ফুটপাতের জিমে বসে বাসের জন্য অপেক্ষা। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী
করোনা আবহে শারীরচর্চা করতে খোলা জায়গায় জিম করার দিকে জোর দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। তাই এই পরিস্থিতিতে নিউ টাউনের ফুটপাতে বসানো জিমের কার্যকারিতা বেড়ে গিয়েছে অনেকটাই। কারণ এখানে সংক্রমণের ঝুঁকি এড়িয়ে সহজেই শারীরচর্চা করতে পারতেন স্থানীয় বাসিন্দা এবং পথচারীরা। কিন্তু অভিযোগ, বাস্তবে সে সবের কিছুই প্রায় হচ্ছে না। শারীরচর্চার বদলে ফুটপাতের ওপেন জিমের মেশিনে বসে কেউ ফোনে কথা বলতে ব্যস্ত, আবার কেউ সেখানে বসেই করছেন প্রকাশ্যে ধূমপান। ফলে জিম করতে গিয়ে মেশিন ফাঁকাই পাচ্ছেন না উৎসাহী স্থানীয়েরা। রক্ষণাবেক্ষণ ও নজরদারি না থাকলে রাস্তার পাশের এই খোলা জিমগুলি আদৌ কত দিন ব্যবহারযোগ্য থাকবে, সেই প্রশ্নও তুলছেন তাঁরা।
নিউ টাউনের নারকেলবাগান মোড়, আকাঙ্ক্ষা মোড়, ইকো পার্ক, নিউ টাউন থানার আশেপাশে রাস্তার পাশেই রয়েছে এই জিমগুলি। সাধারণ মানুষের শারীরচর্চার জন্য সেখানে বেশ কিছু যন্ত্রও রাখা রয়েছে। বাসস্ট্যান্ডের কাছে কোথাও রয়েছে বেঞ্চ প্রেস মেশিন, কোথাও লেগ প্রেস মেশিন, আবার কোথাও সিট আপ করার ব্যবস্থা। তবে শারীরচর্চার বদলে মেশিনে বসে বাসের জন্য অপেক্ষা বা ফোনে কথা বলার দৃশ্যই বর্তমানে বেশি দেখা যাচ্ছে।
সম্প্রতি নিউ টাউনে গিয়ে দেখা গেল, একটি বেসরকারি হাসপাতালের বাসস্ট্যান্ডের পাশে দু’টি বেঞ্চ প্রেসের মেশিনের বসার আসনে পা তুলে বসে আছেন দুই যুবক। তাঁরা জানালেন, সোনারপুর থেকে তাঁরা ওই হাসপাতালে এসেছেন। কিন্তু বাসস্ট্যান্ডে বসার জায়গা না পেয়ে জিমের মেশিনেই বসে একটু জিরিয়ে নিচ্ছেন। তাঁদের মধ্যেই এক জন বললেন, ‘‘জিমে গিয়ে কোনও দিন ব্যায়াম করিনি। এই সব যন্ত্র কী ভাবে ব্যবহার করতে হয়, তা-ই জানি না! তাই মেশিনে বসেই বাসের অপেক্ষা করছি।” এলাকাবাসীদের অভিযোগ, অকারণে আসন দখল করে বসে থাকা এমন মানুষের সংখ্যা বর্তমানে বেড়ে গিয়েছে। ফলে প্রয়োজনের সময় মেশিনগুলি ফাঁকা পাওয়া যায় না। এতে অনেকেই খোলা জিমে গিয়ে শারীরচর্চায় ক্রমশ উৎসাহ হারাচ্ছেন।
নিউ টাউনের বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, ফুটপাতে ওপেন জিম তৈরি হওয়ার পরে বহু প্রাতর্ভ্রমণকারীই ভোরে হাঁটতে বেরিয়ে সেগুলি ব্যবহার করেন। কিন্তু তার পরে বেলা বাড়তে থাকলে ওই সব জিমের অধিকাংশই হয়ে ওঠে গল্পগুজব করার আখড়া। স্থানীয়দের মতে, প্রয়োজনের তুলনায় এমনিতেই সেখানে এমন জিমের সংখ্যা কম। তার উপরে রক্ষণাবেক্ষণ এবং নজরদারি ঠিক মতো না হলে ওই মেশিনগুলি কত দিন ব্যবহারযোগ্য থাকবে, তা নিয়েও আশঙ্কা থাকছে। এলাকায় কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরা নজরদারি চালালে সাধারণ মানুষ ঠিকঠাক ভাবে ওই জিমের ব্যবহার করতে পারবেন বলেও মনে করছেন স্থানীয়দের একাংশ।
হিডকোর চেয়ারম্যান দেবাশিস সেন অবশ্য বলছেন, ‘‘করোনা-কালে মানুষকে খোলা জায়গায় ব্যায়াম বা জিম করার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। এই পরিস্থিতিতে এই খোলা জিমগুলি খুবই কার্যকর। জিমগুলির রক্ষণাবেক্ষণে কোনও অসুবিধা নেই। ভবিষ্যতে এমন জিমের সংখ্যাও বাড়ানো হবে। নিউ টাউনে কয়েকটি পার্কে খোলা জিম তৈরির ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy