চেয়ার যোগ – ব্রিদ ট্রেনিং স্টেপ -২। অলঙ্করণ:শৌভিক দেবনাথ।
চেয়ার যোগ – ব্রিদ ট্রেনিং স্টেপ -২
নিঃশ্বাস প্রশ্বাস আমাদের বেঁচে থাকার হাতিয়ার। কিন্তু অনেকেই সঠিক ভাবে শ্বাস প্রশ্বাস নিতে পারেন না। এলোমেলো ভাবে শ্বাস নিলে নানা শারীরিক ও মানসিক সমস্যা দেখা যায়। তাই নির্দিষ্ট ছন্দে শ্বাস নেওয়ার প্রশিক্ষণ নিতে হয়। ব্রিদ ট্রেনিংয়ের সাহায্যে সঠিক ভাবে বাতাস টেনে নেওয়া ও ছাড়া আয়ত্তে আসে। এর ফলে শরীরের রক্তসঞ্চালন স্বাভাবিক হয়, শরীরে জমে থাকা নানান দূষিত পদার্থ সহজে বেরিয়ে যায়, মন শান্ত থাকে। তাই নিয়ম করে ব্রিদ ট্রেনিং অভ্যাস করা দরকার।
কী ভাবে করব
• চেয়ারে পা ঝুলিয়ে শিরদাঁড়া সোজা করে বসুন। লক্ষ্য রাখবেন ঘাড়, পিঠ ও মাথা যেন একই সরলরেখায় থাকে। দুই হাত রাখুন কোলের ওপর। চোখ বন্ধ রেখে শরীর শিথিল করে বসুন।
• এই অবস্থানে থেকে স্বাভাবিক ভাবে শ্বাসপ্রশ্বাস নিন। শ্বাস নিয়ন্ত্রণের কোনও প্রয়োজন নেই। শুধুমাত্র লক্ষ রাখুন কী ভাবে বাতাস টানছেন ও ছাড়ছেন।
• এই সময় খেয়াল রাখুন যেন শুধুমাত্র নাক দিয়ে বাতাস নেওয়া ও ছাড়া হয়। শুধুমাত্র নাসারন্ধ্রের দিকেই লক্ষ্য রাখতে হবে। খেয়াল করলে দেখবেন, যে বাতাস টানছেন তা বেশ শীতল, আর শ্বাস ছাড়ার সময় যে বাতাস বেরোচ্ছে তা তুলনামূলক ভাবে গরম। কিছু ক্ষণ এই ব্যাপারটা পর্যবেক্ষণ করুন।
• এ বার একই ভাবে শ্বাস নেওয়া ও ছাড়া চলতে থাকুক, আপনি মনোযোগ দিন গলার কাছে। সেখান থেকে শ্বাস নেওয়া ও ছাড়া নিবিষ্ট মনে পর্যবেক্ষণ করুন।
• একই ভাবে তৃতীয় পর্যায়ে বাতাস টেনে নেওয়া ও ছেড়ে দেওয়ার সময় পাঁজরের গতি প্রকৃতির ওপর নজর দিন।
• চতুর্থ পর্যায়ে শ্বাস নেওয়া ও ছাড়ার সময় পেট কী ভাবে ওঠা নামা করছে খেয়াল করুন। শ্বাস টানার সময় পেট কিছুটা ফুলে ওঠে এবং শ্বাস ছাড়লে নেমে যায়।
• পঞ্চম এবং শেষ পর্যায়ে নাক থেকে গলা, পাঁজর ও পেট পর্যন্ত কী ভাবে বাতাস টেনে শ্বাস নেওয়া ও ছাড়া হচ্ছে সেই ব্যপারটা অনুধাবন করতে হবে।
• মনে রাখবেন গভীর ভাবে নয়, শ্বাস প্রশ্বাস নেবেন স্বাভাবিক ভাবে। কী ভাবে শ্বাস প্রশ্বাস পড়ছে, সে দিকেই শুধুমাত্র খেয়াল রাখতে হবে। জোর করে শ্বাস নেওয়ার বা ছাড়ার কোনও দরকার নেই। এই আসনের লক্ষ্য হল রিল্যাক্স অবস্থায় শ্বাসের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা।
• আসন শেষ হলে চোখ বন্ধ করে বসে অনুভব করুন শরীর ও মনে প্রশান্তি এসেছে।
আরও পড়ুন: ৯৮তম দিন: আজকের যোগাভ্যাস
আরও পড়ুন: ৯৬তম দিন: আজকের যোগাভ্যাস
কেন করব
নিয়ম করে শ্বাসের এই আসনটি অভ্যাস করলে আমাদের শ্বাস প্রশ্বাসের সঙ্গে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গের সম্পর্ক বুঝতে সুবিধে হয়। দিনের যে কোনও সময় এই আসন অভ্যাস করতে পারেন। শ্বাস প্রশ্বাসের গতিবিধি সম্পর্কে সম্যক ধারণা গড়ে উঠলে তা নিয়ন্ত্রণ করতে সুবিধে হয়। সঠিক ভাবে সম্পূর্ণ বাতাস টেনে নেওয়া অভ্যাস করলে ফুসফুস ও শ্বাসনালীর নানান সমস্যাকে দূরে সরিয়ে রাখা যায়। শরীর ও মন তরতাজা থাকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy