সরকারি নথিতে মৃত। অথচ তিনি দিব্যি চলে-ফিরে বেড়ান। নিজের অস্তিত্ব প্রমাণ করতেই কেটে গেল উনিশ বছর। আর প্রমাণ করার পর থেকেই মৃত্যুভয়ে দিন কাটছে উত্তর প্রদেশের বাসিন্দা লাল বিহারী মৃতাকের।
সরকারি নথি বলছে একা লাল বিহারী নন, গ্রামের অনেকেই পরলোকগমন করেছেন। অথচ সরকারি নথিতে মৃত ব্যক্তিরা দিব্যি বেঁচে আছেন। লাল বিহারী নিজ উদ্যোগে সরকারি কাগজপত্রেও সকলকে জীবন্ত দেখানোর চেষ্টা শুরু করেছিলেন। তার পর থেকেই ক্রমাগত প্রাণনাশের হুমকি আসছে তাঁর কাছে। লাল বিহারীর ধারণা, যে কোনও দিন আক্রমণ হতে পারে তার উপর। তাই আত্মরক্ষার জন্য একে ৪৭-এর আবেদন জানিয়েছেন উত্তর প্রদেশের মুখ্য সচিবকে চিঠি লিখেছেন।
১৯৭৫ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত সরকারি রাজস্বের নথিতে লাল বিহারী আনুষ্ঠানিক ভাবে মৃত ছিল। ফলে তিনি তাঁর পাওনা সুযোগ-সুবিধা থেকেও বঞ্চিত ছিলেন। ফলে নিজের প্রাপ্য সুবিধা পেতে লড়াই শুরু করেন। উনিশ বছর ধরে সেই লড়াই চালিয়ে যাওয়ার পর অবশেষে সফল হয়েছেন। এই লড়াই করতে গিয়ে বুঝেছেন যে, শুধু তিনি নন, তাঁর মতো বঞ্চিত মানুষের সংখ্যা অনেক। তখনই লাল বিহারী ঠিক করেন তিনি ওই বঞ্চিত মানুষগুলির জন্য লড়বেন। তবে বাধা আসবে তিনি জানতেন। তবে প্রাণনাশের হুমকি পাবেন, সেটা ভাবেননি।
তিনি যে মৃত, সেটা লাল বিহারী প্রথম জানতে পারেন ব্যাঙ্কে লোনের আবেদন করার সময়ে। লাল বিহারীর ভাগের সম্পত্তি আত্মসাৎ করতে তাঁর আপন কাকা ঘুষ দিয়ে সরকারি নথিতে তাঁকে মৃত বলে দেখান। লাল বিহারী দূরে দাঁড়িয়ে থেকে নিজের শ্রাদ্ধও দেখেছেন।