Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
এ বয়সে এক্সারসাইজ়ও খুব হিসেব কষে করতে হবে। খুব বেশিও করা যাবে না, আবার কমও নয়। তবেই সুস্থ থাকবেন।
Exercise

Fitness: চল্লিশ পেরিয়ে চনমনে থাকুন

ডায়াবিটিস, প্রেশার, সুগার, জয়েন্ট পেন এই বয়সেই বেশি কাবু করে দেয়।

 শরীর ঢিলে হলেই আমরা অলস হই।

শরীর ঢিলে হলেই আমরা অলস হই।

দীপান্বিতা মুখোপাধ্যায় ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২২ ০৬:৫০
Share: Save:

চল্লিশের কোঠায় বয়স ঢুকে পড়লে মনে হয়, জীবনটা তো কাটিয়েই দিলাম। তার পর বয়স যখন ধীরে ধীরে পঞ্চাশের দিকে এগোতে থাকে এই ধারণা আরও পোক্ত হয়। তার সঙ্গে জুড়ে যায় অলসতা, অবসাদ। বিশেষজ্ঞদের মতে, চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ বছরের সময়টা মানুষের জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়েই নিজের যত্ন নেওয়া সবচেয়ে বেশি জরুরি। ডায়াবিটিস, প্রেশার, সুগার, জয়েন্ট পেন এই বয়সেই বেশি কাবু করে দেয়। মহিলারা মেনোপজ়ের দিকে এগোতে থাকে। চল্লিশে চনমনে থাকতে গেলে ফিটনেসের দিকে খেয়াল রাখতেই হবে।

ফিটনেস বিশেষজ্ঞ সৌমেন দাসের বক্তব্য, ‘‘চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ এমন একটা বয়স যখন এক্সারসাইজ়ও খুব হিসেব কষে করতে হবে। খুব বেশিও করা যাবে না, আবার কমও নয়। অনেকে কয়েকটা ভুল করেন। সুগার-প্রেশার ধরা পড়লে অতিরিক্ত শারীরচর্চা শুরু করে দেন। এতে হার্টের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই পরিমিত এক্সারসাইজ়ে মন দেওয়া উচিত।’’

পুরুষদের শারীরচর্চা
চল্লিশের পরে ছেলেদের মাসল লুজ় হতে শুরু করে। এতে গায়ে হাত পায়ে ব্যথা হয়। এই বয়সে স্ট্রেসের মাত্রাও বেড়ে যায়। অনেক রকম রোগব্যাধির সূত্রপাত হয়। ‘‘কিছু কার্ডিয়ো ওয়ার্কআউট তার সঙ্গে স্ট্রেংদেনিং এক্সারসাইজ়— এই দুটো মেলাতে হবে,’’ মত সৌমেন দাসের। কার্ডিয়োর মধ্যে হাঁটা, দৌড়নো, জগিং, সাঁতার, অ্যারোবিক্স, পিলাতেস... যা খুশি হতে পারে। রোজ ১৫-২০ মিনিট কার্ডিয়ো জরুরি।

এর পর স্ট্রেংদেনিং ওয়ার্কআউট। চেস্টের অংশের জন্য পেপ ডেক, ওয়াল পুশ আপ। কাঁধের জন্য সিঙ্গল হ্যান্ড শোল্ডার প্রেস, ডাবল হ্যান্ড শোল্ডার প্রেস। হাতের জন্য বাইসেপ-ট্রাইসেপ কার্ল। পায়ের অংশের জন্য স্কোয়াট করা যেতে পারে। এই বয়সে বহু পুরুষই ভুঁড়ি নিয়ে নাজেহাল হয়। ক্রাঞ্চ কিন্তু ভুঁড়ি কমাতে অব্যর্থ ব্যায়াম। তার সঙ্গে মিনিট তিনেক প্লাঙ্ক। প্রতিটি এক্সারসাইজ় বাড়িতেই করা সম্ভব, হালকা ওজনের ডাম্বেল ব্যবহার করে। সব ব্যায়ামই ১৬ কাউন্ট করে ৩-৪ সেটে করতে হবে।

শরীর লুজ় হয়ে গেলে আত্মবিশ্বাস কমে যায়। সেই কারণেই চেহারা টোনড করা জরুরি হয়ে পড়ে। তাতে নিজেকে দেখতেও ভাল লাগবে, মানসিক সুস্থতাও আসবে।

মেয়েদের শারীরচর্চা
মহিলাদের চল্লিশ থেকেই জয়েন্ট পেন, আর্থ্রাইটিস জাতীয় সমস্যা বাড়তে থাকে। তা ছাড়া কেরিয়ারের কারণে এখন অনেক মহিলাই মধ্য তিরিশে মা হন। ফলে চল্লিশে পৌঁছেই চেহারায় ভারিক্কি ভাব চলে আসে। সৌমেন দাসের মতে, ‘‘মা হওয়ার পরে মেয়েদের শরীরে অনেক বদল আসে। হরমোনাল বদল হয়। চেহারার ভারী ভাব কাটানোর জন্য স্ট্রেংদেনিং এবং টোনড ওয়ার্কআউট প্রয়োজন। তার সঙ্গে অবশ্যই কার্ডিয়ো করতে হবে।’’

পেটের অংশের মেদ কমাতে প্লাঙ্ক এবং ক্রাঞ্চ খুব জরুরি। যাঁরা একদম প্রথম এক্সারসাইজ় করছেন তাঁরা ৩০ সেকেন্ড প্লাঙ্ক দিয়ে শুরু করুন। ধীরে ধীরে তিন মিনিটে নিয়ে যান। ক্রাঞ্চ করতে হবে ১৬ কাউন্টে তিন-চার সেটে। চেস্টের অংশের জন্য ওয়াল পুশ আপ দিতে পারেন। পায়ের জন্য স্কোয়াট। এখানেও ১৬ কাউন্টে তিন-চার সেট।

চল্লিশের শেষের দিকে বহু মহিলাই মেনোপজ় নিয়ে নাজেহাল হন। এক ধরনের অবসাদ গ্রাস করে তাঁদের। ডি-স্ট্রেস ওয়ার্কআউট আমাদের শরীর, মন দুটোই সজীব করে তোলে। মহিলাদের জন্যও কার্ডিয়ো খুব জরুরি। হাঁটা, জগিংয়ের বাইরে অ্যারোবিক্সের ক্লাসে ভর্তি হয়ে যেতে পারেন। এতে শরীর-মন
ঝরঝরে হবে। স্ট্রেস কমানোর জন্য পিলাতেসও অব্যর্থ।

একটা কথা পুরুষ ও মহিলা সকলকেই মনে রাখতে হবে। শরীর ঢিলে হলেই আমরা অলস হই। তাই চেহারা টানটান থাকলে কাজেও স্পৃহা আসবে, আত্মবিশ্বাসও বজায় থাকবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Exercise Health age
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE