‘সইয়ারা’র কৃষ কপূর এখন চোখের মণি। বলিউডপ্রেমীদের একাংশ সেই রকস্টারের প্রেমে মজে। কিন্তু কৃষকে চিনে ফেললেও অহান পাণ্ডের জীবন সম্পর্কে সব তথ্য পাওয়া যে মুশকিল! পর্দার বাইরে, নিজের ঘরোয়া জীবনে কৃষ ওরফে অহানের যাপন কেমন, তা নিয়ে আগ্রহের শেষ নেই। তবে পুরোপুরি ধোঁয়াশা রাখতে পারেননি নতুন সুপারস্টার। কারণ তাঁর দিদি অলন্যা পাণ্ডে পেশায় ভ্লগার, নেটপ্রভাবী। নিজের এবং পরিবারের যাপনের সঙ্গে বাইরের দুনিয়াকে আলাপ করানো তাঁর পেশারই অংশ। ফলে অলন্যার সৌজন্যে অহানের জীবন সম্পর্কে টুকিটাকি জ্ঞান অর্জন করেই ফেলেছেন অনুরাগীরা।
এরই মাঝে অলন্যার একটি পুরনো একটি ভিডিয়ো খুঁজে বার করেন অনুরাগীরা। যেখানে নিজেদের মুম্বইয়ের বাড়ি ঘুরিয়ে দেখিয়েছেন অলন্যা। আর অহানের অনুরাগীদের বিশেষ উৎসাহের কারণ, তাঁদের প্রিয় কৃষ কপূর বাস্তব জীবনে কেমন বাড়িতে থাকেন, এতে তার ঝলক মিলছে।
অলন্যার কথায় জানা গেল, সে বাড়িতে প্রায় ১৭ থেকে ২০ বছর কেটে গিয়েছে পাণ্ডে পরিবারের। তার আগে কাকা চাঙ্কি পাণ্ডে, অর্থাৎ অভিনেত্রী অনন্যা পাণ্ডেদের সঙ্গে থাকতেন যৌথ পরিবার হিসেবে। অলন্যার কথায়, ‘‘একটা বয়সের পর সকলেরই নিজের আলাদা পরিসরের দরকার পড়ে। তাই এখানে থাকা শুরু করি আমরা। আমি, বাবা, মা আর অহান। আর আইভর (অলন্যার স্বামী), নতুন সদস্য।’’
অহানদের বাড়িতে ঢুকতে হলে আঙুলের ছাপ বাধ্যতামূলক। বিলাসবহুল বাড়ির উঠোন এমন ভাবেই বানানো হয়েছে, যাতে ঘরোয়া সমস্ত অনুষ্ঠান সেখানে আয়োজন করা যেতে পারে। অলন্যার বিয়ের সমস্ত অনুষ্ঠান, অহানের ২১তম জন্মদিন, এ সমস্ত সেখানেই আয়োজিত হয়েছিল। লম্বা উঠোন, মাঝে মস্ত এক সুসজ্জিত খাওয়ার টেবিল। যদিও টেবিল সব সময়ে থাকে না। প্রয়োজনে অন্য কিছুও এনে রাখা যেতে পারে। উঠোনের প্রাচীর দিয়ে নেমে আসছে শৌখিন লতানে গাছের সারি। রোদের আলোয় আরও সুন্দর দেখাচ্ছে উঠোন। সেখানেই দেওয়ালের গায়ে লাগানো সুন্দর বসার জায়গা তৈরি হয়েছে।
সেই উঠোনের সঙ্গে লাগোয়া দোতলা বাড়ি রয়েছে বাড়ির কর্মচারীদের জন্য। তাঁদের ভিন্ন ভিন্ন ঘর এবং পুরুষ-নারীর আলাদা আলাদা শৌচালয়ও বানানো রয়েছে।
বাড়ির ভিতরে ঢুকতেই দেখা যাবে এক পাশে মাস্টার বেডরুম। অন্য পাশে লিভিং রুম। সেই লিভিং রুমেরও দু’টি ভাগ রয়েছে। দু’দিকে আলাদা ভাবে বসে আড্ডা দেওয়ার বন্দোবস্ত করা। চারটি মানুষ থাকলেও সে বাড়িতে সর্ব ক্ষণ অতিথির ভিড় লেগেই থাকে। ঘরের ভিতরে চারপাশে গাছপালা ভর্তি। দুই লিভিং রুমের মাঝে রয়েছে খাবার খাওয়ার জায়গা। বড় টেবিলে সাজিয়ে রাখা হয় দামি সমস্ত বাসনপত্র। তার পাশেই বানানো হয়েছে সুরাপানের জায়গা। তবে অলন্যার বক্তব্য, ‘‘আমাদের বাড়িতে বার কেন রয়েছে, কে জানে! কারণ পরিবারের কেউই অ্যালকোহল সেবন করেন না।’’ বাড়ির বিভিন্ন কোনায় নানা রকমের শো-পিস রয়েছে। যেমন মূর্তি, দেওয়ালে সাঁটানো দামি থালা, ঘরের মাঝে মোমবাতি ইত্যাদি। ঘরের একাধিক দেওয়াল কাচ দিয়ে বানানো। সিলিংয়ে সানরুফ। যাতে ঘরে কৃত্রিম আলোর চেয়ে প্রাকৃতিক আলোর প্রবেশ বেশি হয়।
রান্নাঘরও দু’ভাগে বিভক্ত। এক দিকে রান্নার প্রস্তুতি। অন্য দিকে রান্না। কাচের বাসন রাখার আলমারির পাশে মস্ত ফ্রিজ। রান্নাঘরেই রয়েছে ওয়াশিং মেশিন। লন্ড্রির জন্য আলাদা ঘর না থাকায় রান্নাঘরের মধ্যেই কাপড় কাচার বন্দোবস্ত করা রয়েছে। তা ছাড়া ডিশওয়াশার, চিমনির মতো নানাবিধ আধুনিক যন্ত্রপাতি তো রয়েছেই।
দোতলায় তিনটি ঘরের মধ্যে একটি বরাদ্দ অতিথিদের জন্য, দ্বিতীয়টি বিনোদনের জন্য, তৃতীয়টিই অহানের নিজের ঘর। বিনোদনের ঘরে বসেই আড্ডা দেন অহান এবং তাঁর বন্ধুরা। সেখানে ভিডিয়ো গেম খেলা, ছবি দেখা, গান শোনার সুবিধা রয়েছে।
বাড়ির তিনতলায় রয়েছে সবুজে ভর্তি ছাদ। বিয়ের পর অলন্যা এবং আইভরের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে তিনতলার এই ছাদ। মুম্বইয়ের গরমে যাতে ছাদ ব্যবহার করা যায়, সে কারণে কাচ দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। যাতে ছাদের আমেজও থাকে, আবার ঘরের আরামও পাওয়া যায়। তিনতলার সবচেয়ে বড় অংশ জুড়ে রয়েছে লিভিং রুম। যেখানে বসে খাওয়াদাওয়া, আড্ডা চলতেই পারে। লিভিং রুমেই সাদা পর্দা দেওয়া খাট রাখা। অলন্যার সাজঘরে রয়েছে মস্ত এক আয়না, আলোর কারসাজি। ছাদের পাশেই রয়েছে তাঁদের শোওয়ার ঘর।