতা তাতাওয়র্তিকে (ছবিতে)। পরিয়েছেন ছড়ানো এবং গভীর গলার ব্লাউজ়। যেখানে ব্লাউজের সীমা ঠিক সেইখানে থমকাচ্ছে, যেখানে না থমকালেই নয়। আর কী আশ্চর্য বর্ষিতাকে মোটেই মোটা দেখাচ্ছে না। বরং তাঁর বড়সড় চেহারায় ওই ব্লাউজের কাট বেশ ভাল লাগছে। রোগাও লাগছে বেশ খানিকটা। পরে এই একই স্টাইলের ব্লাউজ় পরতে দেখা গিয়েছে বয়সের ভারে ঈষৎ চেহারা ভারী হয়ে যাওয়া রানি মুখোপাধ্যায়কেও।
২। ভি গলা
চোখ বন্ধ করে কোনও একটি কাটের পোশাক যদি বেছে নিতে হয়, তবে পৃথুল চেহারার মানুষজন অবশ্যই ভি গলা বেছে নিন। যেকোনও ‘ডিপনেক’ চেহারায় এক ধরনের লম্বাটে ছাঁদ আনে। ভি গলার পোশাক বা ব্লাউজ় সেই লম্বাটে ভাবকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে। দেখতেও রাগে লোগা।
৩। হল্টার নেক
যাঁদের চেহারা ভারী, তাঁদের বেশি করে হল্টারনেক ব্লাউজ় পরা উচিত বলে আবার মনে করে ‘সুুতা’। মুম্বইয়ে থাকা দুই প্রবাসী বাঙালি বোনের ফ্যাশন স্টোরে তেমন হল্টারনেকের ছড়াছড়ি। তানিয়া বলছেন, ‘‘আমার মনে হয় পৃথুল চেহারার মানুষজন যত ঢাকতে চেষ্টা করেন, ততই তাদের আরও বেশি মোটা দেখায়। বদলে যদি তারা একটা সরু স্ট্রাকচারের পোশাক পরেন তবে তাদের রোগা দেখাবে। ’’ তানিয়ার পরামর্শ হল্টারনেক, রেসারব্যাক নকশার ব্লাউজ় বা পোশাক পরলে চেহারা রোগা দেখায়। এমনকি, ইদানীং উল্টনো হল্টারনেক ব্লাউজ়ও পরছেন অনেকে, সেটিও এই ধরনের চেহারায় পরলে একই সঙ্গে রোগা এবং আকর্ষণীয় দেখাবে।
৪। বন্ধ গলা
চেহারা ভারী হলে বন্ধ গলাও দেখতে ভাল লাগে বলছেন পোশাকশিল্পীরা। এ ব্যাপারে সব্যসাচী তো বটেই রাজস্থানের পোশাক শিল্পী রাঘবেন্দ্র রাঠৌড়, ফাল্গুনি-শেন পিকক, মনীশ মালহোত্রের মতো ব্র্যান্ডও একমত। তবে এক্ষেত্রে বন্ধ গলায় কলার থাকবে না। এই ধরনের বন্ধগলার ব্লাউজ় থেকে শুরু করে চুরিদার বা হাঁটুঝুলের পোশাক— সবই ভাল লাগবে।
৫। মোনো টোন
ঢেউ খেলানো চেহারায় দোহারা ভাব আনতে হলে সবচেয়ে সহজ উপায় হল মোনো টোনয় অর্থাৎ কোনও একরঙা পোশাক। কোনও প্রিন্ট নয়, ভারী নকশা নয়। হালকা ছোট্ট বুটি বা পাড়ে সরু কাজ চলতে পারে বড়জোর। কিন্তু তাতেই ম্যাজিক হবে। সামনের মানুষটির চোখে লম্বাটে গড়ন দেখাবে আপনার। ফলে রোগাও দেখাবে।
৬। স্লিটেড কাফতান
করিনা কপূর তাঁর ভাইয়ের বিয়েতে পরেছিলেন। যাঁরা করিনার খবর রাখেন, তাঁরা জানেন, বাকি নায়িকাদের মতো বেবো তাঁর চেহারা রোগা দেখানোর ব্যাপারে বিশেষ আগ্রহী নন। তাঁর চেহারার ভাইটাল স্ট্যাটিসটিক্স কিছুটা প্লাস সাইজ়ের দিকেই। সেই করিনাকে ওই নকশাদার বন্ধ গলা কাফতানে বেশ রোগাই দেখাচ্ছিল। বিশেষ করে হাঁটুর সামান্য উপর থেকে কাটা অংশ বা স্লিটের ফাঁক দিয়ে পা দৃশ্যমান হওয়ায় লম্বাও দেখাচ্ছিল তাঁকে। তবে এমন পোশাকের সঙ্গে একটি সুন্দর হিল জুতো মাস্ট।
৭। ফিট অ্যান্ড ফ্লেয়ার
জামার উপরের অংশ ফিটেড আর বাকিটা কাপড়ের ঘের দিয়ে তৈরি করা হয়েছে ইলিউশন। গলায় হল্টারনেক টাই আপ প্যাটার্ন। হাতেও রাখা হয়েছে ফ্লেয়ার্ড নকশা। এইধরনের পোশাক বা ব্লাউজ় চোখে ধাঁধাঁ তৈরি করে। চেহারার ভারী গড়নে নজর পড়তে দেয় না।