আমলকি গাছ বললেই বিশাল এক গাছের কথা মনে হয়। যে গাছের নাম ঠাঁই পেয়েছে, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সহজপাঠেও। আমলকির গুণের কদর আগেই ছিল। তবে এখন স্বাস্থ্যসচেতন মানুষজনের অনেকেই দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় আমলকি জুড়েছেন। ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বজার রাখতে, চুলের যত্নেও ফলটির ব্যবহার। বাজারে গেলে সহজেই ফলটি কিনতে পাওয়া যায়। কিন্তু যদি বাড়িতেই তা ফলাতে পারেন, আমলকি মিলবে হাতের কাছেই।
বাগানে বড় জায়গায় বেড়ে ওঠার সুযোগ পেলে এই গাছ বড় হয় ঠিকই, তবে চাইলে তা টবেও ফলানো যায়। হালকা বৃষ্টি, মাঝারি তাপমাত্রা এ গাছের বেড়ে ওঠার জন্য আদর্শ।
টব: গাছ ব়ড় করার জন্য টবের আকার সঠিক হওয়া প্রয়োজন। আমলকি গাছের জন্য ১৮-২৪ ইঞ্চি ব্যাসের টব বেছে নিতে পারেন। মাটি বা সেরামিকের টবই এ জন্য আদর্শ। মাটির পাত্রে গাছ রাখলে তাপমাত্রার ভারসাম্য রক্ষিত হয়।
মাটি: গাছের আধার হল মাটি। তা থেকে পুষ্টি পায় গাছ। এই গাছের বেড়ে ওঠার জন্য পিএইচ মাত্রা থাকা দরকার ৭ থেকে সাড়ে ৭। বাগানের মাটির সঙ্গে সমপরিমাণ জৈব সার যোগ করতে হবে। মাটিতে যাতে জল না বসে সে জন্য মিশিয়ে নিতে হবে বালি।
চারা: বীজ থেকেও চারা তৈরি করা যায়। তবে তা একটু ঝক্কির। বদলে নার্সারি থেকে সতেজ চারা কিনে এনে মাটিতে বসিয়ে দেওয়া ভাল। গাছ বড় হয়ে ফল ধরতে মোটামুটি ৩-৪ বছর লাগে।
আরও পড়ুন:
গাছ বসানোর সময়: জুন থেকে সেপ্টেম্বর গাছ বসানোর জন্য আদর্শ। তবে খেয়াল রাখতে হবে জল দেওয়ার ক্ষেত্রে। গাছের গোড়ায় জল জমলে ক্ষতি হতে পারে। রোগ সংক্রমণের ঝুঁকিও হতে পারে। তাই মাটিতে যেন জল না বসে।
সূর্যালোক: এই গাছ সূর্যালোকেই বেড়ে ওঠে। তাই ছাদ হোক বা বারান্দা, এমন স্থানে সেটিকে রাখা দরকার, যাতে অন্তত ছ’ঘণ্টা রোদ পড়ে। তবে দুপুরের চড়া রোদের সময় কোনও আচ্ছাদনের ব্যবস্থা করতে পারেন।
সার: বছরে দু’বার সার প্রয়োগ করতে হবে। বর্ষার শেষে এবং বসন্তের শুরুতে জৈব সার দিতে হবে। তবে মাত্রা ঠিক রাখা জরুরি। অধিক সারে গাছ নষ্ট হতে পারে।
কাটছাঁট: গাছের আকার-আকৃতি ঠিক রাখার জন্য কাটছাঁট করা জরুরি। টবের গাছকে যদি বাড়তে দেওয়া হয়, প্রচণ্ড লম্বা হয়ে যাবে। তখন আর টবের ভারসাম্য থাকবে না। তাই গাছ দৈর্ঘ্য বেশি না বাড়লেও, প্রস্থে যাতে বেড়ে ওঠে দেখতে হবে। পুরনো শাখা কেটে দিলে, নতুন শাখা গজাবে, যা ফল আসার জন্য জরুরি। কোনও ডালপালায় পোকা হলে বা ছত্রাক সংক্রমণ হলে গাছে ওষুধ প্রয়োগের পাশাপাশি প্রয়োজনে সেটি ছেঁটে ফেলতে হবে।