ব্যস্ত জীবনের নিত্যসঙ্গী মাইক্রোওয়েভ অভেন। তার জন্যই সকালে রান্না করা ভাত-ডাল-তরকারি রাতে আবার গ্যাস জ্বালিয়ে, সময় নিয়ে গরম করতে হয় না। ফ্রিজ থেকে রান্না সমেত পাত্র অভেনে মিনিট দেড়েক ঘুরিয়ে নেওয়ার অপেক্ষা। তা হলেই গরম গরম খাবার তৈরি। তবে এমন করিৎকর্মা জিনিস নিয়েও নানা সন্দেহ এবং প্রশ্ন ওঠে।
কেউ বলেন, মাইক্রোওয়েভ ক্যানসারের কারণ হতে পারে। কেউ বলেন, তা খাবারের সমস্ত পুষ্টিগুণ নষ্ট করে দেয়। কিন্তু বিজ্ঞান বলছে, এর কোনওটিই ঘরোয়া ব্যবহারের ক্ষেত্রে কার্যকর নয়। পোল্যান্ডের ওয়ার্মিয়া অ্যান্ড মাজ়ুরি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অফ কমোডিটি সায়েন্সের একটি গবেষণা বলছে, মাইক্রোওয়েভ যে তাপমাত্রায় খাবারের ওই সমস্ত ক্ষতি করতে পারে, ঘরোয়া ব্যবহারে সচরাচর ততখানি তাপমাত্রা কাজে লাগে না। অর্থাৎ মাইক্রোওয়েভ অভেন নিরাপদ। তবে সবটাই নির্ভর করছে মাইক্রোওয়েভ কী ভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে, তাতে কী ধরনের পাত্র ব্যবহার করা হচ্ছে, তার উপরে।
কী কী বিষয়ে সাবধান থাকা উচিত?
১। মাইক্রোওয়েভ লিক করলে সমস্যা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে এক ধরনের অত্যন্ত গরম তরল পদার্থ অভেনের ভিতরে চুঁইয়ে পড়তে পারে। তবে তেমনটা যাতে না হয়, তার সব রকম নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকে এফডিএ অনুমোদিত মাইক্রোওয়েভ অভেনে। তবু বিষয়টি জেনে রাখা ভাল।
২। অভেনের দরজার কব্জা নষ্ট হলে, দরজা তুবড়ে গেলে অথবা দরজা আটকানোর জায়গাটিতে কোনও সমস্যা থাকলে অবিলম্বে ঠিক করার ব্যবস্থা করুন। ঠিক না হওয়া পর্যন্ত ব্যবহার না করাই নিরাপদ। কারণ, সে ক্ষেত্রে যান্ত্রিক গোলযোগ এবং মাইক্রোওয়েভ লিকেজের সমস্যা হতে পারে।
৩। ধাতব কোনও জিনিস, এমনকি, ফয়েল পেপারও অভেনের ভিতরে ব্যবহার করা উচিত নয়। কারণ তা থেকে ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক রিফ্লেকশনস হতে পারে। যা মাইক্রোওয়েভের ভিতরে আগুনের ফুলকি তৈরি করতে পারে। অভেন নষ্টও হতে পারে।
আরও পড়ুন:
৪। সমস্ত প্লাস্টিকের পাত্র মাইক্রোওয়েভের জন্য নিরাপদ নয়। তাই ভাল মানের ‘মাইক্রোওয়েভ সেফ’ পাত্র ব্যবহার করুন। এ ব্যাপারে সবচেয়ে নিরাপদ তাপ রোধক কাচের পাত্র।
৫। দু’মিনিটের জন্য গরম করতে দিলে এক মিনিট পরে অভেনের দরজা খুলে খাবারটি হাতা বা চামচ দিয়ে সামান্য নেড়েচেড়ে দিন।
৬। খাবার গরম হওয়ার পরেই বের না করে আধ মিনিট বা এক মিনিটের জন্য রেখে দিন। তাতে ভিতরে থাকা তাপমাত্রা সমান ভাবে উত্তাপ ছড়িয়ে দেবে খাবারে।