করোনাকালে কিডনির বিশেষ যত্ন দরকার, বলছেন চিকিৎসকেরা। ছবি: সংগৃহীত
করোনা সংক্রমণের পরে মৃত্যুর কারণ শুধুমাত্র ফুসফুসের ক্ষতি নয়, কিডনি বিকল হয়ে যাওয়াও। সম্প্রতি রাজ্যে এমন ঘটনা ঘটেছে ৩ রোগীর ক্ষেত্রে। ময়নাতদন্তে দেখা গিয়েছে, কিডনির প্রচুর কোষের মৃত্যুর কারণে শরীরে বিপুল পরিমাণে দূষিত পদার্থ জমে গিয়েছিল তাঁদের ক্ষেত্রে। আর তাতেই মৃত্যু।
করোনার কারণে ফুসফুসের মতো ক্ষতি হতে পারে কি কিডনির? চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী বলছেন, অবশ্যই পারে। ‘‘রোগ সৃষ্টিকারী ভাইরাসগুলি সব কোষের মাধ্যমে শরীরে ঢুকতে পারে না। দরকার ‘এসিই ২ রিসেপটর’ কোষ। শ্বাসনালী, ফুসফুস, অন্ত্র, হৃদযন্ত্র, কিডনিতে এই ধরনের কোষের পরিমাণ বেশি। ফুসফুস এবং শ্বাসনালীর ‘এসিই ২ রিসেপটর’গুলিতে প্রাথমিক সংক্রমণ হয়। তার পরে জীবাণুটি রক্তের সংস্পর্শে আসে। রক্তের রোগপ্রতিরোধকারী কোষগুলি এদের গিলে ফেলে। তাদের মাধ্যমেই করোনার মতো জীবাণু সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। ক্ষুদ্রান্তে পৌঁছে আন্ত্রিকের সমস্যা সৃষ্টি করে। কিডনিতে পৌঁছে তার কোষও মারতে থাকে।’’
রাজ্যের ৩ রোগীর ময়নাতদন্তের পরে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, করোনার জীবাণু কিডনির কোষকে এমন ভাবে মেরে ফেলেছিল, বর্জ্য পদার্থ ছেঁকে নিয়ে রক্ত শুদ্ধ করার ক্ষমতা হারিয়ে যায় ওই ৩ রোগীর কিডনির। চিকিৎসকদের বক্তব্য, এক একটি জীবাণু আলাদা আলাদা পরিবেশে আলাদা আলাদা ভাবে কাজ করে। ভারতীয় পরিবেশে করোনার জীবাণু ব্যাপক হারে কিডনির ক্ষতি করতে পারে। এমন আশঙ্কার কথা ভাবছেন তাঁরা।
সুবর্ণর কথায়, আমেরিকার চিকিৎসকদের এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে প্রায় ৩৬ শতাংশ করোনা আক্রান্তেরই কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ‘‘তাই প্রথম থেকেই করোনা সংক্রমণ হলে আমরা রক্তপরীক্ষা করিয়ে নিতে বলি। দেখে নিতে বলি, রক্তে দূষিত পদার্থের পরিমাণ বাড়ছে কি না,’’ বলছেন তিনি। এই কারণেই করোনা হাসপাতালগুলিতে প্রথম থেকে ডায়ালিসিসের ব্যবস্থা আছে বলে জানাচ্ছেন সুবর্ণ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy